সপ্তম শ্রেণী ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর,পঞ্চম অধ্যায় মুঘল সাম্রাজ্য | class 7 5th chapter history moghol samrajjo| - Studing School

Fresh Topics

Monday, April 3, 2023

সপ্তম শ্রেণী ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর,পঞ্চম অধ্যায় মুঘল সাম্রাজ্য | class 7 5th chapter history moghol samrajjo|

 

সপ্তম শ্রেণী ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর,পঞ্চম অধ্যায় মুঘল সাম্রাজ্য | class 7 5th chapter history moghol samrajjo |





1. নগর’ শব্দটি কোন ভাষা থেকে এসেছে?

উ:- সংস্কৃত

2.শহর’ শব্দটি কোন ভাষা থেকে এসেছে?

উ:- ফারসি

3.আকবরের রাজধানী কোথায় ছিল?

উ:- ফতেহপুর সিকরিতে      

4.দিল্লিতে সুলতানি শাসন কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

উ:- কুতুবউদ্দিন আইবক

5.সপ্তদশ শতকে কোন্ মোগল সম্রাট শাহজাহানাবাদ তৈরি করেছিলেন? স

উ:- সম্রাট শাহজাহান

6.কার বর্ণনা থেকে ইলতুৎমিশের আমলে দিল্লি শহর গড়ে ওঠার সুন্দর বর্ণনা পাওয়া যায় ?

উ:- ঐতিহাসিক

7.ইসামির বর্ণনা থেকে নিজামউদ্দিন আউলিয়া কে ছিলেন?

উ:- সুলতানি আমলের একজন সুফি-সাধক

8.দিল্লি শহরের বসতি কেমন ছিল?

উ:- মিশ্র ধরনের বসতি

9.হোঁজ’ কী ?

উ:- সুলতানি আমলের পুকুরকে হৌজ বলে।

10.কত খ্রিস্টাব্দে আগ্রা শহরের বিকাশ শুরু হয়?

উ:- ১৫০৫ খ্রিস্টাব্দে

11.কিলা রাই পিথোরা শহরটি কে নির্মাণ করেন?

উ:- তৃতীয় পৃথ্বীরাজ চৌহান নির্মাণ করেন। ‘

12.হেজ-ই-শামসি’ নামক জলাধারটি কে খনন করে

উ:- ইলতুৎমিস

13.দিল্লি এখনও অনেক দূর” কথাটি কে বলেছেন?

উ:- নিজামউদ্দিন আউলিয়া

14.ফতেহপুর সিকরি’ কোন মোগলসম্রাট প্রতিষ্ঠা করেন?

উ:- সম্রাট আকবর

15.কিলা মুবারক (লালকেল্লা) কোন্ মোগলসম্রাট প্রতিষ্ঠা করেন?

উ:- শাহজাহান

16.কোন্ সুফিসন্তকে ‘চিরাগ-ই-দিল্লি’ নামে ডাকা হত ?

উ:- শেখ নাসিরউদ্দিনকে

17.মোগল যুগের স্বর্ণমুদ্রাকে কী বলা হত?

উ:- আশরফি/মোহর

18.ভাস্কো-দা-গামা কত খ্রিস্টাব্দে ভারতে আসেন?

উ:- ১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দে

19.কত খ্রিস্টাব্দে ইন্ডিয়া কোম্পানি স্থাপিত হয় ?

১৬০০ খ্রিস্টাব্দে হল্যান্ডের বণিকদের কী নামে ডাকা হত?

উ:- ওলন্দাজ বা ডাচ ডাচ

20.বণিকরা বাংলাদেশের কোথায় তাদের কুঠি নির্মাণ করে?

উ:- চুঁচুড়ায় কলকাতায় দেবগিরি

21.ইংরেজ বণিকরা বাংলাদেশের কোথায় তাদের বাণিজ্য কেন্দ্র গড়ে তােলে?

উ:- জাহাঙ্গিরের রাজদরবারে

22.কোন ইংরেজ বণিক সর্বপ্রথম হাজির হয়েছিলেন?

উ:- ক্যাপটেন হকিন্স

23.লালকেল্লা তৈরি করতে শাহজাহান কত টাকা খরচ করেন ?

উ:- ৯১ লক্ষ টাকা

24.কোন্ সুফিসন্তকে বলা হত মেহবুব-এ-ইলাহি?

উ:- নিজামউদ্দিন আউলিয়া

25.মোগল দরবারে আগত কোন বিদেশি বণিককে বলা হত ইংলিশ খান’?

