জাতীয়তাবাদের প্রাথমিক বিকাশ অষ্টম শ্রেনীর ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় | class 8 6th chapter history questions answers | - Studing School

Fresh Topics

Monday, April 3, 2023

জাতীয়তাবাদের প্রাথমিক বিকাশ অষ্টম শ্রেনীর ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় | class 8 6th chapter history questions answers |

 

জাতীয়তাবাদের প্রাথমিক বিকাশ অষ্টম শ্রেনীর ইতিহাস  ষষ্ঠ অধ্যায় | class 8 6th chapter history questions answers |





অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর প্রশ্নের মান:১


1. কোন সময়কে ‘সভা-সমিতির যুগ' বলা হয় ?

উত্তর:-  উনিশ শতককে সভা-সমিতির যুগ্ম' বলা হয়।


2. উনিশ শতককে কে 'সভা-সমিতির যুগ' বলেছেন ?

 উত্তর:- অনিল শীল উনিশ শতককে সভা-সমিতির যুগ বলেছেন।


3. ভারতের প্রথম জাতীয়তাবাদী সংগঠনের নাম কী ? 

উত্তর:- ভারতের প্রথম জাতীয়তাবাদী সংগঠনের নাম হল বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা।


4. বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা কত খ্রিস্টাব্দে গড়ে ওঠে ?

উত্তর:-  ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা গড়ে ওঠে


5. জমিদার সভা কবে গড়ে ওঠে ? 

উত্তর:-  ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে জমিদার সভা গড়ে ওঠে।


6. ইন্ডিয়ান লিগ কবে স্থাপিত হয় ? 

উত্তর:-  ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে ইন্ডিয়ান লিগ স্থাপিত হয়।


7. ভারতসভা কবে গড়ে ওঠে ?

 উত্তর:-১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে ভারতসভা গড়ে ওঠে।


৪. ভারতসভার মূল উদ্যোক্তা বা প্রতিষ্ঠাতা কে ?

 উত্তর:- ভারতসভার মূল উদ্যোক্তা বা প্রতিষ্ঠাতা সুরেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায়।


9. ইলবার্ট বিল ঘোষিত হয় কবে ? 

উত্তর:- ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে ইলবার্ট বিল ঘোষিত হয়।


10. ইলবার্ট বিলের বিরুদ্ধে কারা আন্দোলন গড়ে তুলেছিল ?

উত্তর:- ইলবার্ট বিলের বিরুদ্ধে ভারতসভা আন্দোলন গড়ে তুলেছিল।


11. কার নেতৃত্বে ডিফেন্স অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠিত হয় ?

 উত্তর:- বিচারপতি জে ব্রানসনের নেতৃত্বে ডিফেন্স অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠিত হয়।


12. কলকাতায় সর্বপ্রথম সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন কবে বসে ?

উত্তর:-  ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় সর্বপ্রথম সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন বসে।


13. 'জাতীয় কংগ্রেসের জনক' বলা হয় কাকে ?

 উত্তর:-  অ্যালান অক্টোভিয়ান হিউমকে 'জাতীয় কংগ্রেসের জনক' বলা হয়।


14. জাতীয় কংগ্রেস কবে প্রতিষ্ঠিত হয় ? 

উত্তর:- ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়।


15. জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশনের সভাপতি কে ছিলেন ছিলেন? 

উত্তর:- জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশনের সভাপতি ছিলেন উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়।


16.জাতীয় কংগ্রেস' কথাটি সর্বপ্রথম কে ব্যবহার করেন ? 

উত্তর:-  সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় 'জাতীয় কংগ্রেস' কথাটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন।


17. জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠাকালে ভারতের বড়োলাট কে ছিলেন?

 উত্তর:-  জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠাকালে ভারতের বাড়ালাট ছিলেন লর্ড ডাফরিন। 



18. নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন কবে ঘোষিত হয় ?


উত্তর:- ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন ঘোষিত হয়।


19. সংবাদপত্র আইন কবে ঘোষিত হয় ? 

