পল্লী সমাজ প্রশ্ন উত্তর | অষ্টম শ্রেণী বাংলা সহায়িকা | Palli-samaj questions and answers class 8 ||
১.১ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা দুটি উপন্যাসের নাম লেখো ।
উঃ । ‘ গৃহদাহ ' এবং ‘ দেবদাস ' ।
১.২ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা দুটি ছোটো গল্পের নাম লেখো ।
উঃ । ' মহেশ ' এবং ' লালু ' ।
২. নীচের প্রশ্নগুলির দু - একটি বাক্যে উত্তর লেখো :
২.১ গোপাল সরকারের কাছে বসে রমেশ কী করছিল ?
উঃ । গোপাল সরকারের কাছে বসে রমেশ জমিদারির হিসাবপত্র দেখছিল ।
২.২ গ্রামের একমাত্র ভরসা কী ছিল ?
উঃ । গ্রামের একশো বিঘার মাঠটাই সমস্ত চাষির একমাত্র ভরসা ছিল ।
২.৩ ‘ বোধ করি এই কথাই হইতে ছিল ।'— কোন্ কথার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে ?
উঃ । বেণী লাঠিয়াল দিয়ে বাঁধ আটকে রেখেছিল । চাষিরা সকলে গিয়ে হত্যা দিয়ে পড়েছিল । মনে হয় এই কথাই হচ্ছিল বেণীমাধব আর হালদার মহাশয়ের মধ্যে ।
২.৪ রমা আকবরকে কোথায় পাহারা দেবার জন্য পাঠিয়েছিল ।
উঃ । রমা আকবরকে বাঁধ পাহারা দিতে পাঠিয়েছিল ।
২.৫ ' পারবিনে কেন ' — উদ্দিষ্ট ব্যক্তিটি কোন্ কাজ করতে পারবে না ?
উঃ পাঁচটি গ্রামের সর্দার আকবর বেশীবাবুর কথায় ছোটোবাবু রমেশের নামে থানায় নালিশ করতে পারবে না ।
৩. নীচের প্রশ্নগুলির কয়েকটি বাক্যে উত্তর লেখো
৩.১ কুড়িজন কৃষক রমেশের কাছে এনে কেঁদে পড়ল কেন ?
উঃ । দুদিন ধরে অবিভ্রাপ্ত বৃষ্টি হয়েছে । একশো বিশ্বের মাঠ ডুবে গেছে । জল বার করে না দিলে সমস্ত ধান নষ্ট হয়ে যাবে । যড়ো জমিদার বেশীবাবু বাঁধ কেটে জল বের করে দিতে নারাজ । তাই উপায়ান্তর না দেখে কুড়িজন কৃষক রমেশের কাছে এসে কেঁদে পড়েছিল ।
৩.২ রমেশ বেণীর কাছে ভাল বার করে দেবার হুকুম দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলো কেন ?
উঃ । একশো বিখার মাঠের ধান বৃষ্টিতে জলে ডুবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল । দক্ষিণ দিকের বাঁধ কেটে সেই জল বের করে মাঠের ধান বাঁচানো যেত । জল বার করে না দিলে জমির সমস্ত ফসল নষ্ট হয়ে যাবে । কিন্তু বেশীবাবু জল বের করতে নারাজ তাতে তার বিপুল ক্ষতি হবে । বেশী ছিল বড়ো তরফের জমিদার , রমেশের বয়োজ্যেষ্ঠ ও সম্পর্কে দাদা হন । তাই রমেশ ছোটো ভাই হিসেবে চাষিদের বাঁচাতে বেণীকে বাঁধ কেটে দেবার অনুরোধ করেছিল ।
৩.৩ বেণী জল বার করতে চায়নি কেন ?
উঃ বেশী গ্রামের বড়ো ভরফের জমিদার , অত্যন্ত স্বার্থপর , নিজের স্বার্থের ক্ষতি করতে তিনি চাননি । বাঁধ কেটে দিলে চাষিরা উপকৃত হলেও সব মাছ বের হয়ে যাবে তাতে প্রায় দু - তিনশো টাকার ক্ষতি হবে । তাই যেণীবাবু বাঁধ কেটে জল বার করতে চাননি ।
৩.৪ ঘৃণায় , লজ্জায় , ক্রোবে , ক্ষোভে রমেশের চোখ মুখ উত্তপ্ত হয়ে উঠল রমেশের এমন অবস্থা হয়েছিল কেন ?