উ:- ক্যাপটেন হকিন্সকে

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

২. সার্বভৌম শাসক বলতে কী বোঝো?

উত্তর। সার্বভৌম শাসক বলতে বোঝায় সর্বভূমির আধিপত্য বা অধিকার। তবে সর্বভূমি বা গোটা পৃথিবীর উপর কখনো কারো আধিপত্য থাকতে পারে না। অর্থাৎ এখানে বুঝতে হবে যে যার আধিপত্য একটি বিস্তৃত অঞ্চলের উপর থাকে এবং যিনি সেখানে নিজের ক্ষমতায় শাসন করেন, তিনিই সার্বভৌম শাসক। এই কথাটা শুধু শাসক নিজে অবহিত হলেই চলবে না। জনগণ সেটা মেনে নিলে তবেই তার আধিপত্য টিকে থাকবে।


৩. খানুয়ার যুদ্ধ সম্পর্কে কী জান?

উত্তর। ১৫২৭ খ্রিস্টাব্দে মেবারের অধিপতি রানা সংগ্রাম সিংহ এবং গোয়ালিয়র, অম্বর, চান্দেরী, আজমের প্রভৃতি রাজ্যের রাজপুত রাজা ও লোদী বংশীয় সম্রাট ইব্রাহিম লোদীর ভ্রাতা মামুদ লোদির মিলিত বাহিনীর সাথে বাবরের মধ্যে খানুয়ার যুদ্ধ হয়। যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে বাবর মুঘল যোদ্ধাদের জোটবদ্ধ করতে একে ধর্মের জন্য লড়াই এবং যোদ্ধারা হল ধর্মযোদ্ধা বা গাজি বলে উৎসাহিত করেন। এই যুদ্ধে রাজপুত জাতির পরাজয়ের ফলে মুঘল শক্তির সম্প্রসারণ ঘটে এবং ভারতে রাজপুত আধিপত্যের আশা চিরতরে অবলুপ্ত হয়ে যায়।


৪. পাট্টা ও কবুলিয়ত কী ?

উত্তর। শেরশাহর বিভিন্ন সংস্কারগুলির মধ্যে রাজস্ব ক্ষেত্রে সংস্কার ছিল অন্যতম। রাজস্ব সংস্কারের ক্ষেত্রে বিশেষ পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফল হল এই ‘পাট্টা' ও 'কবুলিয়ত যা ছিল শেরশাহ প্রবর্তিত ভূমিরাজস্ব বিষয়ক দুটি দলিল। প্রত্যেক প্রজার জমির সীমানা, তার দেয় খাজনা ও জমির ওপর তার অধিকার স্বত্ব উল্লেখ করে সরকার থেকে প্রজাকে যে দলিল দেওয়া হত, তা ‘পাট্টা' নামে পরিচিত। তার বদলে নিজেদের স্বত্ত্ব ও রাজস্ব দেওয়ার শর্ত স্বীকার বা কবুল করে সরকারকে যে দলিল প্রজারা স্বাক্ষর করে দিত, তার নাম কবুলিয়ত ।


৫. মনসবদারি ব্যবস্থা বলতে কী বোঝো?

উত্তর। আকবরের আমলে সামরিক ও বেসামরিক শাসন ব্যবস্থার মূল ভিত্তি ছিল আকবর প্রবর্তিত মনসবদারি ব্যবস্থা। আকবরের শাসনব্যবস্থার প্রশাসনিক পদগুলিকে বলা হত মনসব। তার পদাধিকারীদের বলা হত মনসবদার। প্রত্যেক মনসবদারকে নির্দিষ্ট পরিমাণ সেনা ও ঘোড়া রাখতে হত; সবচেয়ে উপরের পদগুলি কেবল রাজপরিবারের সদস্যদের জন্য রাখা থাকত। উচ্চপদস্থ মনসবদারদের বলা হত আমির। মনসবদারদের যুদ্ধের ঘোড়াগুলিকে পর্যবেক্ষণের জন্য মাঝে মাঝে হাজির করাতে হত। পদমর্যাদা ও দায়িত্ব অনুসারে মনসবদাররা ৩৩ টি স্তরে বিভক্ত ছিলেন। মানসবদারি প্রথা ছিল আকবরের সামরিক ও বেসামরিক শাসনব্যবস্থার মূল ভিত্তি।







৩। সংক্ষেপে (৩০-৫০ টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও: পূর্ণমান ৩

(ক) মুঘলরা কেন নিজেদের বাদশাহ বলতো?