উত্তর:- ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে সংবাদপত্র আইন ঘোষিত হয়।


20. লর্ড লিটন প্রণীত একটি দমনমূলক আইনের নাম লেখো।

 উত্তর:-  লর্ড লিটন প্রণীত একটি দমনমূলক আইন হল দেশীয় মুদ্রণ আইন।


21. A Nation in Making গ্রন্থের লেখক কে ?

উত্তর:-  A Nation in Making গ্রন্থের লেখক সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। 


22. ভারতের একজন জাতীয়তাবাদী অর্থনীতিবিদের নাম করো। 

উত্তর:- ভারতের একজন জাতীয়তাবাদী অর্থনীতিবিদের নাম হল দাদাভাই নওরোজি।


23. ভারতের বৃদ্ধ মানুষ' (The grand old man ) কাকে বলা হয় ?

 উত্তর:- দাদাভাই নওরোজিকে 'ভারতের বৃদ্ধ মানুষ' (The grand old man) বলা হয়। 


24. Poverty and unbritish rule in India গ্রন্থের লেখক কে ?

 উত্তর6:- Poverty and unbritish rule in India গ্রন্থের লেখক হলেন দাদাভাই নওরোজি। 


25. ভারতে চরমপন্থী আন্দোলনের একজন নেতার নাম লেখো।

উত্তর:-  ভারতে চরমপন্থী আন্দোলনের একজন নেতা ছিলেন বালগঙ্গাধর তিলক ।


26. জাতীয় কংগ্রেসের কোন অধিবেশনে কংগ্রেস দু-ভাগে বিভক্ত হয় ?

উত্তর:- জাতীয় কংগ্রেসের সুরাট অধিবেশনে (১৯০৭ খ্রিস্টাব্দ) কংগ্রেস দু-ভাগে বিভক্ত হয়।


27. ভবানী মন্দির বইটির লেখক কে ?

উত্তর:- ভবানী মন্দির বইটির লেকক অরবিন্দ ঘোষ।


28.  'স্বরাজ আমার জন্মগত অধিকার'—উক্তিটি কার ?

 উত্তর:- "স্বরাজ আমার জন্মগত অধিকার' উক্তিটি হল বালগঙ্গাধর তিলকের।


29. দেশপ্রেম অপরাধ হতে পারে না'- উক্তিটি কার ? 

উত্তর:-  দেশপ্রেম অপরাধ হতে পারে না— উক্তিটি অরবিন্দ ঘোষের। 


30. মারাঠি ও কেশরি পত্রিকা দুটি কে প্রকাশ করেন ?

 উত্তর:-বাল গঙ্গাধর তিলক মারাঠি ও কেশরি পত্রিকা দুটি প্রকাশ করেন।


31. ভারতের আত্মা কে রচনা করেন ?

 উত্তর:-ভারতের আত্মা রচনা করেন বিপিনচন্দ্র পাল ।


32. জাতীয় কংগ্রেসের কোন্ অধিবেশনে চরমপন্থী ও নরমপন্থীদের মিলন হয় ?

 উত্তর:- জাতীয় কংগ্রেসের লখনউ অধিবেশনে (১৯১৬ খ্রিস্টাব্দ) চরমপন্থী ও নরমপন্থীদের মিলন হয়।


33. ‘লখনউ প্রস্তাব’ কবে গৃহীত হয় ? 

উত্তর6:- ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে ‘লখনউ প্রস্তাব’ গৃহীত হয়।


34. বঙ্গ বিভাজনের প্রস্তাব কে উত্থাপন করেন ?

 উত্তর:-লর্ড কার্জন বঙ্গ বিভাজনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন।


35. বঙ্গবিভাজনের দিন কবে ধার্য হয় ?

 উত্তর:- ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৬ অক্টোবর বঙ্গবিভাজনের দিন ধার্য হয়।


36. রাখিবন্ধন উৎসব পালন করেন কে ?

 উত্তর:- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাখিবন্ধন উৎসব পালন করেন ৷


37. 'ভারতমাতা' চিত্রটি কার আঁকা ?