উঃ । অসহায় গ্রামবাসীদের রক্ষা করার জন্য রমেশ বেশী ঘোষালের কাছে বাঁধ কেটে দেবার অনুরোধ জানায় । বেশীর কাছে বাঁধ কেটে দেবার ব্যপারে কোনো সাহায্য সে পায়নি । বেণী নানাভাবে রমেশকে আঘাত করেছিল , বলেছিল জলে সমস্ত ফসল নষ্ট হলে চাষিরা জমিদারদের হাতের মুঠোয় চলে আসবে এই সময় মাথাটা একটু ঠান্ডা রাখতে হয় । না হলে জমিদারি বাড়বে কী করে ? কর্তারা তো এমনি করেই সম্পত্তি বাড়িয়ে গুছিয়ে রেখে গেছেন । বাকিটুকু নেড়ে চেড়ে আবার ছেলেদের জন্য রেখে দিতে হবে । প্রজারা কীভাবে বাঁচবে এর উত্তরে বেণী বলে ছোটো চাষিরা ধারকর্জ করে খাবে । বেণী ঘোষালের এই সব কথাবার্তা শুনে ঘৃণায় লজ্জায় ক্ষোভে ও রাগে রমেশের মুখ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ।
৩.৫ ' রমেশ বিস্ময়ে হতবুদ্ধি হইয়া গেল । রমেশের বিস্ময়ের কারণ কী ছিল ?
উঃ । রমেশ গ্রামে দীর্ঘদিন পর এসেছিল । এখানে তার আপন বলতে কেউ ছিল না । কিন্তু রমা ছিল তার মনের একান্ত কাছের , সে ছিল তার বাল্যসখী । তার উপর মনে মনে রমেশ নির্ভর করত । তাই সে বাঁধ কেটে জল বের করে দেবার জন্য রমার অনুমতি নিতে এসেছিল । রমা উত্তরে তাকে জানায় মাছ বাঁধ থেকে বেরিয়ে গেলে যে টাকার ক্ষতি হবে সেই লোকসান সে করতে পারবে না । বাঁধ কাটায় রমা অরাজি হবে একথা রমেশ স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি । তার মনে একটা ধারণা জন্মেছিল তার একান্ত অনুরোধ রমা বোধ হয় ফেলতে পারবে না । তাই রমার মুখে এই কথা শুনে রমেশ বিস্ময়ে হতবাক্ হয়ে গিয়েছিল ।
৩.৬ রমা রমেশের অনুরোধে রাজি হয়নি কেন ?
উঃ । চাষিদের সাহায্যের জন্য রমেশ রমাকে অনুরোধ করলেও দুটি কারণে রমা সে অনুরোধ রাখতে পারেনি কারণ মনে মনে রমা জানতো বাঁধ কেটে না দিলে একশো বিঘের মাঠের সমস্ত ফসল নষ্ট হয়ে যাবে । রমেশের বক্তব্য ঠিক , কিন্তু সেও মনে মনে জানত প্রথমত তাঁর বড়দা বেশী ঘোষাল তাতে রাজি নন । দ্বিতীয়ত তার পিতা নাবালক সন্তান যতীনকেই জমিদারি দিয়ে গেছেন । নিজের ভাই যতীনের ক্ষতি করার সাহস সে দেখাতে পারেনি । কারণ তাঁর বাবা তাকে সম্পত্তি লিখে দিলেও সে নিজেকে ভাইয়ের অভিভাবক মনে করত । তাই রমেশের অনুরোধে রমা রাজি হয়নি ।
৩.৭ ' মানুষ খাঁটি কিনা চেনা যায় শুধু টাকার সম্পর্কে ।'— কে , কার সম্পর্কে একথা বলেছিল ? সে কেন একথা বলেছিল ?