উত্তর: ‘বাদশাহ’ একটি ফরাসি শব্দ৷বাদশা কথাটির অর্থ শাসক বারা যা মুঘলরা সার্বভৌম শাসকের ক্ষেত্রে পাদশাহ অথবা বাদশাহ শব্দটি ব্যবহার করত। মুঘলরা কিন্তু সুলতান শব্দটি যুবরাজদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতেন। জাহাঙ্গীরের নাম ছিল সেলিম। তিনি যখন যুবরাজ হলেন তখন বলা হতো সুলতান সেলিম। মুঘলরা নিজেদের সুলতান বলতো যুবরাজদের ক্ষেত্রে। তারা বাদশাহ উপাধি ব্যবহার করত। কারণ তাদের শাসন করার ক্ষমতা অন্য কারো অনুমোদনের উপর নির্ভরশীল নয়।

(খ) হুমায়ুন আফগানদের কাছে কেন হেরে গিয়েছিলেন?

উত্তর: সম্রাট হুমায়ুনের রাজত্বকালে মুঘলদের বিরোধী যারা ছিল তারা সবসময় একজোট ছিল না। বিহারে আফগানদের নেতৃত্বে ছিলেন হুমায়ুনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী শের খান। হুমায়ুন পরপর দুবার শের খানের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। ১৫৪৯ খ্রিস্টাব্দে বিহারের চৌসার যুদ্ধে আর ১৫০০ খ্রিস্টাব্দে কোনৌজ এর কাছে বিল গ্রামের যুদ্ধে। তার কাছে পরাজিত হয়ে হুমায়ুন দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এই সময় পারস্যের শাহ তাওমন্ত হুমায়ুনকে আশ্রয় দেন। হুমায়ুন যখন দেশ ত্যাগী ছিলেন তখন আকবরের জন্ম হয় এবং শেরশাহের মৃত্যুর পর তার পুত্র ক্ষমতায় আসে। আর শেরশাহের মৃত্যুর পর হুমায়ুন দেশে আবার সসৈনে ফিরে আসেন। কিন্তু একজন না থাকার কারণে হুমায়ুনকে আফগানদের কাছে পরাজিত হতে হয়।

(গ) ঔরঙ্গজেবের রাজত্বে কোনো মুঘল অভিজাতদের মধ্যে রেষারেষি বেড়েছিল?

উত্তর: ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে দাক্ষিণাত্যের বিজাপুর ও গোলকোন্ডা অনেক চেষ্টায় মুঘলদের দখলে আসে। ফলে মারাঠি ও দক্ষিণী মুসলিম অভিজাতরা মুঘল শাসনে যোগ দেয়। এর ফলে মনসবদারী ব্যবস্থার বৈচিত্র্য বেড়েছিল। কিন্তু তার সঙ্গে মনসব পাওয়া নিয়ে অভিজাতকদের মধ্যে রেষারেষি তৈরি হয়েছিল। এর ফলে কৃষি ব্যবস্থা সমস্যা দেখা দিয়েছিল। মথুরায় জাঠ কৃষকরা এবং হরিয়ানায় সৎনামি কৃষকেরা বিদ্রোহ করে। এদের মতো আঞ্চলিক শক্তি মুঘল শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়েছিল। রাজপুদের সঙ্গে সংঘাত এবং দাক্ষিণাত্যের একটানা যুদ্ধের ফলে সাম্রাজ্যের আয়তন বৃদ্ধির সঙ্গে সমস্যাও বেড়েছিল।

ঘ) সুলহ-ই কুল কী?

উত্তর: মুঘল সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক আদর্শ ছিল বিভিন্ন গোষ্ঠীকে সাম্রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করে একটি যথার্থই ভারতীয় সাম্রাজ্য গড়ে তোলা। আকবরের প্রশাসনিক আদর্শটি হল বাদশা ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুযায়ী শাসন করবেন এবং প্রজাদের তিনি তার পিতৃসুলভ ভালোবাসা থাকবে। অর্থাৎ, তার শাসন করার অধিকার অন্য কোন শাসকদের থেকে পাওয়া নয়। এই ক্ষমতা তার নিজের। কোন গোষ্ঠীর বা ব্যক্তির প্রতি তার পক্ষপাত থাকবেনা। সকলের প্রতি সহনশীলতা এবং সকলের জন্য শান্তির পথকে বলা হয় সুলহ-ই কুল।