 উত্তর:- 'ভারতমাতা' চিত্রটি অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা।


38. জাতীয় শিক্ষা পরিষদ কবে গঠিত হয় ? 

উত্তর:- ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে


39. কার সভাপতিত্বে জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠিত হয় ?

উত্তর: সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠিত হয়।


40. বঙ্গ বিভাজনের প্রস্তাব কবে বাতিল হয় ? 

উত্তর:-  ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গ বিভাজনের প্রস্তাব বাতিল হয়।


41. An Echo From Andamans গ্রন্থটির লেখক কে ?

 উত্তর:- An Echo from Andamans গ্রন্থটির লেখক হলেন বিনায়ক দামোদর সাভারকার।


42. অনুশীলন সমিতি কে প্রতিষ্ঠা করেন ?

 উত্তর:- অনুশীলন সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন সতীশচন্দ্র বসু। 


43. অনুশীলন সমিতি করে স্থাপিত হয় ?

উত্তর:-  ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে অনুশীলন সমিতি স্থাপিত হয়। 


44. কার নেতৃত্বে ঢাকা অনুশীলন সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয় ? 

 উত্তর:- পুলিনবিহারী দাসের নেতৃত্বে ঢাকা অনুশীলন সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়।


45. কাকে বাংলার 'কসাই কাজি' বলা হত ? 

উত্তর:-  বিচারক কিংসফোর্ডকে বাংলার 'কসাই কাজি' বলা হত।


46. ক্ষুদিরাম বসুর ফাঁসি হয় কবে ? 

উত্তর:-  ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ১১ আগস্ট ক্ষুদিরাম বসুর ফাঁসি হয়।


47. পরাধীন ভারতের প্রথম ষড়যন্ত্র মামলার নাম কী ?

 উত্তর:- পরাধীন ভারতের প্রথম ষড়যন্ত্র মামলার নাম আলিপুর বোমা মামলা।


48. ভারতের সশস্ত্র বিপ্লববাদের জনক' বলা হয় কাকে ? 

উত্তর:-  বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কে-কে ভারতের 'সশস্ত্র বিপ্লববাদের জনক' বলা হয়।


 49. ‘মিত্রমেলা' কবে স্থাপিত হয় ?

উত্তর:-  ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে 'মিত্রমেলা' স্থাপিত হয়। 


50. 'অভিনব ভারত'-এর প্রতিষ্ঠাতা কে ?

উত্তর:-  'অভিনব ভারত'-এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন বিনায়ক দামোদর সাভারকার।


51. ‘ভারতীয় বিপ্লববাদের জননী' কাকে বলা হয় ? 

উত্তর:-  মাদাম ভিকাজী রুস্তমজি কামাকে "ভারতীয় বিপ্লববাদের 'জননী' বলা হয়।


52. 'গদর' কথার অর্থ কী ?

 উত্তর:-'গদর' কথার অর্থ হল বিপ্লব।


53. গদর পার্টির প্রতিষ্ঠাতা কে ?

 উত্তর:- গদর পাটির প্রতিষ্ঠাতা হলেন লালা হরদয়াল।


54. বাঘাযতীনের প্রকৃত নাম কী ছিল ? 

উত্তর:- বাঘাযতীনের প্রকৃত নাম ছিল যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়।


55. বাঘাযতীনের মৃত্যু হয় কবে ? 

উত্তর:-  ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দের ১০ সেপ্টেম্বর বাঘাযতীনের মৃত্যু হয়।



McQ questions answer:


1. ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম জাতীয়তাবাদী সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়---- 