উঃ । ' পল্লীসমাজ ' গল্পে রমেশ তার বাল্যসখী রমা সম্পর্কে একথা বলেছিল । . বৃষ্টির জলে ডুবে চাষিদের একশো বিঘে ধান নষ্ট হতে চলেছিল । রমেশ জমিদারির অপর শরিক রমার কাছে সে এই অনুরোধ নিয়ে গিয়েছিল । বাঁধ কেটে জল বার করে দিলে মাছ বেরিয়ে গিয়ে অনেক টাকার ক্ষতি হবে জানিয়ে রমা রমেশের বাঁধ কেটে দেবার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে ।
রমার উপর রমেশের ভীষণ ভরসা ছিল । তার কেমন যেন বিশ্বাস জন্মেছিল যে তার একান্ত অনুরোধ রমা কিছুতেই প্রত্যাখ্যান করতে পারবে না । কিন্তু রমা জানায় বিষয় তার ভাই যতীনের , সে শুধু যতীনের অভিভাবক মাত্র । এই শুনে রমেশ মিনতি করে রমাকে জানায় যে এই কটা টাকা তার কাছে তেমন বড়ো ক্ষতি নয় , কিন্তু তার জন্য এত লোকের অন্নকষ্ট দেবার মতো নিষ্ঠুর কাজ সে যেন না করে । রমা এর উত্তরে মৃদুভাবে বলে নিজের ক্ষতি করতে না পেরে যদি নিষ্ঠুর হই তাহলে তাই হোক । আর রমেশবাবুর যখন চাষিদের জন্য এতই দয়া তবে তিনি নিজেও ক্ষতিপূরণ করে দিন । এই কথাটিকে বিদ্রূপ কল্পনা করে রমেশ ওই উক্তিটি করেছিল ।
৩.৮ রমা বিহ্বল হতবুদ্ধির ন্যায় ফ্যালফ্যাল করিয়া চাহিয়া রহিল — রমার এমন অবস্থা হয়েছিল কেন ?
উঃ । রমা বাঁধ কেটে দেবার ব্যাপারে রমেশের পাশে থাকবে না এটা সে স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি । অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও সে কোনোভাবেই রাজি হয় নি । তখন দুজনের মধ্যে বেশি কিছু উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় । রমা স্পষ্ট জানিয়ে দেয় তার পক্ষে ক্ষতি স্বীকার করা সম্ভব নয় । চাষিদের প্রতি দরদি হলে রমেশ যেন ক্ষতিপূরণ নিজে দিয়ে দেয় । এই কঠিন কথা রমেশ আশা করেনি , কারণ তার কাছে রমার স্থান অনেক ওপরে ছিল । তাই নিজেকে সংযত করতে না পেরে রমেশ বলে তুমি অভ্যস্ত হীন এবং নীচ , আমি ব্যাকুল হয়েছি বলে তুমি আমার কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করলে । সংসারে যত পাপ আছে মানুষের দয়ার উপর জুলুম করাটা সবচেয়ে বড়ো পাপ । আমার দুর্বলতা জানো বলে টাকা আদায়ের চেষ্টা করলে । এই মন্তব্য শুনে রমা অপমানিত বোধ করে এবং এর কোনো উত্তর সে দিতে পারেনি । এই অঙ্গুসজল চোখে বিহবল হয়ে রমা রমেশের দিকে চেয়ে থাকে ।
৩.৯ রমা আকবরকে ডেকে এনেছিল কেন ?
উঃ । রমার কাছ থেকে সহয়তা না পেয়ে রমেশ জানায় যে সে গরিব গ্রামবাসীর ক্ষতি হতে দেবে না । সে একই বাঁধ কেটে জল বের করে দেবে । এতে রমা বুঝেছিল একটা অনর্থ হতে পারে । বাঁধকেটে একশো বিখে মাঠের জল বার করতে রমেশ যাতে না পারে তাই বাঁধ পাহারা দেবার জন্য রমা পীরপুরের প্রজা লাঠিয়াল আকবরকে ডেকে এনেছিল ।
৩.১০ ‘ মোরা নালিশ করতি পারবো না ।'— কে একথা বলেছে ? সে নালিশ করতে পারবে না কেন ?
