উপনিবেশিক শাসনের প্রতিক্রিয়া সহযোগিতা ও বিদ্রোহ অষ্টম শ্রেনীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় | class 8 5th chapter history questions answers | - Studing School

Fresh Topics

Monday, April 3, 2023

উপনিবেশিক শাসনের প্রতিক্রিয়া সহযোগিতা ও বিদ্রোহ অষ্টম শ্রেনীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় | class 8 5th chapter history questions answers |

 উপনিবেশিক শাসনের প্রতিক্রিয়া সহযোগিতা ও বিদ্রোহ অষ্টম শ্রেনীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় | class 8 5th chapter history questions answers

 




অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর প্রশ্নের মান:-১

এককথায় উত্তর :

1. কবে ভারতে গঙ্গাসাগরে শিশুকন্যা ভাসিয়ে দেওয়ার প্রথা নিষিদ্ধ হয় ?

 উত্তর:-  ১৮০৩ খ্রিস্টাব্দে ভারতে গঙ্গাসাগরে শিশুকন্য ভাসিয়ে দেওয়ার প্রথা নিষিদ্ধ হয়।


 2. কোন্ আইন দ্বারা সতীদাহ প্রথার অবসান ঘটে ?

উত্তর:-  সপ্তদশ বিধি আইন দ্বারা সতীদাহ প্রথার অবসান ঘটে


 3. কত খ্রিস্টাব্দে সতীদাহপ্রথা বিরোধী আইন ঘোষিত হয় ? 

উত্তর:-  ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে সতীদাহপ্রথা বিরোধী আইন ঘোষিত হয়।


4. কে আইন করে সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ করেন ? 

উত্তর:- ভারতের বড়োলাট লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক আইন করে সতীদাহপ্রথা নিষিদ্ধ করেন।


5. কোন্ আইন দ্বারা বিধবাবিবাহ আইন বলবৎ হয় ? 

উত্তর:-  পঞ্চদশ বিধি আইন দ্বারা বিধবাবিবাহ আইন বলবৎ হয়


6. কত খ্রিস্টাব্দে বিধবাবিবাহ আইন বলবৎ হয় ?

 উত্তর:- ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে বিধবাবিবাহ আইন বলবৎ হয়।


7. ভারতের প্রথম কোন্ বিধবা নারী পুনরায় বিবাহ করেন ?

উত্তর :-  ভারতের প্রথম বিধবা নারী কালীমতি দেবী পুনরায় বিবাহ করেন।


৪. কার অনুগামীরা ইয়ং বেঙ্গল গোষ্ঠী নামে পরিচিত ? 

উত্তর:-  ডিরোজিয়োর অনুগামীরা ইয়ং বেঙ্গল গোষ্ঠী নামে পরিচিত। 


9. প্রার্থনা সমাজ কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ?

উত্তর:-  আত্মারাম পান্ডুরঙ্গ প্রার্থনা সমাজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। 


10. বীরসালিঙ্গম পান্তুলু কোন আন্দোলনের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন ?

 উত্তর:-  বীরসালিঙ্গম পান্তুলু ব্রাত্ম আন্দোলনের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন।


11. মহারাষ্ট্রে প্রার্থনা সমাজ কবে গড়ে ওঠ ?

 উত্তর:- মহারাষ্ট্রে ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে প্রার্থনা সমাজ গড়ে ওঠে। 


12. মহারাষ্ট্রের সমাজসংস্কার আন্দোলনের উল্লেখযোগ্য 

ব্যক্তিত্ব কে ছিলেন ? 

উত্তর:-  জ্যোতিবা ফুলে মহারাষ্ট্রের সমাজসংস্কার আন্দোলনের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন।


13. গুলামগিরি গ্রন্থের লেখক কে ?

 উত্তর:- জ্যোতিবা ফুলে হলেন গুলামগিরি গ্রন্থের লেখক।


14. সত্যশোধক সমাজ কে গড়ে তোলেন ? 

উত্তর:-  জ্যোতিবা ফুলে সত্যশোধক সমাজ গড়ে তোলেন।


15. কে আত্মীয় সভা প্রতিষ্ঠা করেন ?


উত্তর:-  রাজা রামমোহন রায় আত্মীয় সভা প্রতিষ্ঠা করেন।


16. ব্রাক্ষ্মসভার প্রতিষ্ঠাতা কে ?

 উত্তর:- ব্রাহ্মসভার প্রতিষ্ঠাতা হলেন রাজা রামমোহন রায়।


17. ব্রাহ্মসভা কবে প্রতিষ্ঠিত হয় ? 

উত্তর:-  ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রাহ্মসভা প্রতিষ্ঠিত হয়।


18. নববিধান ব্রাত্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা কে ?

 উত্তর:- কেশবচন্দ্র সেন হলেন নববিধান ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা। 


19. কোন্ ব্রাত্ম নেতাকে মহর্ষি বলা হয় ?

 উত্তর:- ব্রাত্ম নেতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরকে মহর্ষি বলা হয়।


20. ব্রহ্মানন্দ উপাধিতে কে ভূষিত হন ?

 উত্তর6:-  কেশবচন্দ্র সেন ব্রহ্মানন্দ উপাধিতে ভূষিত হন।


21. 'তিন আইন' কবে পাস হয় ?

 উত্তর:-  ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে 'তিন আইন' পাস হয়।


22. বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী কোন্ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ?

উত্তর:- বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী ব্রাত্ম আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

23. কত খ্রিস্টাব্দে আত্মীয় সভা প্রতিষ্ঠিত হয়?

উত্তর:-১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে আত্মীয় সভা প্রতিষ্ঠিত হয়


24. আর্য সমাজ কে প্রাতষ্ঠা করেন ? 

উত্তর:-  স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী আর্য সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন।


25. আর্য সমাজ কবে প্রতিষ্ঠিত  হয় ? 

উত্তর:- ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে আর্য সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়।


26. ভারতে শুদ্ধি আন্দোলনের জনক কে ?

 উত্তর:- দয়ানন্দ সরস্বতী হলেন ভারতে শুদ্ধি আন্দোলনের জনক।


27. Go back to the Vedas' কথাটি কে বলেছিলেন ?

 উত্তর:-  স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছিলেন।


 28. সত্যার্থ প্রকাশ গ্রন্থটি কে রচনা করেন ?

উত্তর:- সত্যার্থ প্রকাশ গ্রন্থটি রচনা করেন স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী।


29. ভারতে থিয়োসফিক্যাল সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা কে ? 

উত্তর:-  ব্লাভাটস্কি/কর্নেল ওলকট ভারতে থিয়োসফিক্যাল সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা।


30. জাতীয় গৌরব সম্পাদনী সভা কে প্রতিষ্ঠা করেন ?

 উত্তর:-  রাজনারায়ণ বসু জাতীয় গৌরব সম্পাদনী সভা প্রতিষ্ঠা করেন।


31. জাতীয় মেলা কে প্রতিষ্ঠা করেন ?