(A) জমিদার সভা

(B) ভারতসভা

(C) বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা

(D) এর কোনোটিই নয়

উত্তর:- (C) বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা


2. ভারতে প্রতিষ্ঠিত প্রথম রাজনৈতিক সমিতিটির নাম হল—

(A) বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা 

(B) জমিদার সভা

(C) ভারত সভা

(D) প্রার্থনা সভা

উত্তর:-(B) জমিদার সভা


3. জমিদার সভা প্রতিষ্ঠিত হয়—

 (A) ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে

 (B) ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে

 (C) ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে

 (D) ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে

উত্তর:-  (B) ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে


4.হিন্দুমেলা প্রতিষ্ঠা করেন—

(A) কর্নেল অলকট 

(B) নবগোপাল মিত্র

(C) শিশিরকুমার ঘোষ

(D) অরবিন্দ ঘোষ

উত্তর:- (B) নবগোপাল মিত্র


5. জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশন বসে------

(A) দিল্লিতে

(B) বোম্বাই-এ

(C)  কলকাতায়

(D) মাদ্রাজে

উত্তর:- (B) বোম্বাই-এ


6. ভারতের জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল----

(A) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে

(B) ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে

(C) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে

(D) ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে

উত্তর:- (B) ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে





7. গোকুলদাস তেজপাল সংস্কৃত কলেজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল—

(A) ভারতের জাতীয় কংগ্রেস 

(B) ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন

(C) ভারতসভা

(D) জমিদার সভা

উত্তর:- (A) ভারতের জাতীয় কংগ্রেস


8.কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশনে বেশিরভাগ প্রতিনিধি যোগ দিয়েছিলেন—

(A) বাংলা থেকে

(B) মাদ্রাজ থেকে

(C) বোম্বাই থেকে

(D) দিল্লি থেকে


9.কংগ্রেসের আদিপর্বের নেতৃত্বকে বলে—

(A) চরমপন্থী

(B) বামপন্থী

(C) নরমপন্থী

(D) ডানপন্থী

উত্তর:- (C) নরমপন্থী


10. প্রথম দু-দশকের কংগ্রেসের নরমপন্থীদের কার্য কলাপকে বলা হত----

(A) দু-দিনের তামাশা

(B) তিন দিনের তামাশা

(C) চার দিনের তামাশা 

(D) পাঁচদিনের তামাশা

উত্তর:- (B) তিন দিনের তামাশা


11. সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসার বয়স ১৯-এর পরিবর্তে ২৩ বছর করতে হবে, এই দাবি ছিল—

(A) চরমপন্থীদের

(B) নরমপন্থীদের

(C) বিপ্লবীদের

(D) উগ্র চরমপন্থীদের

উত্তর:- (B) নরমপন্থীদের



12. নরমপন্থীদের আবেদন-নিবেদনের নীতিকে 'রাজনৈতিক ভিক্ষাবৃত্তি' বলে মনে করত—

(A) বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদীরা

(B) চরমপন্থীরা

(C) উগ্র চরমপন্থীরা

(D) বিপ্লবীরা

উত্তর:- (B) চরমপন্থীরা


13. মহারাষ্ট্রে তিলকের নেতৃত্বে চালু হয়--

(A) শিবাজি উৎসব

(B) গণেশ উৎসব

(C) মারাঠা উৎসব

(D) দুর্গোৎসব

উত্তর:- (A) শিবাজি উৎসব


14. নরমপন্থী ও চরমপন্থীরা আলাদা হয়ে যায় জাতীয় কংগ্রেসের—

(A) বোম্বাই অধিবেশনে

(B) সুরাট অধিবেশনে

(C) কলিকাতা অধিবেশনে

(D) লখনউ অধিবেশনে

উত্তর:- (B) সুরাট অধিবেশনে


15. বঙ্গভঙ্গ করতে চেয়েছিলেন----

(A) লর্ড কার্জন

(B) লর্ড ডাফরিন

(C) লর্ড আরউইন 

(D) লর্ড ক্যানিং

উত্তর:- (A) লর্ড কার্জন


16. বঙ্গভঙ্গের প্রস্তাব কার্যকর হয়েছিল-----

(A) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৬ অক্টোবর

(B) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৪ অক্টোবর

(C) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৭ অক্টোবর

 (D)১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ২০ অক্টোবর

উত্তর:- (A) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৬ অক্টোবর


17. ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৬ অক্টোবর দিনটিকে পালন করা হয়—

