কলিঙ্গ দেশে ঝড়বৃষ্টি - নবম শ্রেণীর বাংলা প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর | সমস্ত প্রশ্ন ও উত্তর | class 9 1st chapter kolingo deshe jhorbristi prosno uttor |
কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি একটি পাঠ্যক্রম যা বাংলা ভাষার নবম শ্রেণীতে অধ্যয়নের জন্য উন্নয়ন করা হয়েছে। এই পাঠ্যক্রমে কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। এই পাঠ্যক্রমে শিক্ষার্থীদের পরিচিত করানো হয় কলিঙ্গদেশে বৃষ্টির সময় হওয়া ঝড়ের ধরণ, ঝড়ের বৈশিষ্ট্য, তার কারণ এবং বিভিন্ন প্রভাব সম্পর্কে। এছাড়াও এই পাঠ্যক্রমে শিক্ষার্থীদের ঝড়-বৃষ্টি সম্পর্কিত সমস্যার সমাধান করার উপায় সম্পর্কে শেখানো হয়।
কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি এই বিষয়টি বাংলা নবম শ্রেণী পাঠ্যপুস্তকের অন্তর্গত। এই পাঠ্যপুস্তকের মূল উদ্দেশ্য হল বাংলাদেশের একটি অঞ্চলে প্রচলিত ঝড়-বৃষ্টি নিয়ে ছাত্রদের পরিচিত করা এবং তাদের জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা উন্নয়ন করা। এই বইয়ে কলিঙ্গদেশ এলাকার ঝড়-বৃষ্টি সম্পর্কে কবিতা বানিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে যা একটি রচনামূলক উপাদান রয়েছে। এর পাশাপাশি বইটিতে সামগ্রিক বিষয় ভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর রয়েছে যা ছাত্রদের জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা উন্নয়নে সাহায্য করবে।
এককথায় প্রশ্ন উত্তর প্রশ্নের মান -1
কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশটি মধ্যযুগের কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের অন্তর্গত।
মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত চণ্ডীমঙ্গল কাব্যটি অভয়ামঙ্গল, চণ্ডিকামঙ্গল, কবিকঙ্কণ চণ্ডী, অম্বিকামঙ্গল প্রভৃতি নামেও পরিচিত।
কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশে প্রবল জলোচ্ছ্বাসের কারণে ঢেউগুলি পর্বতের ন্যায় বিশাল ছিল।
কলিঙ্গদেশে সংঘটিত প্রচণ্ড দুর্যোগে পর্বতসম ঢেউয়ের আঘাতে প্রজাদের ঘরগুলি ধ্বংস হওয়ার অবস্থা হয়েছিল।
কবিকঙ্কণ রচিত ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ কবিতায় দেবীচণ্ডীর আদেশে নদনদীগণ ধায়।
মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতায় অম্বিকা দেবী চণ্ডীর নাম।
শ্রীকবিকঙ্কণ দেবী অম্বিকার তথা চণ্ডীর স্তুতিগান ‘অম্বিকামঙ্গল’গেয়েছেন।
মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত চণ্ডীমঙ্গল কাব্যটির দুটি খণ্ড, যথা- আখেটিক খণ্ড এবং বণিক খণ্ড।
কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশটি চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের আখেটিক খণ্ডের অন্তর্গত।
চারদিকের আকাশ মেঘে আচ্ছন্ন হওয়ায় সমগ্র কলিঙ্গদেশ অন্ধকারে ঢেকে গেছে, ফলে কলিঙ্গবাসী নিজেদের অঙ্গ দেখতে পাচ্ছেন না।
চারি মেঘ হল মেঘের চারটি রূপ – সম্বর্ত, আবর্ত, পুষ্কর এবং দ্রোণ ৷
ঘন মেঘে ঢাকা কলিঙ্গের আকাশে জোরে জোরে মেঘের ডাক শোনা গিয়েছে।
অথবা, কলিঙ্গের প্রজাদের মন বিষাদগ্রস্ত কেন?
