সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস প্রথম অধ্যায় ইতিহাসের ধারণা| Class 7 history 1St chapter|
১. সাল-তারিখ কোন্ বইতে থাকবেই?
উঃ- ইতিহাস বইতে
২. কোন রাজা ‘ গঙ্গাইকোণ্ডচোল’ উপাধি নেন?
উঃ-চোলরাজা প্রথম রাজেন্দ্ৰ চোল ।
৩. ‘সlকলোত্তরপথনাথ’ উপাধি কে নিয়েছিলেন?
উঃ-হর্ষবর্ধন
কিংবা আকবর কোন সাম্রাজ্যের সম্রাট ছিলেন?
উঃ-মোগল সাম্রাজ্যের
৫. দন্তিদুর্গ কোন অঞ্চলে রাজত্ব করতেন?
উঃ-দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক অঞ্চলে
৬. তামার পাতে লেখা লেখকে কী বলে?
উঃ-তাম্ৰলেখ
৭. পাথরের ওপর লেখা লেখকে কী বলে ?
উঃ-শিলালেখ
৮. কারা প্রাচীন কোনো তথ্য খুঁজে একত্রিত করেন?
উঃ-ঐতিহাসিকরা
৯. ‘ইতিহাসের জনক কাকে বলা হয়?
উঃ-হেরোডোটাসকে
১০. 'ইন্ডিয়া নামটি প্রথম কে ব্যবহার করেছিলেন?
উঃ-গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস
১১. হেরোডোটাস কোথা থেকে ভারত সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন?
উঃ-পারসিক লেখাপত্র থেকে
১২. ভারতের কোন অঞ্চল পারসিক সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল ?
উত্তর সিন্ধুনদের ব-দ্বীপ অঞ্চল
১৩. সিন্ধুনদের ব-দ্বীপ এলাকাকে কী বলা হত ?
উঃ-হিদুষ
১৪. ‘ হিন্দুস্থান’ শব্দটি কোন্ শিলালিপিতে ব্যবহার হয়েছে?
উঃ-সাসানীয় শাসকের শিলালিপিতে
১৫. প্রাক-মধ্যযুগ কী নামে পরিচিত ছিল?
উঃ-আদি-মধ্যযুগ
১৬. ভারতে কাদের হাত ধরে আলু খাওয়ার চল শুরু হয়?
উঃ-পোর্তুগিজদের
১৭. ইতিহাসে কাদের কথা খুব বেশি থাকে না?
উঃ-গরিব সাধারণ মানুষের কথা
১৮. ইতিহাসের গোয়েন্দা কাদের বলা হয় ?
উঃ-ঐতিহাসিকদের
১৯. ইতিহাস গ্রন্থটি কার লেখা?
উঃ-হেরোডোটাস
২০. ভারতের প্রাচীন নাম কী?
উঃ-জম্বুদ্বীপ
২১. দশম শতকের কোন্ গ্রন্থে ‘হিন্দুস্থান কথার উল্লেখ পাওয়া যায় ?
উঃ- ‘হুদুদ-অ-আলম’-এ
২২. মোগল যুগে “পরদেশিদের কী বলা হত ?
উঃ-আজনবি
২৩. বখতিয়ার খলজি কে ছিলেন ?
উঃ-তুর্কি সেনাপতি
২৪. বখতিয়ার খলজির পুরো নাম কী?
উঃ-ইখতিয়ারউদ্দিন মহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজি
২৫. ‘হিন্দুস্থান’ কথাটি প্রথম কোন যুগে চালু হয়?
উঃ-সুলতানি যুগে
২৬. পূর্বে ‘হিদুষ’ বলতে কোন অঞ্চলকে বোঝানো হত?
উঃ-সিন্ধু নদীর ব-দ্বীপ অঞ্চলকে
২৭. সাসানীয় শাসক কোথায় রাজত্ব করতেন?
উঃ-পারস্যে
২৮. হুদুদ অল আলম’ গ্রন্থটি কবে লিখিত হয় ?
উঃ-খ্রিস্টীয় দশম শতকে
২৯. “হুদুদ অল আলম’ গ্রন্থটি কী ধরনের গ্রন্থ?