উঃ । এ কথা বলেছে পীরপুরের প্রজা পাঁচ গ্রামের সর্দার লাঠিয়াল আকবর । আকবর ধর্মপ্রাণ মুসলমান , গ্রামের মানুষ তাকে সর্দার বলে মান্য করে । তার চোখে ছোটোবাবুর কোনো অপরাধ নেই , ছোটোবাবু অপূর্ব লাঠি চালিয়েছে আত্মরক্ষার জন্য কাউকে কোনো আঘাত করেনি । যে আঘাত তারা পেয়েছে তা এলোমেলো লাঠি চালানোর জন্য । গ্রামবাসীদের স্বার্থেই ছোটোবাবু রমেশ একাজ করেছে । তাই রমা বা বেণী ঘোষালের কথামতো সে মিথ্যা নালিশ করতে পারবে না । এতে তার আত্মসম্মানে আঘাত লাগবে । তাই সে নালিশ করতে চায় নি ।
৪. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
৪.১ নইলে আর ব্যাটাদের ছোটোলোক বলেচে কেন ? ―বক্তা কে ? এই উক্তির মধ্যে দিয়ে বক্তার চরিত্রের কী পরিচয় পাও
উঃ । উদ্ভিটির বক্তা শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ' পল্লীসমাজ ’ গল্পের অন্যতম চরিত্র বেণী ঘোষাল ।বেণীমাধব একটি সামন্ততান্ত্রিক জমিদার চরিত্র । জমিদারি চালানোর তত্ত্বটি তিনি পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে ভালোই শিখেছেন । চরিত্রটি অত্যন্ত নীচ ও স্বার্থপর । অপরের ক্ষতি করে তিনি নিজের আখের গুছাতে চান । চাষিরা জমিদারের সম্পদ , কিন্তু বেণীর মতো মানুষেরা তা বুঝতে চান না । নিজের স্বার্থের কানাকড়িও তারা অপরকে দেবেন না । বরং তিনি চান এই দুর্দিনে প্রজারা বিপদে পড়ে তার কাছে জমি বন্ধক দিয়ে ধার করতে ছুটে আসুক । তিনিও তার ফলে সুদ খাটিয়ে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবেন ।
৪.২ বেণী , রমা , রমেশ — চরিত্র তিনটির মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা করো । সেই সঙ্গে তিনটি চরিত্রের মধ্যে কোন্ চরিত্রটি তোমার সবথেকে ভালো লেগেছে এবং কেন তা জানাও ।
উঃ । গ্রামের জমিদার বেণীবাবু , তিনি বড়ো তরফ । তিনি একজন অত্যাচারী ও স্বার্থপর শ্রেণির মানুষ । তিনি সুবিধাবাদী , প্রজাদের দুর্দিনে তিনি সাহায্য করার বদলে তাদের আরও বিপদে ফেলতে ইচ্ছুক । তাই তিনি চান প্রজারা বিপদে পড়ে তাঁর কাছে জমি বন্ধক দিয়ে ধার কর্জ করুক ও দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়ুক । তাছাড়া বেণীবাবু যেহেতু সামন্ততান্ত্রিক মানসিকতায় বিশ্বাসী তাই প্রজাদের তিনি মানুষ মনে করেন না । তাদের সম্বন্ধে চাষা , ছোটোলোক ইত্যাদি বাছাবাছা বিশেষণ প্রয়োগ করেন ।