চারদিক মেঘে ঢাকা অবস্থায় মুশলধারে বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ঘনঘন মেঘের ডাকে প্রজারা ভয়াবহ বিপদের আশঙ্কায় বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
উদ্ধৃতাংশটিতে কলিঙ্গদেশে মেঘের প্রবল গর্জন এবং মুশলধারে বৃষ্টিপাতের সঙ্গে যে প্রচণ্ড ঝড় হচ্ছিল তার ভয়ানক রূপ প্রকাশ পাচ্ছে।
মুশলধারায় বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ভয়ংকর ঝড়ের তাণ্ডব শুরু হওয়ায় আসন্ন বিপদের কথা ভেবে প্রজারা নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিল।
শ্রীকবিকঙ্কণ চণ্ডীমঙ্গল কাব্যধারার শ্রেষ্ঠ কবি মুকুন্দ চক্রবর্তীর উপাধি।
উদ্ধৃত পঙ্ক্তিটির অর্থ হল সবুজ শস্যখেত ধুলোয় ঢেকে গেল।
বিধ্বংসী ঝড়বৃষ্টির তাণ্ডবে সমগ্র কলিঙ্গদেশ ধুলোয় ঢেকে যায় এবং প্রবল দুর্যোগে শস্যখেতের ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সেখানকার প্রজারা চমকিত হয়।
চারি মেঘ হল সম্বর্ত, আবর্ত, পুষ্কর এবং দ্রোণ।
কলিঙ্গদেশে প্রবল ঝড়বৃষ্টির সময় চারদিকে মেঘে জল দিয়েছিল অষ্ট গজরাজ বা আটটি শ্রেষ্ঠ হাতি।
জলধারার প্রবল বর্ষণকে করি-কর অর্থাৎ হাতির শুঁড় দিয়ে জল ঢালার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
করি শব্দের অর্থ হাতি ও কর অর্থ হাত। কিন্তু করি কর এই শব্দবন্ধে উল্লিখিত অংশে হাতির শুঁড় বুঝিয়েছে।
প্রবল বৃষ্টিপাতের সঙ্গে বারবার মেঘের প্রবল গর্জনে কলিঙ্গবাসীরা কেউ কারও কথা শুনতে পাচ্ছিল না।
অথবা, কলিঙ্গবাসী জৈমিনিকে স্মরণ করে কেন?
মেঘ ঝড়বৃষ্টির সঙ্গে প্রবল বজ্রপাতেরও হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কলিঙ্গবাসী ঋষি জৈমিনির কথা স্মরণ করেছেন।
ঋষিপুরুষ জৈমিনি হলেন মীমাংসা দর্শনের রচয়িতা এবং ব্যাসদেবের শিষ্য।
ভয়ংকর কালো মেঘে চারদিক ঢেকে গিয়ে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে কেউ সূর্যরশ্মি দেখতে পাচ্ছিল না।
প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে কলিঙ্গদেশ জলমগ্ন হয়ে যাওয়ায় গর্ত ছেড়ে সাপ জলে ভেসে বেড়াচ্ছে।
কলিঙ্গদেশে টানা সাত দিন প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছিল।
সাত দিনের বৃষ্টিতে শস্যখেত জলে ডুবে যাওয়ায় ফসল নষ্ট হয়ে গেল এবং প্রবল শিলাবৃষ্টিতে বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেল।
প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে ঘরের চাল ভেদ করে যে শিল মেঝেতে এসে পড়ে তার সঙ্গে ভাদ্র মাসের পাকা তালের তুলনা করা হয়েছে।
কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশে বড়ো আকারের শিল পড়াকে ভাদ্র মাসে তাল পড়ার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
দেবী চণ্ডীর আদেশ পেয়ে বীর হনুমান মঠ, অট্টালিকা ভেঙে খানখান করেছিল।
পর্বতের সমান নদীর ঢেউয়ের দাপটে কলিঙ্গদেশের বাড়িঘর জলে ভাসতে ভাসতে টলমল করছিল।
চণ্ডীর আদেশে নদনদীরা ছুটে যায়, আর চারদিকে তারা পর্বতের সমান ঢেউ তোলে।
আনুমানিক খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতক থেকে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত বাংলাদেশের সমাজজীবনে লোকদেবতার প্রশস্তিমুখর যে বিশেষ এক শ্রেণির ধর্ম বিষয়ক আখ্যানকাব্য প্রচলিত ছিল, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে সেই কাহিনিকাব্য মঙ্গলকাব্য নামে পরিচিত।
মঙ্গলকাব্য প্রধানত চার প্রকার।
মঙ্গলকাব্যের মূলত চারটি ভাগ। যেমন – মনসামঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, অন্নদামঙ্গল। এ ছাড়াও মঙ্গলকাব্যের বহু অপ্রধান শাখা তৎকালীন সমাজে প্রচলিত ছিল। যেমন — শীতলামঙ্গল, ষষ্ঠীমঙ্গল, রায়মঙ্গল, পঞ্চাননমঙ্গল ইত্যাদি।
মঙ্গলকাব্যের দুটি বৈশিষ্ট্য হল —
1. গ্রন্থারম্ভে দেববন্দনা ও গ্রন্থউৎপত্তির কারণ বর্ণিত হবে।
2. বারোমাস্যা, চৌতিশা, নারীগণের পতিনিন্দা ইত্যাদি বর্ণনা এই কাব্যে উপস্থিত থাকবে।
অভয়ামঙ্গল বা অম্বিকামঙ্গল – এ কোন্ দেবীর মহিমা ব্যক্ত হয়েছে?