(ঙ) মুঘল শাসন ব্যবস্থায় সুবা প্রশাসনের পরিচয় দাও।

উত্তর: মুঘল সম্রাট বাবর এর শাসনকাল যুদ্ধ বিগ্রহয় কেটেছিল। প্রশাসনের দিকে তিনি সেভাবে নজর দিতে পারেননি। মুঘল শাসনের মাঝে আব্রাহাম শাসক শেরশাহের প্রশাসনিক পরিকাঠামো সুপরিকল্পিত ছিল, যা পরবর্তী সময়ে আকবর অনুকরণ করেছিলেন। আকবর তার সাম্রাজ্যকে কয়েকটি প্রদেশে ভাগ করেছিলেন। উপদেশগুলোকে বলা হতো সুবা। সুবার দায়িত্বে যিনি থাকতেন তাকে বলা হতো সুবাদার।

৪। বিশদে (১০০-১২০ টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও: পূর্ণমান ৫

(ক) পানিপতের প্রথম যুদ্ধ, খানুয়ার যুদ্ধ ও ঘর্ঘরার যুদ্ধের মধ্যে তুলনা করো। পানিপতের প্রথম যুদ্ধে যদি মুঘলরা জয়ী না হতো তাহলে উত্তর ভারতে কারা শাসন করতো?

উত্তর: পানিপত ও খানুয়ার যুদ্ধে বাবর এমন রণকৌশল চালিয়েছিলেন যাতে এক দিকে কামান ও বন্দুকধারী সৈন্য এবং অন্যদিকে ছিল দ্রুতগামী ঘোড়শাওয়ার — এই যৌথ বাহিনীর উপর নির্ভরশীল ছিল৷ঘর শাওয়ার বাহিনীর একটা অংশ দুইপাশ থেকে গুলি করতো আবার পিছন থেকে সৈন্যদের আক্রমণ করত৷ বন্দুকধারী সিপাহীরা পিছন থেকে গুলি করত একসঙ্গে এই দ্বিমুখে আক্রমণে শত্রু সৈন্য যখন দিশাহারা সেই সময় বাকি ঘর সাভাররা সামনে থেকে আক্রমণ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিত৷ 

মেবারের রানার সংগ্রাম সিংহের নেতৃত্বে রাজপুতরা মুঘলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে৷ বাবুর যুদ্ধ শুরুর আগে মুঘল সেনাদের বলেন যে এই যুদ্ধ মুঘলদের ধর্মের লড়াই৷ এভাবে বাবর খানুয়ার যুদ্ধে সকলকে জড়বুদ্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন৷ যদিও এই যুদ্ধ একেবারেই ধর্মীয় যুদ্ধ ছিল না৷

আবার আফগানদের বিরুদ্ধে ঘর্ঘরার যুদ্ধে বাবর জয়লাভ করলেও বিহারে পাকাপাকিভাবে অধিকার কায়েম করতে পারেননি৷ এই যুদ্ধে আফগানদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন বাংলার শাসক নুসরত শাহ ৷

(খ) শেরশাহর শাসন ব্যবস্থায় কী কী মানবিক চিন্তার পরিচয় তুমি পাও তা লেখো।

উত্তর: শেরশাহের প্রশাসনিক ব্যবস্থা, রাজস্ব ব্যবস্থার ক্ষেত্রে আলাউদ্দিন খলজি ও সম্রাট আকবরের শাসনব্যবস্থার অনেকটা মিল ছিল। তিনি তার রাজ্যের শাসন পরিচালনার জন্য ও রাজস্ব আদায়ের জন্য কিছু সংস্কার করেছিলেন।

i) শেরশাহ তার কৃষকদের পাট্টা দিতেন। এই পাট্টায় কৃষকদের নাম, জমিতে কৃষকদের কতটা, কত রাজস্ব তাদের রাজাকে দিতে হবে প্রকৃতি সব লেখা থাকতো৷ তার বদলে কৃষকরা কবুলিয়াত নামে একটি দলিল রাষ্ট্রকে দিত যাতে রাজস্ব দেওয়ার কথা লেখা থাকতো।

ii) সেনাবাহিনীর উপর তার নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য তিনি দাগ ও হুলিয়া নামক দুটি ব্যবস্থা চালু করেন৷