(A) স্বদেশি উৎসব হিসেবে

(B) রাখিবন্ধন উৎসব হিসেবে

(C) বয়কট উৎসব হিসেবে

(D) বহ্নি উৎসব হিসেবে

উত্তর:- (B) রাখিবন্ধন উৎসব হিসেবে


18.রাখিবন্ধন উৎসবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন-----

(A) প্রমথনাথ মিত্র

(B) অরবিন্দ ঘোষ

(C) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

(D) বালগঙ্গাধর তিলক

উত্তর:- (C) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


19.বঙ্গভঙ্গকে কেন্দ্র করে সূচনা হয়েছিল---

(A) বহ্নি উৎসবের

(B) স্বদেশি ও বয়কট আন্দোলনের

(C) নরমপন্থী আন্দোলনের

(D) রাখিবন্ধন উৎসবের

উত্তর:- (B) স্বদেশি ও বয়কট আন্দোলনের


20.বিপ্লববাদের জনক বলা হয় –

(A) ক্ষুদিরাম বসু

(B) বাসুদেব বলবন্ত ফাদকে

(C) সতীশচন্দ্র বসু

(D) ভগৎ সিং 

উত্তর:-(B) বাসুদেব বলবন্ত ফাদকে


সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তরঃ


১. ইলবার্ট বিল বিতর্ক কী :

 উঃ । কোনো ভারতীয় বিচারকের ইউরোপীয় অপরাধীদের বিচার করার অধিকার ছিল না । এই অসাম্য দূর করার জন্য জেনারেল লর্ড রিপনের আইনসভার সদস্য সি . পি . ইলবার্ট বিচার বিভাগীয় ক্ষেত্রে এই অসাম্য দূর করতে একটি বিল আনেন , তাতে বলা হয় ভারতীয় বিচারকরা , ইউরোপীয় অপরাধীদের বিচার করতে পারবেন । এর প্রতিবাদে ইউরোপীয়রা বিদ্রোহ ঘোষণা করেন । এর ফলে বিল যাতে প্রত্যাহার না করা হয় তারজন্য ভারতসভার উদ্যোগে ভারতীয়রা আন্দোলন শুরু করেন । উভয় পক্ষের এই আন্দোলন ও পাল্টা আন্দোলন বিতর্ককে ' ইলবার্ট বিল বিতর্ক বলা হয় । 


২.  ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ও জাতীয় সম্মেলন সম্পর্কে যা জানো লেখো । 

উঃ । জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার আগে জাতীয়তাবাদী সংগঠনের মধ্যে কলকাতার ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন বা ভারত সভা ছিল অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন । ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও আনন্দমোহন বসুর নেতৃত্বে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন বা ভারত সভা গঠিত হয় । ওই সংগঠনের প্রধান লক্ষ্য ছিল দেশের জনগণকে বৃহত্তর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে একজোট ‘ করা । ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে ভারত সভার উদ্যোগে কলকাতায় প্রথমবার একটি জাতীয় সম্মেলন আয়োজন করা হয় । এর সভাপতিত্ব করেন রামতনু লাহিড়ি । 


৩. লর্ড লিটন ও দমনমূলক আইন সম্পর্কে কী জানা যায় ? 

উঃ । ব্রিটিশ শাসনের বেশ কয়েকটি দমনমূলক আইনের কথা জানা যায় । ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে লর্ড নর্থব্রুক নাট্যভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন জারি করেন । এর উদ্দেশ্য ছিল জাতীয়তাবাদী ভাবধারার নাটকগুলির প্রচার বন্ধ করা । লর্ডলিটন ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিলেন । ভারতের সংবাদপত্রগুলি এই পদক্ষেপ নিয়ে ভীষণভাবে সমালোচনা করেছিলেন । ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে লর্ড লিটন দেশীয় মুদ্রণ আইন জারি করেন । ওই আইনে বলা হয় , দেশীয় ভাষায় প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলি কোন সরকার বিরোধী বক্তব্য প্রচার করতে পারবে না । এর যদি অন্যথা হয় তবে সরকার ওই সংবাদপত্র ছাপাখানা বাজেয়াপ্ত করবে । ওই আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রবল আন্দোলন শুরু হলে ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড রিপন ওই আইনটি বাতিল করেন । লর্ড লিটন ভারতীয়দের ব্রিটিশ বিরোধী কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য অস্ত্রআইনও জারি করেছিলেন ।



৪. উপনিবেশিক স্বায়ত্বশাসন : সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় - এর বিশ্লেষণ কী ছিল ? 