উঃ-ভূগোল গ্রন্থ
৩০. তাজমহল স্থাপত্যটি আসলে কী?
উঃ-স্মৃতিসৌধ
৩১. তাজমহল কে নির্মাণ করেন?
উঃ-মোগল সম্রাট শাহজাহান
৩২. প্রাচীন লেখ বা লিপিগুলিকে কী বলা হয়?
উঃ-প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান
৩৩. এলাহাবাদ প্রশস্তি’ কে উৎকীর্ণ করেন?
উঃ-সমুদ্রগুপ্ত
৩৪. এলাহাবাদ প্রশস্তি’ কে রচনা করেন?
উঃ-হরিষেণ
: প্রতিটা প্রশ্নের মান -1
1. ইতিহাসে সময় মাপতে হলে চাই নানা (সময়/দৈর্ঘ্য/ঘটনা) মাপার হিসাব।
উঃ। সময়।
2. পুরোনো দিনের জিনিস (অতীতের ইতিহাসের সময়ের) কথা জানতে সাহায্য করে।
উঃ। অতীতের।
3. এই বইতে প্রায় (পাঁচশো/সাতশো/হাজার) বছরের কথা তোমরা জানবে।
উঃ। হাজার
4. গ্রিক ঐতিহাসিক (প্লেটো/থুকিডিডিস/হেরোডোটাস) ইন্ডিয়া নামটি প্রথম ব্যবহার করেছিলেন।
উঃ। হেরোডোটাস।
5. ইরানি ভাষায় (‘ক’/‘ম’/‘স’)-এর উচ্চারণ নেই।
উঃ। ‘স’।
6. (২২৬/৬২২/২৬২) খ্রিস্টাব্দে ঘোষিত ইরানের সাসানীয় শাসকের একটি শিলালেখে হিন্দুস্থান শব্দটি পাওয়া যায়।
উঃ। ২৬২।
প্রশ্নের মান -1
১। ইতিহাসে সময় মাপতে গেলে কী কী প্রয়োজন হয় ?
উঃ। ইতিহাসে সময় মাপতে গেলে তারিখ, মাস, সাল, শতাব্দী, সহস্রাব্দ এইসব নানা সময় মাপার হিসাব প্রয়োজন।
২। ইতিহাস জানা কাকে বলে?
উঃ। বছরের পর বছর ধরে ঘটা নানান ঘটনার এবং অনেক লোকের অনেক কাজ কারবারের কারণ এবং ফলাফল বোঝার চেষ্টা করাই ইতিহাস।
৩। সে সময় বিজ্ঞানের ছোঁয়ায় কী কী বদলে গিয়েছিল?
উঃ। সে সময় কুয়ো থেকে জল তোলা, তাঁত বোনা বা যুদ্ধের অস্ত্র নির্মাণ প্রভৃতি অনেক কিছুই বিজ্ঞানের ছোঁয়ায় বদলে গিয়েছিল।
৪। ইন্ডিয়া' নামটি প্রথম কে ব্যবহার করেন ?
উঃ। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ-পঞ্চম শতকে গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস ইন্ডিয়া' নামটি প্রথম ব্যবহার করেন।
৫। ইতিহাসের সময়কে কীভাবে ভাগ করা হয়েছে?
উঃ। প্রাচীন, মধ্য ও আধুনিক—এই তিন যুগে ইতিহাসের সময়কে ভাগ করা হয়েছে।
৬। কীভাবে এদেশে আলু খাওয়ার চল শুরু হয়?
উঃ। পোর্তুগিজদের হাত ধরে এদেশে রান্নায় আলু খাওয়ার চল শুরু হয়।
৭। সে যুগে কোটি ধর্মপ্রচারের মাধ্যম হয়ে উঠেছিল ?
উঃ। সাধারণ লোকের মুখের ভাষাই সেযুগে হয়ে উঠেছিল ধর্ম প্রচারের মাধ্যম।
প্রতিটা প্রশ্নের মান -2/3
১। ইতিহাসের উপাদান বলতে কী বোঝানো হয় ?