উত্তর:- নবগোপাল মিত্র জাতীয় মেলা প্রতিষ্ঠা করেন


32. রামকৃষ্ণের শিষ্য কে ছিলেন ? 

উত্তর:-  স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন রামকৃষ্ণের শিষ্য ।


33. স্বামী বিবেকানন্দ কত খ্রিস্টাব্দে শিকাগো ধর্মসম্মেলনে যোগদান করেন ?

উত্তর:-  ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে স্বামী বিবেকানন্দ শিকাগো ধর্মসম্মেলনে যোগদান করেন।


34. আলিগড় অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল কলেজ কে প্রতিষ্ঠা করেন ?

 উত্তর:- স্যার সৈয়দ আহমদ খান আলিগড় অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।


35. মহামেডান লিটেরারি সোসাইটি কবে প্রতিষ্ঠি তহয় ?

উত্তর:-  ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে মহামেডান লিটেরারি সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়।


36. আলিগড় আন্দোলনের জনক কে ? 

উত্তর:-  আলিগড় আন্দোলনের জনক স্যার সৈয়দ আহমদ খান।।


37. কত সালে আলিগড় অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়?

উত্তর:- ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দেআলিগড় অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল কলেজ

প্রতিষ্ঠিত হয়।


38. থিয়োডোর বেক কে ছিলেন ?

 উত্তর:- থিয়োডোর বেক ছিলেন আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম অধ্যক্ষ।


39. The Indian Musalmans গ্রন্থের লেখক কে ?

উত্তর:- উইলিয়াম হান্টার।


40. 'দিকু' কাদের বলা হত ? 

উত্তর:-  সাঁওতাল এলাকায় বহিরাগতদের 'দিকু' বলা হত ।


41. সাঁওতাল বিদ্রোহের অন্য নাম কী ? 

উত্তর:- সাঁওতাল বিদ্রোহের অন্য নাম হুল বিদ্রোহ।


42. সাঁওতাল বিদ্রোহের সূচনা হয় কবে ? 

উত্তর:-  ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে সাঁওতাল বিদ্রোহের সূচনা হয়।


43. হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন ?

 উত্তর:-  হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন হরিশচন্দ্র মুখার্জি।


44. মোপালা বিদ্রোহ কোথায় হয়েছিল ?

 উত্তর:-  দক্ষিণ ভারতের মালাবার অঞ্চলে মোপালা বিদ্রোহ হয়েছিল।


45. 'ফরাজি' কথার অর্থ কী ?

 উত্তর:-  ‘ফরাজি' কথার অর্থ হল ইসলাম নির্দিষ্ট বাধ্যতামূলক কর্তব্য।


46. দুদু মিয়া কে ছিলেন ?

 উত্তর:- দুদু মিয়া ছিলেন বাংলায় ফরাজি আন্দোলনের নেতা।

 47. বাংলায় ফরাজি আন্দোলন কে গড়ে তোলেন ?

 উত্তর:- হাজি শরিয়তউল্লাহ বাংলায় ফরাজি আন্দোলন গড়ে তোলেন।



 47. বাংলায় ফরাজি আন্দোলন কে গড়ে তোলেন ?

 উত্তর:- হাজি শরিয়তউল্লাহ বাংলায় ফরাজি আন্দোলন গড়ে তোলেন।


48. জমির মালিক ঈশ্বর শ্লোগানটি কোন্ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত।

উত্তর:-  জমির মালিক ঈশ্বর শ্লোগানটি ফরাজি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত।


49. মুন্ডা কথার অর্থ কী ?

উত্তর:-  মুণ্ডা কথার অর্থ নবজাগরণ।


50. মুণ্ডা বিদ্রোহের নেতা কে ছিলেন ? 

উত্তর:-  বিরসা মুণ্ডা ছিলেন মুণ্ডা বিদ্রোহের নেতা।


51. মুণ্ডা বিদ্রোহ কখন হয় ? 

উত্তর:-  ১৮৯৯-১৯০০ খ্রিস্টাব্দে মুণ্ডা বিদ্রোহ হয়।


52. উলগুলান কথার অর্থ কী ?

 উত্তর:- উলগুলান কথার অর্থ ভয়ংকর বিশৃঙ্খলা।


53. ওয়াহাবি আন্দোলনের সূচনা কোথায় হয় ?

 উত্তর:- আরবে ওয়াহাবি আন্দোলনের সূচনা হয় ।


 54. বাংলার ওয়াহাবি আন্দোলনের নেতা কে ছিলেন ?

 উত্তর:- বাংলার ওয়াহাবি আন্দোলনের নেতা ছিলেন তিতুমির।


55. বাঁশের কেল্লা কে নির্মাণ করেন ?

 উত্তর:- তিতুমির বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন।


56. তিতুমির কোথায় বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেছিলেন ?

 উত্তর:- উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার বারাসাতে তিতুমির বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেছিলেন।


57. ‘বাংলার ওয়াট টাইলার' বলা হত কাদের ? 

উত্তর:-  বিষ্ণুচরণ বিশ্বাস ও দিগম্বর বিশ্বাসকে ‘বাংলার ওয়াট টাইলার' বলা হত ।


58. The Blue Mutiny গ্রন্থের লেখক কে ? 

উত্তর:-  The Blue Mutiny গ্রন্থের লেখক ব্লেয়ার ক্লিং।


59. সিপাহি বিদ্রোহ প্রথম কোথায় শুরু হয় ? 

উত্তর:-  সিপাহি বিদ্রোহ প্রথম শুরু হয় ব্যারাকপুরে।


60. সিপাহি বিদ্রোহের সূচনা হয় কবে? 

উত্তর:-  ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯ মার্চ সিপাহি বিদ্রোহের সূচনা হ


61. সিপাহি বিদ্রোহের প্রথম শহিদ কে হন? 

উত্তর:-  সিপাহি বিদ্রোহের প্রথম শহিদ হন মঙ্গল পাণ্ডে।



62. ‘ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধ' কোন্ বিদ্রোহকে বলা হয়। 

 উত্তর:-  সিপাহি বিদ্রোহকে ‘ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধ” বলা হয়।


63. সিপাহি বিদ্রোহকে কে ‘ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধ বলেছেন ?

 উত্তর:- বিনায়ক দামোদর সাভারকর সিপাহি বিদ্রোহকে ‘ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধ' বলেছেন।


64. সিপাহি বিদ্রোহের সময় ও পরে ভারতের বড়োলাট কে ছিলেন ?

 উত্তর:- লর্ড ক্যানিং সিপাহি বিদ্রোহের সময় ও পরে ভারতের বড়োলাট ছিলেন।


65. শেষ মোগল সম্রাট কে ছিলেন ?

উত্তর:- শেষ মোগল সম্রাট ছিলেন দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ।


66. ভারতের প্রথম ভাইসরয় কে ছিলেন ?