এমনকি প্রয়োজনে তাদের জুতো মারা ও পরোয়ান দিয়ে বের করে দেওয়ার মতো নির্দেশ ও দিতে চান । আবার রমেশবাবুকে প্রজাদরদী বলে রসিকতা করে বলেন ‘ এমনি করে ভায়া আমার জমিদারি রাখবেন । রমা গ্রামের মেয়ে সম্পর্কে বেণীবাবুর বোন হন । তারও বাবার কাছ থেকে পাওয়া অর্ধেক জমিদারীর অংশ রয়েছে , যদিও সে মনে করে তার ভাই যতীনই এর মালিক সে তার অভিভাবক মাত্র । রমা দৃঢ়চেতা মেয়ে কিন্তু শান্ত , মনে দয়ামায়াও আছে । তবে বেনীবাবু তাঁর সম্বন্ধে বলেছেন যে রমা সহজ মেয়ে নয় আর তাকে ভোলানোও সহজ নয় । রমা রমেশের মতে সায় দিতে পারেনি তার কারণ সে অংশের মালিক হলেও জমিদারী সত্ত্বার প্রয়োগ সে ঘটাতে চায় না । কিন্তু রমেশ কে সে শ্রদ্ধা করে , বাল্যবন্ধু বলে হয়তো একটু বেশিমাত্রায় সে তার প্রতি অনুভবী কিন্তু একজন নারী হিসেবে পারিবারিক সীমারেখার গন্ডি লঙ্ঘন করার মতো দুঃসাহস তিনি দেখাননি । রমেশ গ্রামের আর এক তরফের জমিদার ।
ভদ্র , শান্ত ও প্রজাদরদী মানুষ । পরের দুঃখে তার প্রাণ কাঁদে । তিনি বোঝেন প্রজাবিহীন জমিদারী হয় না । তাই সুখে দুঃখে প্রজাদের পাশে তিনি দাঁড়াতে চান । মানুষের ওপর জুলুম করাকে তিনি পাপ বলে মনে করেন । প্রজাদের জন্য রাস্তা বাঁধানো থেকে শুরু করে গ্রামে তিনি অনেক কিছু করেছেন । প্রজারাও তাঁর অনুগামী । ছোটোবাবুর প্রশংসায় গ্রামের সবাই পঞ্চমুখ । রমেশ মনে মনে রমাকে শ্রদ্ধা করেন এবং তার যেন বিশ্বাস জন্মেছিল যে রমা কখনও তার কোনো কথা প্রত্যাখ্যান করতে পারবে না । এই চরিত্রগুলির মধ্যে রমেশ চরিত্রটি আমার সব থেকে ভালো লেগেছে । তিনি ন্যায়নিষ্ঠ ও প্রজাদরদী । এই ধরনের মানুষ থাকলে সমাজে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর কেউ একজন থাকবে । তাঁর এই নীরব , তেজস্বী ও প্রজাদরদী শান্তরূপটি আমার ভালো লেগেছে ।
৪.৩ উপন্যাসের নামে পাঠ্যাংশটি নামকরণ ' পল্লীসমাজ ' - ই করা হয়েছে । নামকরণটি সুপ্রযুক্ত হয়েছে কিনা আলোচনা করো ।
উঃ । শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘ পল্লীসমাজ ' উপন্যাসের নির্বাচিত পাঠ্য অংশটির নামকরণ করা হয়েছে পল্লীসমাজ । নামকরণটি অবশ্যই সুপ্রযুক্ত হয়েছে । গোটা গল্প জুড়ে পল্লীবাংলার নানা সমস্যা কূটনীতি , রাজনীতি এই সবকিছু বিশ্লেষিত হয়েছে । রমা , রমেশ , বেণী , গোপাল খুড়ো এই চরিত্রগুলি গ্রামীণ সমাজের অঙ্গ । তৎকালীন গ্রাম বাংলায় জমিদারতান্ত্রিক সমাজে প্রজাপীড়ন কীরূপ ভয়াবহ ছিল ও পাশাপাশি তাদের দুঃখ - কষ্ট - কৃষিকাজ এবং সেই সব সহজ সরল ও সত্যবাদী পল্লী বাংলার প্রজাদের জীবনকথা এই কাহিনিতে সজীব হয়ে উঠেছে । কাহিনির প্রতিটি চরিত্র একে অপরকে চিনতে সাহায্য করেছে । গ্রাম্য সমাজ ব্যবস্থার তৎকালীন পরিস্থিতি বুঝতে পাঠ্যাংশটি অনেকাংশে সহায়ক হয়েছে । তাই সেই পটভূমির ওপর ভিত্তি করে ‘ পল্লীসমাজ ' নামকরণটি সুপ্রযুক্ত হয়েছে বলা যায় ।
No comments:
Post a Comment