iii) রাজা শেরশাহ বনিক ও পথিকদের বিশ্রাম নেওয়ার জন্য রাস্তার ধারে ধারে অনেক বিশ্রামাগার বা সরাইখানা তৈরি করেছেন৷ তাছাড়া তিনি ডাক হরকরা হিসেবে ঘোড়াকে ব্যবহার করতেন৷

iv) যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করার জন্য তিনি সড়ক পথের উন্নতি করেন৷ তিনি ‘সড়ক–ই–আজম’ নামে একটি রাস্তা নির্মাণ করেছিলেন৷ সেই রাস্তা সোনারগাঁ থেকে উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে পেশোয়ার পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল৷ যার বর্তমান নাম জিটি রোড৷


গ) মুঘল শাসকদের রাজপুত নীতিতে কী কী মিল ও অমিল ছিল তা বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: মুঘল বাদশা হুমায়ুন বুঝেছিলেন হিন্দুস্তানের ক্ষমতা দখল করার জন্য রাজপুত রাজাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার রাখতে হবে ৷ কারণ রাজপুতরা ছিলেন বিশাল জমিদার মুঘল বাদশাহের ও শাহজাদাদের সঙ্গে কোন কোন রাজপুতদের বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল৷ এ ক্ষেত্রে আকবর নতুন কিছু করেননি, এর আগেও মুসলমান শাসকদের সঙ্গে হিন্দু রাজ পরিবারের মেয়েদের বিয়ে হতো৷ আকবর হিন্দুদের ওপর জিজিয়া কর ও তীর্থ কর তুলে দেন৷ তিনি যুদ্ধবন্দীদের জোর করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করা নিষিদ্ধ করেন৷ তবে মেবারের রানা আকবরের অধীনতা স্বীকার করেননি৷

আকবরের নীতির ফলে মুঘলরা বীর রাজপুত যোদ্ধাদের পাশে পেয়েছিল৷ মুঘল বাদশাহরা যদি সমস্ত ক্ষমতার স্বীকার করে নিতো তাহলে রাজপুতরা ওয়াতনের ওপর অধিকার বজায় রাখতে পারতো৷ তবে কোন রাজপুতদের রাজত্বে উত্তরাধিকার নিয়ে কোন গোলমাল হলে মোগলরা সেই রাজ্য সামরিকভাবে পুরোপুরিভাবে হাতে নিত৷ তারপর তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী নতুন শাসক সিংহাসনে বসত৷

(ঘ) দাক্ষিণাত্য অভিযানের ক্ষত মুঘল শাসনের উপর কী প্রভাব ফেলেছিল?

উত্তর: বাহমনি রাজ্য ভেঙে যাওয়ার পরে দাক্ষিণাত্যে কতগুলি সুলতানি রাজ্যের উত্থান ঘটে। বরের শাসনকালে যখন মুঘলরা খুব শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল তখন দাক্ষিণাত্যে সুলতানি রাজ্যগুলি একে অপরের সঙ্গে লড়াই করতে ব্যস্ত। ওই সময় থেকে দাক্ষিণাতে বড় বড় জমির মালিক, মারাঠি সরদার ও সৈনিকরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। আকবর ভেবেছিলেন যে দাক্ষিণাত্যের রাজ্যগুলি অনেক রাজ্যের মতই মুঘলদের সঙ্গে মিশে যাবে, কিন্তু তা হলো না, আশা পূর্ণ হলো না। দাক্ষিণাত্যে সুলতানি রাজ্যগুলিতে অভিজাতদের সঙ্গে নতুন অভিজাতকদের মধ্যে কোন সম্পর্ক ছিল না। ঔরঙ্গজেবের আমলে মুঘলরা দাক্ষিণাতের দুটি দেশ বিজাপুর ও গোলকুন্ডা দখল করেছিল। মুঘল সাম্রাজ্য বিশাল সাম্রাজ্যে পরিণত হলো। কিন্তু তার পরিনাম স্বরূপ বহু বছর ধরে বিশাল রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হলো। তাতে মুঘলদের আর্থিক ক্ষতি হলো। দাক্ষিণাত্য যুদ্ধের এই ক্ষত আর সারলো না। ২৫ বছর ধরে যুদ্ধ করে ঔরঙ্গজেব দাক্ষিণাত্যেই মারা গেলেন। মারাঠি নেতার শিবাজী তেই তাদের রাজা বলে মেনে নিতে হলো।









No comments:

Post a Comment