 উত্তর:-  লর্ড ক্যানিং ভারতের প্রথম ভাইসরয় ছিলেন।


সত্য মিথ্যা নির্ণয় প্রশ্নের মান -১

  1. কংগ্রেসের মধ্যে কোনো গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছিল না। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)
  2. Ans. মিথ্যা

    1. অরবিন্দ ঘোষ ছিলেন _______ (যুগান্তর/বন্দে মাতরম/হিন্দু পেট্রিয়ট) পত্রিকার সম্পাদক। (শূন্যস্থান পূরন করো)

    Ans. বন্দে মাতরম।

    1. বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত কার্যকরী হয় ১৬ অক্টোবর, ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)

    Ans. সত্য

  1. ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকি কিংসফোর্ডকে হত্যা করতে গিয়েছিলেন। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)

Answer : সত্য

  1. লর্ড কার্জনের বাংলা বিভাজনের প্রধান কারণ কী ছিল? (এক কথায় উত্তর দাও)

Answer : ব্রিটিশের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ বাংলা ও বাঙালিদের রাজনৈতিক বিরোধিতার সম্ভাবনা দুর্বল করে দেওয়াই ছিল লর্ড কার্জনের বাংলা বিভাজনের প্রধান উদ্দেশ্য।

  1. লালা লাজপত রায় ছিলেন একজন _______ (প্রার্থনাসমাজি/আর্যসমাজি/আর্য বান্ধবসমাজি)। (শূন্যস্থান পূরন করো)

Answer : আর্যসমাজি।

  1. মর্লে-মিন্টো সংস্কার প্রস্তাবকে বৈপ্লবিক কাজকর্মের ফলাফল হিসেবে ভাবা হয়। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)

Answer : সত্য

  1. ভারতসভার প্রথম সর্বভারতীয় কলকাতা সম্মেলনের সভাপতি ছিলেন রামতনু লাহিড়ি। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)
  2. জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা হয় _______ (১৮৮২/১৮৮৩/১৮৮৫) খ্রিস্টাব্দে। (শূন্যস্থান পূরন করো)

Answer : ১৮৮৫ ।

  1. লাল-বাল-পাল কাদের বলা হত? (এক কথায় উত্তর দাও)

Answer : চরমপন্থী নেতা লালা লাজপত রাই, বালগঙ্গাধর তিলক এবং বিপিনচন্দ্র পালকে একসঙ্গে লাল-বাল-পাল বলা হত।

  1. ইলবার্ট বিল প্রবর্তন করেন _______ । (শূন্যস্থান পূরন করো)

Answer : সি পি ইলবার্ট।

  1. ভারতের সশস্ত্র বিপ্লববাদের জনক বলা হয় বাসুদেও বলবন্ত ফাদকে-কে। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)

Answer : সত্য

  1. লর্ড লিটন প্রণীত একটি দমনমূলক আইনের নাম লেখো। (এক কথায় উত্তর দাও)

Answer : লর্ড লিটন প্রণীত একটি দমনমূলক আইনের নাম দেশীয় মুদ্রণ আইন।


  1. কার উদ্যোগে শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠিত হয়? (এক কথায় উত্তর দাও)

Answer : রবীন্দ্রনাথের উদ্যোগে শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠিত হয়।

  1. রিজলি কমিশনের সুপারিশ মেনে কার্জন বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)

Answer : সত্য

  1. বঙ্গভঙ্গ রদ হয় ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের ১২ ডিসেম্বর। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)

Answer : সত্য

  1. গদর পার্টির প্রতিষ্ঠা করেন লালা লাজপত রায়। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)

Answer : মিথ্যা

  1. ইলবার্ট কে ছিলেন? (এক কথায় উত্তর দাও)

Answer : ইলবার্ট ছিলেন গভর্নর জেনারেল রিপনের আইনসভার সদস্য, যার নাম সি পি ইলবার্ট।

  1. বিপিনচন্দ্র পাল ––––––– পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। (শূন্যস্থান পূরন করো)

Answer : বন্দেমাতরম ।

  1. ভারতের সশস্ত্র বিপ্লববাদের জনক বলা হয় বাসুদেও বলবন্ত ফাদকে-কে। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)

Answer : সত্য

  1. স্বদেশি আন্দোলনের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল _______ (জাতীয় কার্যকলাপের দ্বারা স্বনির্ভরতা অর্জন করা/১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের বঙ্গভঙ্গের প্রতিরোধ করা/হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য স্থাপন করা)। (শূন্যস্থান পূরন করো)

Answer : ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের প্রতিরোধ করা।

  1. কংগ্রেসের মধ্যে কোনো গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছিল না। (সত্য/মিথ্যা নির্বাচন করো)

Answer : মিথ্যা

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :

১. সংবাদপত্র ও জনমত গঠন সম্পর্কে কী জানা যায় ? 

উঃ । ভারতীয় জনমত গঠনে সংবাদপত্রের ভূমিকা সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ছিল । ১৭৮০ সালে ইংরেজ ব্যবসায়ী জেমস্ অগাস্টাস হিকি ' বেঙ্গল গেজেট ' নামে প্রথম একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন । শ্রীরামপুরের মিশনারি মার্শম্যানের সম্পাদনায় ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে বাংলা ভাষায় প্রথম মাসিক পত্রিকা ‘ দিগ্‌দর্শন ' ও সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘ সমাচার দর্পণ ' প্রকাশিত হয় । এরা প্রত্যেকেই নির্ভীক ও নিরপেক্ষভাবে সংবাদ পরিবেশ করতে থাকেন । ফলে অনেকেই কোম্পানি প্রশাসনের বিরাগভাজন হন । ভারতীয় সমাজ সংস্কারকদের অনেকেই বিভিন্ন সংবাদপত্র প্রকাশ ও সম্পাদনার কাজে নিযুক্ত ছিলেন । 


২.বিধবা বিবাহ প্রবর্তন বিষয়ে বিদ্যাসাগরের যুক্তি কী ছিল ? 

উঃ । ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তাঁর ' বিধবা বিবাহ ' রচনাতে বলেন — বিধবা বিবাহ প্রচলিত না থাকাতে অনেক অসুবিধা হচ্ছে — এটা সবাই বুঝতে পারছেন । অনেকে তাদের নিজের মেয়ে , বোন এদের বিবাহ দিতে রাজি । আছেন কিন্তু এগোতে সাহস করছেন না । কলিযুগে বিধবা বিবাহ যে সর্বপ্রকারেই কর্তব্য কর্ম , সে বিষয়ে আর কোন সংশয় অথবা আপত্তি হইতে পারে না । তিনি আরও বলেন যে , এই ব্যবহার প্রচলিত হওয়া একান্ত আবশ্যক । 