উঃ । সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন , অনেকে ভাবছেন সভ্য জগতে মর্যাদার স্থান পেতে হলে , নিজেকে শ্রেষ্ঠ বলে প্রমাণিত করতে হলে স্বাধীনতা আবশ্যক , আমরা খাঁটি স্বায়ত্বশাসন চাই । উপনিবেশিক স্বায়ত্বশাসনের সীমাবদ্ধতায় আটকে থেকে লাভ নেই । ইতিমধ্যে আমরা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পূর্ণ সমর্থন নিয়ে ডোমিনিয়ন স্টেটাস লাভ করার জন্য কাজ করে যাব । 


৫.  অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদ কী ? 

উঃ । ভারতের আর্থিক দুরবস্থায় ব্রিটিশ শাসনের ভূমিকা নিয়ে নরমপন্থী নেতৃত্ব প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছিলেন । এই প্রক্রিয়াকে অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদ বলা হয় । অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদের মূল লক্ষ্য ছিল ভারতের দারিদ্র্য ও ব্রিটিশ শাসনের সম্পর্ক নির্ণয় করা । এই কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন দাদাভাই নৌরজি , মহাদেব গোবিন্দ রানাডে ও রমেশচন্দ্র দত্ত । তাঁদের যুক্তি ছিল ভারত ব্রিটেনের কাঁচামাল আহরণের ভূমিতে পরিণত হয়েছে । ভারতের কৃষি ও শিল্প ধ্বংসের ফলে দেশের যাবতীয় সম্পদ বিদেশে চলে যায় । নরমপন্থীরা একে সম্পদ নির্গমণ বলেন । এর পাশাপাশি উঁচু হারে ভূমি - রাজস্ব চালু থাকায় কৃষক ও কারিগর সবাই নিঃস্ব হয়ে পড়ে । ব্রিটিশ পণ্যের সাথে অসম প্রতিযোগিতায় ভারতীয় পণ্য মার খায় কারণ ব্রিটিশ পণ্য আমদানিতে শুল্ক বসানো হতো না । এবং ভারতের শিল্পায়ন ব্যাহত হতে থাকে । কৃষির ওপর চাপ বাড়ে ফলে কৃষির উপযুক্ত কাঠামো না থাকায় দেশের দারিদ্র্য আরও বেড়েছিল । এই নেতিবাচক বিষয়গুলির প্রতিকার করে একটি জাতীয় অর্থনীতি গড়ে তোলার ভাবনা অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদকে পুষ্ট করেছিল । 


৬.  সরলাদেবী ও প্রতাপাদিত্য উৎসব - এর বর্ণনা দাও । উঃ । সরলাদেবীর সঙ্গে যে সমস্ত ছেলেদের পরিচয় ছিল তাদের মধ্যে অন্যতম গণিলাল গালি । তিনি তাদের বাৎসরিক সভায় সরলাদেবীকে সভাপতিত্ব করতে বললে তিনি জানান , সাহিত্য সভা না করে ১ লা বৈশাখ প্রতাপাদিত্য উৎসব করো । আর যে সমস্ত ছেলে কুস্তি জানে , তলোয়ার খেলতে জানে , লাঠি চালায় , বক্সিং জানে তাদের খুঁজে বের করো । আমি তাদের মেডেল দেব । এতে মনিলাল রাজি হয়ে গেল । সবাই মিলে খেলোয়াড় জোগাড় করে প্রদর্শনী করল । শেষে সরলাদেবী প্রত্যেককে মেডেল দিলেন । সরলাদেবীর প্রতাপাদিত্য উৎসবের উদ্যোগ রবীন্দ্রনাথ পছন্দ করেননি । তিনি প্রতাপাদিত্যকে ‘ জাতীয় বীর ' রূপে তুলে ধরার বিপক্ষে ছিলেন । 


৭। চরমপন্থীদের স্বরাজ ভাবনা কী ছিল ? 