কবিকঙ্কণ কবি মুকুন্দ চক্রবর্তীর উপাধি।
বর্ধমান জেলায় রত্নানদী তীরস্থ দামিন্যা গ্রামে কবিকঙ্কণ মুকুন্দ জন্মগ্রহণ করেন।
কবি মুকুন্দ চক্রবর্তীর পিতার নাম হৃদয় মিশ্র ও মাতার নাম দৈবকী।
মুকুন্দ চক্রবর্তী ষোড়শ শতকের কবি। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে যুগবিভাজন পর্বের বিচারে মধ্যযুগের কবি তিনি।
কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী বাঁকুড়া রায়ের পুত্র রঘুনাথ রায়ের সভাকবি ছিলেন।
কবি মুকুন্দ চক্রবর্তীর লেখা মঙ্গলকাব্যের নাম অভয়ামঙ্গল।
চণ্ডীমঙ্গল কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তীর লেখা।
কবি মুকুন্দ চক্রবর্তীর লেখা পাঠ্যকবিতার নাম ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’।
কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি পদ্যাংশটি কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত ‘অভয়ামঙ্গল’ কাব্যের ‘আখেটিক’ খণ্ডের অন্তর্গত।
এই কবিতায় কলিঙ্গ প্রদেশের কথা আছে।
কলিঙ্গের বর্তমান নাম উড়িষ্যা বা ওড়িশা।
মুকুন্দ চক্রবর্তী বিরচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতায় ঘন মেঘে আকাশ আচ্ছন্ন হয়ে কলিঙ্গদেশে অন্ধকার নেমে এসেছিল।
কলিাদেশের আকাশ ঘন কালো মেঘে আবৃত হয়ে যায়, ফলে দিনের বেলাতেই যেন রাতের আঁধার নেমে আসে। এর ফলে দৃশ্যমানতা কমে গেলে প্রজারা নিজের অঙ্গ দেখতে পায় না।
ঈশান কোণে চিকুর সঘনে উড়ল।
সঘনে শব্দের অর্থ ঘন ঘন।
চিকুর কথার অর্থ চুল বা কেশ হলেও পাঠ্যাংশে ‘চিকুর’ কথার অর্থ তীব্রবিদ্যুৎ বা বাজ।
কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতায় উত্তর পবনে দুরদুর শব্দে মেঘ ডাকে।
মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতায় চার প্রকার মেঘে জল দেয়। পুরাণ মতে সেই চার প্রকার মেঘ হল – সম্বত, আবর্ত, পুষ্কর, দ্রোণ।
কবিকঙ্কণ রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি পদ্যাংশে কলিঙ্গদেশে চারি মেঘে মুষলধারায় বর্ষণ হচ্ছিল।
নাদ শব্দের অর্থ তীব্র আওয়াজ।
কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতায় কলিঙ্গদেশের প্রজারা প্রলয় গুণল।
কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতাংশে কলিঙ্গদেশের প্রজারা ভবন ছাড়ল।
কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি পদ্যাংশে কলিঙ্গদেশে প্রচণ্ড ঝড়ের দাপটে প্রজারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে প্রাণ রক্ষার্থে ভবন ছেড়ে বেরিয়ে গেল।
রড় শব্দের অর্থ ছুট বা দৌড়।
হরিত শব্দের অর্থ সবুজ।
কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি’ কবিতাংশে কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী বলতে চেয়েছেন কলিঙ্গদেশে প্রবল ঝড়ের দাপটে উড়ে আসা ধুলোর আস্তরণে সমস্ত সবুজ আচ্ছাদিত হয়েছিল।
মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ কবিতায়খেতের শস্য উলটে পড়েছিল।
কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি ও বজ্রপাতের ফলে এক দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া সৃষ্টি হয়। ঝড়ের দাপটে মাঠের শস্য উপড়ে পড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায়। তা দেখে প্রজ্ঞা চমকিত হয়েছিল।
গজ শব্দের দুটি সমার্থক শব্দ হস্তী,মাতঙ্গ।
অষ্ট গজরাজ চার মেঘের সহায়তায় প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটিয়েছিল। পুরাণ মতে অষ্টগজরাজ হল – ঐরাবত, পুন্ডরীক, বামন,কুমুদ, অঞ্জন, পুষ্পদত্ত, সার্বভৌম ও সুপ্রতীক।
বেঙ্গ তড়কা কথার অর্থ ব্যাঙের মতো তড়াক করে লাফ দেওয়া।
বরিষে শব্দের গদ্যরূপ বর্ষণ করে।
মহী শব্দের দুটি সমার্থক শব্দ হল – পৃথিবী, ভুবন।
কলিঙ্গদেশে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে জলস্থল একাকার হয়েপথ হারিয়ে যায়।
কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ পদ্যাংশে মেঘের গর্জনের তীব্রতায় কেউ কারোর কোনো কথা শুনতে পায় না।
পরিচ্ছিন্ন কথাটির অর্থ হল বিভক্ত বা বিচ্ছিন্ন।
কলিঙ্গদেশের আকাশ ঘন কালো মেঘে আচ্ছন্ন। প্রবলবৃষ্টিপাতের ফলে সন্ধ্যা দিবস রজনী পৃথকভাবে দৃশ্যমান হচ্ছে না। একটানা আঁধারে দিনরাতের সীমানা মুছে গেছে।
কলিঙ্গে সোঙরে’ কথার অর্থ কলিাদেশ স্মরণ করে।
জৈমিনি মুনি মীমাংসা দর্শন প্রণেতা। জৈমিনি মুনির অপর নাম বজ্রপাত নিবারক। তাই বজ্রপাতের সময় তার নামকীর্তন করা হয়।
হুড়হুড়, দুড়পুড়, ঝনঝন ধ্বন্যাত্মক শব্দ।
কলিঙ্গদেশের প্রজারা ঘন কালো মেঘে ছাওয়া অন্ধকারে দিনে নিজের অঙ্গ বা দেহ দেখতে পায় না।
কবিকঙ্কণ রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি পদ্যাংশে কলিঙ্গদেশের আকাশে ঘন কালো মেঘের আড়ালে সূর্য ঢাকা পড়ে যাওয়ায় দৃশ্যমানতা একদম নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ‘রবির কিরণ’ দেখা যায় না।
ভুজঙ্গ শব্দের দুটি প্রতিশব্দ – ফণী, সৰ্প।
মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ কবিতায়ভুজঙ্গ অর্থাৎ সাপ গর্ত ছেড়ে বেরোল।
কলিঙ্গদেশে নিরস্তর সাতদিন বৃষ্টি হয়েছে।
কলিঙ্গবাসীর ঘর হেজ্যা গেল।
মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি পদ্যাংশে সাতদিনের প্রবল বর্ষায় জল ঢুকে বাড়িঘর নষ্ট হয়ে গেল। এ কথাই বোঝানো হয়েছে।
মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ কবিতায় কলিঙ্গবাসীর ঘরের চাল ভেদ করে শিল পড়ে।
কবিতায় ‘চাল’ শব্দের অর্থ ঘরের আচ্ছাদন বা ছাউনি।
সাধারণভাবে চাল শব্দের অর্থ ধান থেকে জাত দানা, যা দিয়ে ভাত প্রস্তুত করা হয়’ কিংবা মতলব।
মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতায় শিলকে ভাদ্রমাসে পড়ে থাকা তালের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
মুকুন্দ চক্রবর্তীর কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতায় ভাদ্র মাসের কথা পাওয়া যায়।
কলিাদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতায় ভাদ্র মাসে পড়ে।
কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ পদ্যাংশে বীর হনুমান দেবী চণ্ডীরআদেশ পান।
কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ পদ্যাংশে মঠ, অট্টালিকা ভেঙে খানখান হয়েছে।
মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ পদ্যাংশে দেবী চণ্ডীর আদেশে বীর হনুমান মঠ অট্টালিকা ভেঙে খানখানকরে।
কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কাব্যাংশে প্রবল জলোচ্ছ্বাসের কারণে ঢেউগুলি পর্বতের ন্যায় বিশাল ছিল।
কলিঙ্গদেশে সংঘটিত প্রচণ্ড দুর্যোগে পর্বতসম ঢেউয়ের আঘাতে প্রজাদের ঘরগুলি ধ্বংস হওয়ার অবস্থা হয়েছিল।
কবিকঙ্কণ রচিত ‘কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি’ কবিতায় দেবীচণ্ডীর আদেশে নদনদীগণ ধায়।
মুকুন্দ চক্রবর্তী রচিত কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি কবিতায় অম্বিকা দেবী চণ্ডীর নাম।
শ্রীকবিকঙ্কণ দেবী অম্বিকার তথা চণ্ডীর স্তুতিগান ‘অম্বিকামঙ্গল’গেয়েছেন।
শ্রীকবিকঙ্কণ দেবী অম্বিকার তথা চণ্ডীর স্তুতিগান অম্বিকামঙ্গল গেয়েছেন।
প্রশ্নের মান -3
1, “দেখিতে না পায় কেহ অঙ্গ আপনার।।"--কারোর অঙ্গ দেখতে না পাওয়ার কারণ কী?
উত্তর: কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তীর 'কলিঙ্গদেশে ঝড়বৃষ্টি' কবিতায় কলিঙ্গদেশে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের উল্লেখ করা হয়েছে। হঠাৎই কলিঙ্গদেশে ভয়ংকর প্লাবনের আশঙ্কা দেখা দেয়। আকাশ ঘন কালো মেঘে ছেয়ে যায়। ফলে সমগ্র কলিঙ্গদেশ অন্ধকারে ঢেকে যায়। কালো মেঘের বুক চিরে ঘনঘন বিদ্যুতের ঝলকানি দেখা যায়। অন্ধকার এতটাই ঘন হয়ে ওঠে যে, তা ভেদ করে প্রজাদের নিজেদের চেহারা পর্যন্ত দেখার উপায় থাকে না।
২. “ঈশানে উড়িল মেঘ সঘনে চিকুর।'—উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তীর 'কলিঙ্গদেশে ঝড়-বৃষ্টি' কবিতায় আকস্মিক প্রাকৃতিক বিপর্যয় শুরু হয়। তৈরি হয় বন্যার আশঙ্কা প্রবল। ঝড়বৃষ্টি কলিঙ্গদেশে সর্বনাশ ডেকে আনে। উদ্ধৃতাংশটিতে সেই ভয়াবহ বিপর্যয়ের বর্ণনা করা হয়েছে । কলিঙ্গদেশে আকাশের উত্তর-পূর্ব অর্থাৎ ঈশান কোণে মেঘের ঘনঘটায় চারদিক অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। প্রজারা সেই অন্ধকারে নিজেদেরকেও দেখতে পাচ্ছে না। মেঘের বুক চিরে অবিরাম বিদ্যুতের ঝিলিক পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তোলে।
3. প্রলয় গগিয়া প্রজা ভাবয়ে বিষাদ।'-প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রজাদের বিষাদের কারণ আলোচনা করো।
উত্তর: কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি' কাব্যাংশ থেকে নেওয়া উধৃতিটিতে কলিঙ্গ দেশের প্রজাদের কথা বলা হয়েছে।কলিঙ্গদেশের আকাশে হঠাৎ প্রচুর মেঘ জমাট বাঁধে। ঈশান কোণে জমাটবাঁধা মেঘ সারা আকাশ ঢেকে ফেললে সর্বত্র অন্ধকার নেমে আসে। উত্তরের প্রবল বাতাসে দূর থেকে মেঘের গম্ভীর আওয়াজ ভেসে আসে। মেঘের প্রবল গর্জন ও ঘনঘন বিদ্যুৎচমকের সঙ্গে শুরু হয় প্রবল বৃষ্টিপাত। মহাপ্লাবনের আশঙ্কায় প্রজারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
4.কোথাকার প্রজারা কী কারণে বিপাকে পড়েছিল?