৩  নারী শিক্ষা ও পণ্ডিতা রমাবাঈ সম্পর্কে যা জানো লেখো । 

উঃ । ঊনিশ শতকে মেয়েদের শিক্ষাকে ছড়িয়ে দিতে বেশ কিছু মহিলাও অগ্রসর হয়েছিলেন । এদের মধ্যে পশ্চিম ভারতে পণ্ডিতা রমাবাঈ ছিলেন অগ্রগণ্য । ব্রাহ্ম পরিবারের মেয়ে হয়েও তিনি একজন শুদ্রকে বিয়ে করেছিলেন । পরে বিধবা অবস্থায় নিজের মেয়েকে নিয়ে ইংল্যান্ডে গিয়ে ডাক্তারি পড়েন । বিধবা মেয়েদের জন্য আশ্রম তৈরি করেন । তবে রক্ষণশীলদের অনেকেই রমাবাঈয়ের উদ্যে সমালোচনা করেছিলেন । এছাড়া মাদ্রাজে ভগিনী শুভলক্ষী ও বাংলায় বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বিশেষ উল্লেখযোগ্য । উনিশ শতকের দ্বিতীয়ভাগে মেয়েদের শিক্ষার আওতায় আনার জন্য ব্রিটিশ প্রশাসন বিভিন্ন অনুদান দেওয়ার উদ্যোগ নেন ।


৪. জ্যোডিরাও ফুলে সম্পর্কে যা জানো লেখো । 

উঃ । মহারাষ্ট্রের সমাজ সংস্কারের ক্ষেত্রে জ্যোতিরাও ফুলে ও তাঁর স্ত্রী সাবিত্রী বাঈ - এর অবদানও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ । ব্রাক্ষ্মণদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে নিম্নবর্গীয় মানুষদের সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য তাঁরা লড়াই করেন । ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে পুনায় তাঁরা নারীশিক্ষার প্রসারে একটি বিদ্যালয় স্থাপন করেন । বিধবা বিবাহ প্রচলনে তাঁর ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য । ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে তাঁর প্রতিষ্ঠিত ' সত্যশোধক সমাজ ' নীচুতলার মানুষদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় লড়াই করত । তবে জ্যোতিরাও ফুলের উদ্যোগ সত্ত্বেও মহারাষ্ট্রে বিধবা বিবাহ আন্দোলন বিশেষ সফল হয়নি । 


৫. স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী ও আর্য সমাজ - এর ভূমিকার কথা লেখো । 

উঃ । ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী আর্য সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন । সমস্ত ধর্মগ্রন্থের মধ্যে বেদকেই চূড়ান্ত বলে তিনি মনে করতেন । তাঁর মতে বেদের মধ্যে সমস্ত জ্ঞান ও বিজ্ঞানের কথা নিহিত রয়েছে । হিন্দুধর্মের আচার মূর্তিপুজো , পুরোহিতদের প্রাধান্য ও বাল্যবিবাহ প্রভৃতি বিষয়গুলির তিনি সমালোচনা করেন । তিনি বিধবা বিবাহ ও নারী শিক্ষারও সমর্থক ছিলেন । পাঞ্জাব ও উত্তর - পশ্চিম ভারতে আর্য সমাজ জনপ্রিয় ছিল । কিন্তু দয়ানন্দের মৃত্যুর পর আর্য সমাজ আন্দোলন উগ্র হিন্দুরূপ ধারণ করতে থাকে । 


৬. সাঁওতাল বিদ্রোহ ও হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার ভূমিকার কথা আলোচনা করো । 

উঃ । শিক্ষিত হিন্দু বাঙালিদের অনেকেই সাঁওতাল বিদ্রোহের বিরোধিতা করেন । এর ব্যতিক্রম ছিলেন হিন্দু প্যাট্রিয়ট সংবাদপত্র এর সম্পাদক হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় । তিনি বুঝতে পেরেছিলেন শান্ত ও সৎ সাঁওতালদের ওপর যে অর্থনৈতিক শোষণ চলেছে তা তাদের বিদ্রোহের পথে যেতে বাধ্য করেছে । সাঁওতালরা শুধু চায় নিজেদের জঙ্গলে ও উপত্যকার মধ্যে স্বাধীনভাবে জীবনযাপনের অধিকার । হরিশচন্দ্র আরও বলেন যারা তাদের উপর অত্যাচার করেছে তাদের শাস্তি হওয়া উচিত । সাঁওতালদের শাস্তি প্রাপ্য নয় । 



৭. মালাবারের মোপালা বিদ্রোহের বিবরণ দাও ।

 উঃ । দক্ষিণ ভারতের মালাবার অঞ্চলে কৃষকরা ঔপনিবেশিক প্রশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন সেগুলির মধ্যে অন্যতম হলো মোপালা বিদ্রোহ । মোপালাদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন কৃষি শ্রমিক , ছোটো ব্যবসায়ী ও জেলে । ব্রিটিশরা মালাবার দখল করার পর তাদের উপর রাজস্বের বোঝা ও বেআইনি কর চাপান হয় , পাশাপাশি জমিতে কৃষকদের অধিকার অস্বীকার করা হয় ফলে মালাবার অঞ্চলে একের পর এক বিদ্রোহ শুরু হয় । এই বিদ্রোহগুলি দমন করার জন্য ব্রিটিশ প্রশাসন সশস্ত্র বাহিনী ব্যবহার করেছিল । 


৮. ফরাজি আন্দোলন সম্পর্কে কী জানা যায় ? 

উঃ । পূর্ব বাংলার ফরিদপুর অঞ্চলে হাজি শরিয়তউল্লা গরিব চাষিদের নিয়ে ফরাজি আন্দোলন গড়ে তোলেন । বারাসত্ত বিদ্রোহে মতোই ফরাজিরা জমিদার , নীলকর ও ঔপনিবেশিক প্রশাসনের বিরোধিতা করেন । ফরাজি মতামতের প্রসারের ফলে স্থানীয় জমিদারেরা ভয় পেয়েছিল । এই আন্দোলন ঊনবিংশ শতকের শেষ দিক পর্যন্ত চলেছিল । 


৯. মুক্তা উলগুলান কী ?

 উঃ । বিরসা মুন্ডার নেতৃত্বে মুন্ডা উলগুলান বা মুন্ডা বিদ্রোহ ছিল অন্যতম উপজাতীয় কৃষক বিদ্রোহ । এটি শুরু হয় , ( ১৮৯৯–১৯০০ খ্রিঃ ) । মুন্ডাদের জমি ধীরে ধীরে বহিরাগত বা দিথুদের হাতে চলে যায় । এছাড়া জমিদার , মহাজন , খ্রিস্টান মিশনারি ও ঔপনিবেশিক সরকারের প্রতি মুন্ডা কৃষকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে । মুন্ডারা বিশ্বাস করত বিরসা নানা রকম অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী । তাই মুন্ডা উলগুলানের অন্যতম লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটিয়ে বিরসার শাসন প্রতিষ্ঠা করা । ঔপনিবেশিক প্রশাসনের দমন পীড়নের ফলে মুন্ডা উলগুলান পরাস্ত হয় ।


১০. নীলবিদ্রোহ ও হিন্দু প্যাট্রিয়ট সম্পর্কে যা জানো লেখো । উঃ । বাংলার নীল বিদ্রোহের প্রতি হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকা ও তার সম্পাদক হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় নীলকরদের বিরুদ্ধে চাষিদের পক্ষ নিয়ে লেখা শুরু করেন । শিশিরকুমার ঘোষ ও মনমোহন ঘোষকে হরিশচন্দ্র নিয়োগ করেন খবরাখবর সংগ্রহের জন্য । ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে হরিশচন্দ্র লেখেন যে , বাংলায় নীলচায় একটি সংগঠিত জুয়াচুরি ও নিপীড়ন ব্যবস্থা মাত্র । তিনি লেখেন যে চাষি একবার নীলচায় করেছে তার থেকে বাঁচার তার আর কোনো উপায় নেই । নীলকর কোনো নীলচাষিকেই ন্যায্য দাম দেয় না । বস্তুত , হরিশচন্দ্রের উদ্যোগেই নীল বিদ্রোহের খবরাখবর বাংলায় শিক্ষিত জনগনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল । 


১১. ' গোরে আয়ে ' — এই ঘটনাটি কী ছিল ?