উঃ। পুরোনো দিনের বহু জিনিস যা আজও রয়ে গেছে সেগুলি আমাদের অতীতের কথা জানতে সাহায্য করে। প্রাচীন। ঘর-বাড়ি, মন্দির-মসজিদ, মূর্তি, টাকাপয়সা, ছবি ও বইপত্র থেকে আমরা এক-একটা সময়কালের মানুষের বিষয়ে জানতে পারি। তাই এইগুলিই হল ইতিহাসের উপাদান।
২। ইতিহাস পড়ার দরকার হয় কেন?
উঃ। এমন অনেক ঘটনা এবং কাজ আগে ঘটেছে কিন্তু তার ছাপ আজও আমাদের চারপাশে রয়ে গেছে, সেই ঘটনা এবং কাজগুলি সম্বন্ধে আমাদের ধারণা থাকা দরকার। সেই ধারণা তৈরি করার জন্যই ইতিহাস পড়া দরকার।
৩। ইতিহাসে কেন সাধারণ মানুষ বা শিল্পীদের নাম কোথাও পাওয়া যায় না ?
উঃ। সে সময় শিল্প বা সাহিত্য সবেতেই সাধারণ গরিব মানুষের কথা খুব বেশি থাকত না। তাতে বেশিরভাগই ছিল শাসকের গুণগানে ভরা। তাই সাধারণ কারিগর এবং শিল্পী যারা মন্দির বা স্থাপত্য বানিয়েছিলেন তাদের বেশিরভাগের নামই আমরা ইতিহাসে পাই না।
৪। ইতিহাস বইতে সামান্য হলেও সাল-তারিখ থাকে কেন?
উঃ। যেসব ঘটনার কথা ইতিহাস বইতে থাকে, সেগুলো আজ থেকে অনেক বছর আগে ঘটেছিল এবং সেগুলো একই দিনে বা একই বছরে ঘটেনি। তাই প্রকৃত সময়কালকে জানতে হলে ঠিক মতো করে ঐতিহাসিক ঘটনাগুলিকে সাজিয়ে নিতে হয় এবং এর জন্যে প্রয়োজন ঘটনাগুলোর সময়কাল। তাই সাল-তারিখগুলি যতই জটিল হোক, পাছে আমরা সময়ের হিসেবে গোলমাল করে ফেলি তাই ওগুলি মনে রাখতে হবে। তাই ইতিহাস বইতে অল্প হলেও সাল-তারিখ থাকবেই।
৫। ঐতিহাসিক জটিল নামগুলি নিয়ে কেন দুশ্চিন্তা থেকে যায়?
উঃ। ঐতিহাসিক অনেক নাম বা উপাধি খুবই গোলমেলে, মনে রাখা খুবই কঠিন। যেমন—'গঙ্গাইকোল্ড চোল' বা ‘সকলোত্তরপথনাথ’। কিন্তু এই উপাধিগুলি অনেককাল আগের মানুষদের। তারাও হয়তো এতো বড়ো নাম-উপাধি নিয়ে গোলমালে পড়তেন। কিন্তু ওই সময় এমনই বড়ো শক্ত উপাধি ও নামের চল ছিল। তাই এগুলো তো আর এখন বদলে নেবার উপায় নেই বা ছোটো করে নেওয়াও সম্ভব নয়।
৬। ইতিহাসের উপাদানগুলি নানা ভাগে বিভক্ত কেন?
উঃ। ইতিহাসের সব উপাদান একরকম নয়। একটা পুরানো মূর্তি, পুরানো মুদ্রা বা পুরানো বই এক জিনিস নয়। তাই ইতিহাসের উপাদানগুলিকেও নানা ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন—লেখ, মুদ্রা, স্থাপত্য-ভাস্কর্য ও লিখিত উপাদান। পাথর বা ধাতুর পাতে লেখা থেকে পুরোনো দিনের অনেক কথা জানা যায়, সেগুলোকে বলে লেখ। তামার পাতে লেখাগুলিকে বলা হয় তাম্রলেখ, পাথরের উপর লেখাগুলিকে বলে শিলালেখ এবং কাগজের লেখাগুলিকে বলা হয় লিখিত উপাদান।
৭। ইতিহাসে আদি-মধ্যযুগ বলতে কী বোঝায় ?