উত্তর: 'কলিঙ্গদেশে ঝড়বৃষ্টি' কাব্যাংশ থেকে নেওয়া উধৃতাংশে উল্লিখিত 'রত্ন' শব্দের অর্থ 'পালিয়ে যাওয়া।দেবী চণ্ডীর ইচ্ছা অনুযায়ী কলিঙ্গদেশে প্রবল ঝড়বৃষ্টি বিপর্যয় ডেকে আনে। আকাশ ঘন মেঘে ঢেকে যায়। ঘন অন্ধকারে প্রজাদের নিজেদের চেহারা পর্যন্ত দেখার উপায় থাকে না। প্রবল বৃষ্টির সঙ্গে মেঘের গম্ভীর গর্জন ও ঝড়ের তাণ্ডবে সেখানকার প্রজারা বিপদের আশঙ্কায় ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।
5. "পরিচ্ছিন্ন নাহি সন্ধ্যা দিবস রজনী।'-'পরিচ্ছিন্ন' শব্দের অর্থ কী? কবি এরকম বলেছেন কেন? ১+২ [বর্ধমান সি এম এস হাই স্কুল]
উত্তরঃ কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তীর লেখা কলিঙ্গদেশে ঝড়বৃষ্টি কবিতায় পাওয়া 'পরিচ্ছিন্ন' শব্দটির অর্থ হল 'বিভেদ' বা পার্থক্য'।দেবীচণ্ডীর ইচ্ছায় কলিঙ্গদেশে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। সমগ্র আকাশ মেঘে ঢেকে যায়। বিদ্যুৎ চমক আর মেঘগর্জনের সঙ্গে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। প্রজারা ভয় পেয়ে ঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। সবুজ শস্যের খেত ধুলোয় ঢেকে যায়। প্রবল বৃষ্টিতে জলে ডুবে যায় চারপাশ। জল-স্থল একাকার হয়ে পথ হারিয়ে যায়। মেঘের গর্জনে কেউ কারোর কথা শুনতে পায় না। অন্ধকার এতটাই নিবিড় হয়ে যায় যে দিন এবং রাত্রিকেও কেউ আলাদা করতে পারে না।
6. "চারি মেঘে জল দেয় অষ্ট গজরাজ।"- উধৃতাংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তীর লেখা কলিঙ্গদেশে ঝড়বৃষ্টি কবিতায় দেবী চণ্ডীর নির্দেশে কলিঙ্গদেশে প্রাকৃতিক বিপর্যয় নেমে আসে ঘন কালো মেঘে আকাশ ঢেকে যায় | প্রবল মেঘগর্জনে প্রজারা চিন্তিত হয়ে পড়ে। ঝড়ের তাণ্ডবে তারা ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। সবুজ শস্যের খেত ধুলোয় ঢেকে যায়। বৃষ্টি এতটাই তীব্র হয় যে কবি মনে করেন, আটটি দিকের পাহারাদার আটটি হাতি-ঐরাবত, পুণ্ডরীক, বামন, কুমুদ, অঞ্জন, পুষ্পদন্ত, সার্বভৌম এবং সুপ্রতীক যেন তাদের খুঁড়ের সাহায্যে চারমেঘে জল দিচ্ছে | আর তার ফলেই প্রবল বৃষ্টিপাতে চারপাশ জলে ডুবে গেছে।
7."কলিঙে সোঙরে সকল লোেক যে জৈমিনি || -জৈমিনি কে? কলিগবাসীর জৈমিনিকে স্মরণের কারণ কী? ১+২
উত্তর: কলিঙ্গদেশে ঝড়বৃষ্টি' কাব্যাংশে উল্লিখিত জৈমিনি হলেন এক বাকসিদ্ধ ঋষি। এনার নাম স্মরণ করলে বজ্রপাত বন্ধ হয়ে যায় এই বিশ্বাসে বজ্রপাতের সময় মানুষ এঁর নামকীর্তন করে। কলিঙ্গদেশের আকাশে হঠাৎ ঘন কালো মেঘ জমে ওঠে। আকাশভাঙা মেঘ থেকে বৃষ্টি নামে মুশলধারায়। মেঘের গম্ভীর গর্জন, ঘনঘন বজ্রপাত, ঝড়ের প্রবল তাণ্ডবে ভীত কলিঙ্গাবাসী এই ভীষণ বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার আশায় ঋষি জৈমিনিকে স্মরণ করতে থাকে।
8."না পায় দেখিতে কেহ রবির কিরণ || কারা, কেন রবির কিরণ দেখতে পায়নি?