 উঃ । ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মে মাসের ১০ তারিখে বিকেলের শেষে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সিপাহিরা উত্তর প্রদেশের মিরাটের সেনা ছাউনির কাছে বাজারে বসে ৮৫ জন সিপাহিকে আটক করা নিয়ে আলোচনা করছিল । তারা এনফিল্ড রাইফেল ব্যবহার করতে চায়নি । ওই সময়ে কোম্পানির শ্বেতাঙ্গ সেনারা প্যারেড করে সন্ধ্যা প্রার্থনার জন্য চার্চে যাচ্ছিল । একটি ছোটো ছেলে বাজারের দিকে ' গোরে আয়ে গোরে আয়ে ' - বলে দৌড়ে এসে ভুল খবর দেয় যে শ্বেতাঙ্গরা সিপাহিদের বন্দি করতে আসছে । সঙ্গে সঙ্গে বিদ্রোহ শুরু হয় । সিপাহিরা গোরা সেনাদের বন্দি করে হত্যা করে । মিরাটে সিপাহি বিদ্রোহ শুরু হয়ে যায় । 


১২. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ ও এক বাঙালি সরকারি চাকুরের চোখে । 

উঃ । একদল সৈন্য চিৎকার করে বলল গোরে আয়ে , গোরে আয়ে , সৈন্যরা চারিদিকে ভয় পেয়ে দৌড়ে প্যারেড ভূমির দিকে চলে গেল । গোরা সৈন্য এসেছে শুনে আনন্দ হচ্ছিল । কিন্তু হঠাৎ খবর পাওয়া গেল গোরা সৈন্য আসেনি , গোরা আক্রমণ সিপাহিদের কাল্পনিক ভয়মাত্র , এই উদ্ধৃত অংশটি দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় - এর ‘ বিদ্রোহে বাঙালী ' গ্রন্থটি থেকে নেওয়া হয়েছে । 

১৩. সিপাহি বিদ্রোহ না জাতীয় বিদ্রোহ তথ্য দিয়ে আলোচনা করো ? 

উঃ । ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের চরিত্র নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক রয়েছে । এই বিদ্রোহ কি নিছকই সিপাহি বিদ্রোহ না জাতীয় বিদ্রোহ । বিদ্রোহের সময়ই একটি সংবাদপত্রের সাংবাদিক হিসেবে কার্ল মার্কস লিখেছিলেন যাকে সেনা বিদ্রোহ মনে করা হচ্ছে তা আদতে ‘ জাতীয় বিদ্রোহ । ধীরে ধীরে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে জাতীয়তাবাদীরা “ ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধ ” বলে ব্যাখ্যা করতে থাকেন । যদিও তার মধ্যে কিছুটা অবজ্ঞা ছিল । তবে সিপাহিরা পুরানো মুঘল শাসনব্যবস্থাকে ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন । ১৮৫৭ - র বিদ্রোহীদের মধ্যে জাতীয়তাবাদের কোনো ধারণা ছিল না । বিদ্রোহী নেতারা অনেকেই একে অন্যের বিরুদ্ধাচরণও করেন । তবে কেবল সিপাহি বিদ্রোহ । বললে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের সামগ্রিক রূপ ধরা পড়ে না । 


১৪.বাহাদুর শাহ জাফর - এর বিচার কীভাবে করা হয়েছিল ? 

উঃ । ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৭ জানুয়ারি দেওয়ানি - ই খাসে শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহের বিচার শুরু হয় । বিচারের আগে ৮২ বছরের বৃদ্ধ সম্রাটকে দেড় ঘণ্টা বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় । তারপর একটা সাধারণ আসনে তাঁকে বসতে দেওয়া হয় । দীর্ঘক্ষণ বিচার চলার সময় তার সাক্ষীদেরও জেরার সুযোগ মুঘল সম্রাটকে দেওয়া হয় নি । ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ২৯ মার্চ বৃদ্ধ সম্রাটকে দোষী ঘোষণা করে বার্মার রেঙ্গুনে নির্বাসন দেওয়া হয় । 


১৫. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ : কলিকাতার অভিজ্ঞতা : 

উঃ । “ ১৮৫৭ সালের জুলাই মাসে রব উঠল সিপাহিরা আসছে তারা সব ইংরেজদের হত্যা করবে । ভীত হয়ে শ্বেতাঙ্গ সিপাহিরা লর্ড ক্যানিংকে পরামর্শ দিলেন — কালাদের অস্ত্র হরণ করো , কঠিন সামরিক আইন জারি করো । কিন্তু ক্যানিং এইসব কথায় কান দিলেন না । রাতে আটটার পর গড়ের মাঠ দিয়ে আসতে হলে পদে পদে অস্ত্রধারী প্রহরী জিজ্ঞাসা করিত “ হুকুমদার ” অর্থাৎ তাহা হইলেই বলিতে হইত ‘ রাইয়ত হ্যায় ' অর্থাৎ আমি প্রজা । সব পরীক্ষা হলে তবে ছাড় পাওয়া যেত । এইরূপে সকল শ্রেণির মধ্যে একটা ভয় ও আতঙ্ক জন্মিয়েছিল ।


১৬. তিতুমির কীভাবে তাঁর আন্দোলন সংগঠিত করেছিলেন ? 

উঃ । তিতুমির ওয়াহাবি মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বারাসাত নারকেলবেড়িয়া অঞ্চলে ওয়াহাবি আন্দোলন শুরু করেন । তিনি স্থানীয় জমিদার , নীলকর ও ব্রিটিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠিত করেন । বারাসাত অঞ্চলে একটি বাঁশের কেল্লা বানিয়ে তিতুমির নিজে বাদশাহ উপাধি নেন এবং ঘোষণা করেন কোম্পানি সরকারের শাসন শেষ হয়ে আসছে । ১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে বারাসাত বিদ্রোহ দমন করার জন্য ব্রিটিশ কাহিনী কামান দেগে বাঁশের কেল্লা ধ্বংস করে দেয় ।


 ১৭. ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক প্রশাসনের সামাজিক সংস্কারে ভারতীয় সমাজ উদ্যোগী হয়েছিলেন কেন ? 