উঃ। হঠাৎ করে বা রাতারাতি ইতিহাসের যুগ বদলে যায় না। যেমন দুপুরবেলা বলতে কিন্তু নির্দিষ্ট একটা সময়কে বোঝায় না। কারণ সময়টা কিন্তু না সকাল না বিকেল। তেমনই ভারতের ইতিহাসে একটা বড়ো সময় ছিল, যখন প্রাচীন যুগ ধীরে ধীরে শেষ হয়ে আসছে আর মধ্যযুগও পুরোপুরি শুরু হয়নি। ঐতিহাসিকরা সেই সময়টাকে বলেন আদি-মধ্যযুগ।
৮। বিদেশি ও দেশ এর বর্তমান অর্থ কী ?
উঃ। বর্তমানে আমরা বিদেশি বলতে ভিন্ন দেশের বাসিন্দাকে বুঝি। আমাদের দেশ ভারত, তাই ভারত ছাড়া অন্য যে-কোনো দেশের লোককে আমরা বিদেশি বলে মনে করি।
১। সুলতানি বা মুঘল যুগে 'বিদেশি' বলতে কী বোঝানো হত?
উঃ। সাধারণ অর্থে ‘বিদেশি' বলতে আমরা ভারতের বাইরের বা অন্য দেশের লোকেদের বুঝি। কিন্তু সুলতানি বা মুঘল যুগে 'বিদেশি' বলতে গ্রাম বা শহরের বাইরে থেকে আসা যে-কোনো লোককেই বোঝাতো। তাই শহর থেকে অচেনা কেউ গ্রামে গেলে তাকেও গ্রামবাসীরা ‘পরদেশি' বা 'আজনবি' ভাবতেন। তাই ইতিহাস পড়ার সময় আমাদের একটা কথা খেয়াল রাখতে হবে যে মুঘল যুগের কোনো লেখায় যদি ‘পরদেশি' কথাটা ব্যবহৃত হয় তবে সবসময় তা ভারতের বাইরে থেকে আসা কোনো লোককে বোঝাতো না, সে অন্য শহর বা অন্য গ্রামের লোকেদেরও বোঝানো হত। তাই ইতিহাস রচনার সময় ঐতিহাসিকদের মাথায় রাখতে হয় যে সময় আর জায়গা আলাদা হয়ে গেলে অনেক ক্ষেত্রে কথার মানে বদলে যায় । ইতিহাস পড়বার সময়েও আমাদের এই কথাটা খেয়াল রাখতে হবে।
২। ইন্ডিয়া' নামটি কীভাবে এসেছে?
উঃ। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ-পঞ্চম শতকে গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস 'ইন্ডিয়া' নামটি প্রথম তাঁর লেখায় ব্যবহার করেছিলেন। তিনি পারসিক ভাষায় লেখা পত্র থেকে ভারত সম্পর্কে জেনেছিলেন। যদিও তিনি ভারতে আসেননি। উত্তর-পশ্চিম ভারতের সিন্ধু নদীর ব-দ্বীপ এলাকা কিছুদিনের জন্যে পারসিক সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। তখন পারসিকরা এই অঞ্চলের নামকরণ করে হিদুষ'। ইরানি ভাষায় 'স-এর উচ্চারণ নেই, তাই 'স'-এর বদলে গিয়ে হয়েছিল 'হ'। ফলে সিন্ধু বিধৌত অঞ্চলগুলি ‘হিদুষ' নামে পরিচিত হলো। আবার গ্রিক বর্ণমালায় 'হ'-এর উচ্চারণ নেই। তার বিকল্প হল 'ই'। অতএব আগে যা ছিল সিন্ধু-হিদুষ, তা গ্রিক ঐতিহাসিকের বিবরণে অনেকটাই বদলে গিয়ে ইন্ডিয়া' হলো। তবে খেয়াল রাখতে হবে সেইসময় ইন্ডিয়া শব্দটি সিন্ধু ব-দ্বীপ এলাকাকেই সাধারণ অর্থে বোঝানো হতো। পরবর্তীকালে গ্রিক ঐতিহাসিকদের বিবরণী পড়লে বোঝা যায় তখন তারা ইন্ডিয়া বলতে উপমহাদেশকেই বোঝাতো।
No comments:
Post a Comment