উত্তর: 'কলিঙ্গদেশে ঝড়বৃষ্টি' কাব্যাংশ থেকে নেওয়া উধৃতাংশটিতে কলিঙ্গবাসীর কথা বলা হয়েছে। ঝড়বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত কলিঙ্গদেশের আকাশে হঠাৎই প্রচুর মেঘ জমাট বাঁধে| মেঘের ঘনঘটার। মাঝে বিদ্যুতের ঝলকে সমগ্র কলিঙ্গদেশ কেঁপে ওঠে। দূরদিগন্তে মেঘের গম্ভীর আওয়াজের সঙ্গে শুরু হয় মুষলধারায় বৃষ্টি। কালো মেঘে চারদিক অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যাওয়ায় দিনরাত্রির পার্থক্যও বোঝা সম্ভব হয় না। কলিঙ্গবাসীর সাত দিন একটানা প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে তারা সূর্যের আলো দেখতে পায় না।
প্রতিটি প্রশ্নের মান -৫ :
1."প্রলয় গগিয়া প্রজা ভাবয়ে বিষাদ।"-কী দেখে প্রজাদের প্রলয় মনে হয়েছিল? এই প্রলয়ের ফলে কী হয়েছিল?
উত্তরঃ মুকুন্দ চক্রবর্তীর লেখা 'কলিঙ্গদেশে ঝড়বৃষ্টি' নামক কাব্যাংশে কলিঙ্গদেশের আকাশ মেঘে ঢেকে যায়। উত্তর-পূর্ব কোণে মেঘের সঙ্গে দেখা দেয় বিদ্যুৎচমক | চারদিকে মুশলধারায় বৃষ্টি শুরু হয়। এইসব দেখেই প্রজাদের মনে প্রলয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়। কলিঙ্গের আকাশে ঈশান কোণে, মেঘ জমা হয়। ঘনঘন বিদ্যুতের ঝলকানি দেখা যায়। দূরদিগন্তে মেঘের গম্ভীর আওয়াজের সঙ্গে শুরু হয় মুশলধারায় বৃষ্টি। বিপদের আশঙ্কায় প্রজারা ঘর ছেড়ে দ্রুত পালাতে থাকে । ঝড়ের দাপটে শস্যখেত এবং সবুজ গাছপালা নষ্ট হয়ে যায়। আটটি দিকের আটটি হাতি যেন বৃষ্টিধারায় সব ভাসিয়ে নিয়ে যেতে চায়। প্রবল বৃষ্টিতে পথঘাট জলে ডুবে যায় | ঘোর অন্ধকারে দিনরাত্রির পার্থক্য মুছে যায়। জলমগ্ন রাস্তায় সাপ ভেসে বেড়াতে থাকে। ভীত প্রজারা এই ভয়াবহ দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে ঋষি জৈমিনিকে স্মরণ করতে থাকে| সাত দিন ধরে একটানা বৃষ্টির ফলে কৃষিকাজ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ঘরবাড়িও নষ্ট হয়ে যায়। ভাদ্র মাসের তালের মতো বড়ো আকারের শিল ঘরের চাল ভেদ করেপড়তে থাকে। দেবীর আদেশে সমস্ত নদনদী কলি দিকে ছুটে আসে দেবীর আদেশে | পর্বতের মতো উঁচু ঢেউয়ের আঘাতে বাড়িঘর ভেঙে পড়ে। দেবী চণ্ডীর আদেশে সৃষ্ট এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে অসহায়, ভীত প্রজারা বিপদের আশঙ্কায় অবশেষে কলিঙ্গ ত্যাগ করে চলে যায়।
No comments:
Post a Comment