উঃ । ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক প্রশাসন ভারতের সমাজ ও শিক্ষা সংস্কারে যে সমস্ত উদ্যোগ নেয় তাতে অনেক ভারতীয়ই উদ্যোগী হয়েছিলেন । এইসব ভারতীয়দের অধিকাংশই ব্রিটিশ কোম্পানির চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ও ইংরেজি শিক্ষার সুফল পেয়েছিলেন । এদের অনেকেই কোম্পানির অর্থনৈতিক কার্যকলাপের সহযোগী ছিলেন । ফলে ঊনবিংশ শতকের ভারতের সমাজ ও শিক্ষা সংস্কারকরা ব্রিটিশ শাসনের প্রতি আস্থাবান ছিলেন এবং তাঁরা মনে করতেন যে ব্রিটিশ শাসনেই দেশীয় সমাজ ও সংস্কৃতির উন্নয়ন সম্ভব ।


 ১৮. বাংলার শিক্ষা সংস্কারে ডিরোজিও এবং নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী কী ভূমিকা নিয়েছিলেন ?

 উঃ । হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও হিন্দু কলেজের একজন শিক্ষক ছিলেন । তিনি তাঁর ছাত্রদের মধ্যে স্বাধীন চিন্তাভাবনার বিকাশ ঘটিয়েছিলেন । তাঁর ছাত্ররা নব্যবঙ্গ বা ইয়ং বেঙ্গল নামে পরিচিত । ছিল । ব্রিটিশ শাসন ও ইংরেজি শিক্ষার প্রতি নব্যবঙ্গ গোষ্ঠীর পূর্ণ সমর্থন ছিল । তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক প্রথা , জাতপাত , বাল্যবিবাহ , বহুবিবাহ প্রভৃতি প্রথার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন ।

১৯. রাজা রামমোহনের পরে কারা ব্রাহ্মধর্মকে সংগঠিত করেছিলেন ? 

উঃ । রাজা রামমোহনের পরবর্তীকালে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রাহ্ম আন্দোলনকে সংগঠিত করেন । ১৮৬০ এর দশকে কেশবচন্দ্র সেন ও বিজয়কৃয় গোস্বামীর উদ্যোগে কলকাত শিক্ষিত সমাজের গন্ডি পার হয়ে ব্রাহ্ম আন্দোলন বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ে । বৈষ্ণবধর্মের জনপ্রিয় ঐতিহ্য ও ব্রাহ্ম ধারণার মধ্যে বিজয়কৃর এক সংযোগ তৈরি করেছিলেন । কিন্তু আদতে সমাজে উচ্চবর্ণের মধ্যেই ব্রাহ্ম আন্দোলন সীমিত ছিল ।


 ২০. সমাজ সংস্কারকরূপে বীরেশলিঙ্গম পাণ্ডুলুর ভূমিকা আলোচনা করো । 

উঃ । ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে অস্ত্রপ্রদেশের এক রক্ষণশীল পরিবারে বীরেশলিঙ্গম পাণ্ডুলু জন্মগ্রহণ করেন । তিনি প্রথাগত শিক্ষা ছাড়াও ইংরেজি ভাষায় জ্ঞানার্জন করেন । পাণ্ডুলু বাংলার ব্রাহ্ম আন্দোলন দ্বারা প্রভাবিত হন । মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিতে পাণ্ডুলুর নেতৃত্বে বিধবা বিবাহ আন্দোলন । শুরু হয় । বীরেশলিঙ্গম মূর্তিপুজো ; অস্পৃশ্যতা , জাতিভেদ ও বাল্যবিবাহ প্রভৃতির বিরোধিতাকরেন । তিনি ‘ বিবেকবোধিনী ’ ও ‘ সাহিত্যবোধিনী ' নামে পত্রিকা প্রকাশ করেন । পাশাপাশি নারীশিক্ষা ও বিধবা বিবাহের পক্ষে তিনি সওয়াল করেন । তিনি দক্ষিণ ভারতে প্রার্থনা সমাজের সংস্কার আন্দোলনকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন । 


২১. সংস্কার আন্দোলনের ক্ষেত্রে হিন্দু পুনরুজ্জীবনবাদের ভূমিকা কী ছিল ? 

উঃ । উনিশ শতকে বাংলা তথা ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত এবং হিন্দুধর্মের প্রতি আস্থাশীল একদল মানুষ ও ভারতের অতীত ঐতিহ্যকে জাগরিত করতে হিন্দুধর্মের হৃত মর্যাদা ফিরিয়ে দিয়ে যে আন্দোলন সংঘটিত করেন তাকে হিন্দু পুনরুজ্জীবনবাদ বলা হয় । বাংলায় ব্রাহ্মনেতা রাজনারায়ণ বসু ও নবগোপাল মিত্রের সংস্কার আন্দোলন হিন্দু পুনরুজ্জীবনবাদে এক বিশেষ ভূমিকা নেয় । রাজনারায়ণ বসুর ' জাতীয় গৌরব সম্পাদনী সভা ' এবং নবগোপাল মিত্রের ' জাতীয় মেলা ’ এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা নেয় । জাতীয় মেলা পরে ‘ হিন্দুমেলা ' নামে পরিচিত হয় । হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতা ও দেশপ্রেমের আদর্শে মানুষকে উজ্জীবিত করা । 


২২. হিন্দু পুনরুজ্জীবনবাদী আন্দোলনে রামকৃষ্ণ ও স্বামী বিবেকানন্দের ভূমিকা আলোচনা করো । 

উঃ । রামকৃষ্ণ পরমহংস ও স্বামী বিবেকানন্দের নাম হিন্দু পুনরুজ্জীবনবাদী আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত । উনিশ শতকের চাকুরিজীবি , শহুরে শিক্ষিত মানুষের কাছে রামকৃষ্ণের এক বিশেষ আবেদন তৈরি হয়েছিল । ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে রামকৃষ্ণের শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ শিকাগো ধর্ম সম্মেলনে যোগদান করেন এবং সেখানে সহজভাষায় ভারতীয় দর্শন ও হিন্দু ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের চেষ্টা করেন । বিবেকানন্দ নারীর স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ছিলেন । 


২৩. ব্রিটিশ কোম্পানি কীভাবে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে দমন করেছিল ? 

উঃ । চূড়ান্ত দমন পীড়নের মধ্যে দিয়ে ব্রিটিশ কোম্পানি ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ দমন করতে থাকে । কোম্পানির সেনাবাহিনী ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের শেষে পুনরায় দিল্লি অধিকার করে নেয় । মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরকে বন্দি করে রেঙ্গুনে নির্বাসন দেওয়া হয় । বিদ্রোহীরা অসম যুদ্ধ চালাতে থাকেন , তাদের না ছিল যথেষ্ট সম্পদ না ছিল লোকবল । এছাড়া তাঁদের অস্ত্রশস্ত্র বা যোগাযোগ ব্যবস্থাও উন্নত ছিল না । কার্যত দিল্লি পুর্নদখল করে ব্রিটিশ কোম্পানি বিদ্রোহ অনেকটাই দমন করে ফেলেছিল । 

রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর :

 ১. ফরাজি ও ওয়াহাবি আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও । 

উঃ । ‘ ফরাজি ’ শব্দের অর্থ হলো ইসলাম ধর্মের আদর্শে বিশ্বাস । ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে হাজি শরিয়ত উল্লা ফরাজি নামে এক ধর্মীয় সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করেন । তিনি বলেন যে ব্রিটিশ শাসনে থাকা ভারতবর্ষ ধর্মপরায়ণ মুসলিমদের যোগ্য নয় । তিনি জমিদার ও নীলকর সাহেবেদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান । তিনি পূর্ববাংলার ফরিদপুর অঞ্চলে গরিব চাষিদের নিয়ে ফরাজি আন্দোলন গড়ে তোলেন । ধীরে ধীরে এই আন্দোলন ঢাকা , খুলনা ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে । শরিয়ত উল্লার মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র দুদু মিঞা এবং পরে তাঁর পুত্র নোয়া মিঞা ফরাজি আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন । ফরাজি মতামতের প্রসারের ফলে স্থানীয় জমিদারেরা ভয় পেয়েছিল । এই আন্দোলন প্রথমে ধর্মীয় আন্দোলন হিসেবে শুরু হলেও পরে তা রাজনৈতিক রূপ নেয় । ঊনবিংশ শতকের শেষদিক পর্যন্ত ফরাজি আন্দোলন চলেছিল । ‘ ওয়াহাবি ’ শব্দের অর্থ হলো নবজাগরণ । অষ্টদশ শতকে আব্দুল ওয়াহাব - এর নেতৃত্বে আরবে ওয়াহাবি আন্দোলনের সূচনা হয় । তাঁর পথ অনুকরণে ভারতে মুসলিম সপ্ত শাহ ওয়ালিউল্লাহ - র নেতৃত্বে ওয়াহাবি আন্দোলন গড়ে ওঠে । ভারতে প্রকৃতভাবে ওয়াহাবি আন্দোলন পরিচালনা করেন রায়বেরিলি অঞ্চলের সৈয়দ আহম্মদ নামের এক ব্যক্তি । তিনি ওয়াহাবিদের ব্রিটিশ - বিরোধী আন্দোলনে সংবদ্ধ করেন । বাংলার মির নিসার আলি বা তিতুমিরের নেতৃত্বে ওয়াহাবি আন্দোলন শুরু হয় । তিনি বারাসাতের নারকেলবেড়িয়া অঞ্চলে একটি বাঁশের কেল্লা বানিয়ে এই বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন । স্থানীয় জমিদার , নীলকর ও ব্রিটিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে এই বিদ্রোহ সংঘটিত হয় । এটি বারাসাত বিদ্রোহ নামে পরিচিত । ১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ বাহিনী কামান দেগে বাঁশের কেল্লা ধ্বংস করে দেয় । 


২. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ কীভাবে গণবিদ্রোহের রূপ নিয়েছিল ? 

উঃ । ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের গোড়ার দিকে কলকাতার দমদম সেনা ছাউনিতে বন্দুকের টোটা নিয়ে এক গুজব ছড়ায় । বলা হয় যে নতুন এনফিল্ড রাইফেলের টোটায় গোরু ও শুকরের চর্বি মেশানো এবং তা দাঁত দিয়ে সিপাহিদের কেটে নিতে হতো । ফলে সিপাহিরা বিশ্বাস করতে থাকে যে তাদের জাত ও ধর্ম নষ্ট করার চেষ্টা করছে ব্রিটিশ কোম্পানি । সারা দেশের সেনা ছাউনিতে এই গুজব ছড়িয়ে পড়তেই সতর্ক হয়ে কোম্পানি ওই টোটা বানানো বন্ধ করে দেয় । কিন্তু কোম্পানির প্রতি অসন্তোষ বাড়তে থাকে । ব্যারাকপুরের সেনা ছাউনিতে মঙ্গল পান্ডে নামে এক সিপাহি এক ইউরোপীয় সেনা আধিকারিককে গুলি করেন । এরপর থেকেই আম্বালা , লখনৌ , মিরাট সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কোম্পানির বিরুদ্ধে সিপাহিবাহিনীর বিদ্রোহ শুরু হয় । মিরাটের সিপাহিরা দিল্লি পৌঁছে মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরকে হিন্দুস্থানের সম্রাট ঘোষণা করে । ধীরে ধীরে উত্তর পশ্চিম প্রদেশ ও অযোধ্যার বিভিন্ন সেনা ছাউনিতে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে এবং এদের সঙ্গে যোগ দেয় স্থানীয় কিছু অভিজাত ও সাধারণ জনগণ । ফলে দ্রুত সিপাহিদের বিদ্রোহ গণবিদ্রোহের রূপ নেয় । 


৩. সাঁওতাল বিদ্রোহ কেন সংগঠিত হয়েছিল ? কারা এই বিদ্রোহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল ? এই বিদ্রোহের অপর নাম কী ছিল ? 

উঃ । ১৮৫৫ - থেকে ১৮৫৬ সালে যে উপজাতি বিদ্রোহ সংগঠিত হয়েছিল তার নাম ছিল সাঁওতাল বিদ্রোহ । এই বিদ্রোহের পিছনে বিভিন্ন কারণ ছিল । প্রথমতঃ সাঁওতালদের এলাকায় বহিরাগত মহাজন , জমিদাররা ‘ দিকু ’ নামে পরিচিত ছিল । এরা এসে বসবাস করতে শুরু করে । এদের প্রভাবে দরিদ্র নিরীহ সাঁওতালরা অত্যাচারের মুখে পড়ে । তারা কম ওজন ও চড়া সুদে টাকা দিত । দলিলে ইচ্ছামতো বক্তব্য লিখে টিপ ছাপ নিয়ে নিত । দ্বিতীয়ত : ইউরোপীয় কর্মীরা সাঁওতালদের কাছ থেকে জোর করে হাঁস মুরগি ও অন্যান্য জিনিস কেড়ে নিত । তৃতীয়তঃ তাদের জোর করে রেলের কাজে নিয়োগ করা হতো । উপযুক্ত মজুরি দিত না । চতুর্থত : সবচেয়ে বড়ো কথা ছিল সাঁওতালদের নিজস্ব সংস্কৃতি বিপন্ন হচ্ছিল । সিধু , কানহ , চাঁদ ও ভৈরব প্রমুখ এই বিদ্রোহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল । এই বিদ্রোহ ‘ হুল বিদ্রোহ ' নামে পরিচিত ছিল ।


৪. সংস্কার আন্দোলনগুলির চরিত্র ও সীমাবদ্ধতা আলোচনা করো । 

উঃ । ঊনিশ শতকের সংস্কার আন্দোলনগুলি একটা সংকীর্ণ সীমানায় আটকে পড়েছিল । আর্থিক ও শিক্ষাগত সুযোগ সুবিধাগুলি মূলত উচ্চবর্গের ভদ্রলোক ব্যক্তিরাই পেয়েছিলেন । কলিকাতার বাইরে ব্রাহ্ম আন্দোলন ছড়িয়ে পড়লেও সাধারণ মানুষদের সঙ্গে এই আন্দোলন তেমনভাবে ঘনিষ্ঠ হতে পারেনি । সংস্কারকরা সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে নিয়ে বিশেষ ভাবিত ছিলেন না । দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতে প্রার্থনা সমাজ - এর আন্দোলনও শিক্ষিত ভদ্রলোক শ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল । পাশাপাশি এই আন্দোলনগুলি জাতিভেদ প্রথা নিয়ে তেমন সরব হয়নি যদিও এর নেতারা বেশিরভাগই উচ্চ জাতির প্রতিনিধি ছিলেন । উনিশ শতকের সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নেতারা মনে করতেন ধর্মশাস্ত্রে যে কথা বলা আছে তা পালনীয় । কিন্তু ধর্মীয় নেতারা নিজেদের স্বার্থে ধর্মের নির্দেশগুলিকে অপব্যবহার করতেন । দেশের বেশিরভাগ মানুষ সব শাস্ত্র না পড়ায় তারা শাস্ত্রের নামে বিভিন্ন কুপ্রথার শিকার হতেন । সতীদাহ প্রথা , বিধবা বিবাহ — এই প্রথা কিন্তু বরাবরই ছিল , শাস্ত্র নির্ভর বিভিন্ন প্রধার নিষ্ঠুরতা ও অমানবিকতার বদলে ওই প্রথাগুলি শাস্ত্রসম্মত কিনা তা নিয়ে আলোচনায় জোর দেওয়া হয়েছিল ।


3 ৫. ধর্ম ও সমাজ সংস্কারকরূপে রাজা রামমোহনের অবদান কী ছিল ? 

উঃ । উনবিংশ শতকে বাংলার সমাজ সংস্কারকদের মধ্যে প্রধান ছিলেন রাজা রামমোহন । রায় । তিনি যুক্তিসম্মত বিচারের দ্বারা হিন্দুধর্মের সংস্কারের কথা বলেন । তিনি মূর্তিপূজা , পুরোহিততন্ত্র ও বহু ঈশ্বরবাদের নিন্দা করেন । সে সময় কলকাতা ও তার আশেপাশে সতীদাহ প্রথা বজায় ছিল । রামমোহন সতীদাহ প্রথা বন্ধের পক্ষে জোরালো আন্দোলন করেন । তাঁর চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে লর্ড বেন্টিক আইন করে এই নৃশংস ও অমানবিক সতীদাহ প্রথা বন্ধ করেন । সম্পত্তিতে নারীর আইনগত স্বীকৃতির ক্ষেত্রেও রামমোহন সওয়াল করেন । ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে রাজা রামমোহন রায় কলকাতায় আত্মীয় সভা প্রতিষ্ঠা করেন । ওই প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য ছিল সামাজিক সংস্কার করা । ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে আত্মীয় সভা থেকে ব্রাহ্ম সমাজ গড়ে ওঠে । 

৬. শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারে পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভূমিকা আলোচনা করো ।

 উঃ । উনিশ শতকের বাংলায় প্রায় একক উদ্যোগে শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর । শিক্ষা সংস্কারের ক্ষেত্রে তাঁর উদ্যোগেই ব্রাহ্মণ ও বৈদ্য পরিবারের পাশাপাশি কায়স্থ ছেলেরাও সংস্কৃত কলেজে পড়ার সুযোগ পায় । বিদ্যাসাগর অনুভব করেছিলেন যে সংস্কৃতের পাশাপাশি ইংরেজি শিক্ষারও প্রয়োজন । তিনি বুঝেছিলেন মাতৃভাষা ও ইংরেজির মধ্যে সংযোগসাধন জরুরি । পাশাপাশি পাঠ্যসূচিতে গণিত চর্চাও তিনি অন্তর্ভুক্ত করেন । ১৮৫০ - এর দশকে ছাত্রদের জন্য বিদ্যাসাগর অনেকগুলি বই লেখেন । সহকারি স্কুল পরিদর্শক হিসেবে বাংলার বিভিন্ন জেলায় বিদ্যাসাগর কয়েকটি মডেল স্কুল তৈরি করেন । তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে প্রশাসনের তরফে যে সামান্য অর্থ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ করা হয় তা দিয়ে সমস্ত মানুষকে শিক্ষার আওতায় আনা সম্ভব নয় । তাই শিক্ষা বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকা উচিত বলে বিদ্যাসাগর মনে করতেন । নারীদের শিক্ষাবিস্তারের জন্য তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজের খরচে অনেকগুলি মেয়েদের স্কুল তৈরি করেন । বেথুন স্কুলে যাতে মেয়েরা পড়তে যায় তার জন্যও তিনি চেষ্টা করেন । 


৭. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহে সিপাহিদের মধ্যে কারা অংশগ্রহণ করেছিল এবং কেন ?

 উঃ । ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহে ব্রিটিশ কোম্পানির সমস্ত সিপাহিবাহিনী যোগ দেয় ।  মাদ্রাজ ও বোম্বাই বাহিনীর সিপাহিরা বিদ্রোহ থেকে দূরে সরে ছিল । প্রধানত বেঙ্গল আর্মির সিপাহিরা এই বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল । বেঙ্গল আর্মির মধ্যে বেশিরভাগ সিপাহি ছিল ভারতীয় । এই সেনাবিভাগে বেশিরভাগে সিপাহি আদতে ছিল অযোধ্যার বাসিন্দা । সেখানকার প্রায় প্রতিটি কৃষক পরিবার থেকে কেউ না কেউ সিপাহি হিসেবে যোগ দিয়েছিল । ১৮২০ দশকে কোম্পানির তরফে যে সেনা সংস্কার করা হয় তাতে মারাঠা , গোর্খা সহ বিভিন্ন জনগোষ্ঠী সেনাবাহিনীতে নিযুক্ত হলে তারা ক্ষুব্ধ হয় । তাদের বেতন কমে যাওয়া এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা না পাওয়া নিয়ে বৈষম্যের অভিযোগ ওঠে । এছাড়া ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে কোম্পানি ঘোষণা করে যে সিপাহিদের নিজেদের অঞ্চলের বাইরে গিয়েও কাজ করতে হবে । কিন্তু সেজন্য আলাদা কোনো ভাতা সিপাহিরা পাবে না । এমনকি যেসব সিপাহিরা যেতে অরাজি হতো তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতো । চাকরি সংক্রান্ত এসব সংঘাতের সঙ্গে এনফিল্ড রাইফেলের টোটা বিষয়ক গুজবটি ছড়িয়ে পড়ে । এইসব কারণ থেকে বেঙ্গল আর্মির সিপাহিরা ক্ষুদ্ধ হয়ে বিদ্রোহের সূচনা করে । বেঙ্গল আর্মির সিপাহিদের এই বিদ্রোহ দমনে ব্রিটিশ সরকার পাঞ্জাবি ও গুর্খা সিপাহিদের ব্যবহার করে । অন্যদিকে মাদ্রাজ ও বোম্বাই বাহিনীর সিপাহিরা কার্যত বিদ্রোহ থেকে সরে থাকে ।






































No comments:

Post a Comment