উঃ । চরমপন্থীদের আদর্শগত লক্ষ্য ছিল স্বরাজ অর্জন করা । বিভিন্ন চরমপন্থী নেতারা স্বরাজ ধারণাটিকে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন । বিপিনচন্দ্র পাল মনে করতেন স্বরাজ মানে চূড়ান্ত স্বাধীনতা যা ব্রিটিশের অধীনে থেকে কোনো ভাবেই সম্ভব নয় । এবিষয়ে অরবিন্দ ঘোষেরও একই মত ছিল । কিন্তু তিলক মনে করতেন প্রশাসনকে ভারতীয় নিয়ন্ত্রণে আনার মধ্য দিয়ে স্বরাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে । বাস্তবে বেশিরভাগ চরমপন্থী নেতাই স্বরাজ বলতে ব্রিটিশ সাত জ্যের মধ্যেই স্বশাসনের অধিকারকে বুঝতেন । ফলে চরমপন্থী আন্দোলন আবেদন নিবেদেনের বদলে ঔপনিবেশক সরকারের চাপিয়ে দেওয়া অনায্য আইনগুলি অমান্য করে ব্রিটিশ শাসনের বিরোধিতা করার ডাক দেন । পাশাপাশি ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান ও জিনিসপত্র বর্জনের কথা বলা হয় । এর বিকল্পরূপে দেশীয় শিল্প ও শিক্ষার উপরে চরমপন্থী নেতৃত্ব জোর দেন । 


৮.  জাতীয় কংগ্রেসের সুরাট অধিবেশন - এর বিবরণ দাও । 

উঃ । পুনা শহরে ১৯০৭ সালে জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশন বসার কথা ছিল । কিন্তু পুনায় চরমপন্থীরা শক্তিশালী এই যুক্তিতে নরমপন্থীরা অধিবেশন সুরাটে করার প্রস্তাব দেন । সুরাট অধিবেশনে সভাপতি নির্বাচন নিয়ে মতভেদ দেখা যায় । নরমপন্থী ও চরমপন্থীদের চরম বিবাদের মধ্যে দিয়ে সুরাট অধিবেশন শেষ হয় । নরমপন্থী নেতা সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় চরমপন্থী নেতা বালগঙ্গাধর তিলক চেষ্টা করেছিলেন কংগ্রেসকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে । কিন্তু নরমপন্থী নেতা ফিরোজ শাহ চরমপন্থীদের বাদ দিয়ে এলাহাবাদ অধিবেশনের আয়োজন করলেন । অন্যদিকে চরমপন্থী নেতারাও নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে ব্যর্থ হন । নরমপন্থী চরমপন্থী বিরোধ - এর ফলে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন বিরাট ধাক্কা খেয়েছিল । কলেজ , বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট ও বেশ কয়েকটি জাতীয় বিদ্যালয় তৈরি হয় । পূর্ববঙ্গের জাতীয় বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা বিপ্লবী আন্দোলনের কর্মী হিসাবেও কাজ করতেন । ঢাকার কাছে সোনারঙ জাতীয় বিদ্যালয়ের নাম এ বিষয়ে বিশেষ উল্লেখযোগ্য । তবে বরাদ্দ টাকা কম থাকার জন্য জাতীয় শিক্ষার বিস্তার থমকে যায় । 


৯. মলে - মিন্টো সংস্কার আইন কী ?

 উঃ । উনিশ শতকের শেষভাগ থেকে ভারতীয়রা প্রতিনিধিমূলক স্বায়ত্ব শাসনের দাবী জানাতে থাকে । ধীরে ধীরে ইংরেজ সরকারের নানা সমস্যার উদ্ভব হয় । বিশেষ করে চরমপন্থী আন্দোলন যা সরকারের চিন্তার কারণ হয়েছিল । এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল বাংলা ও মহারাষ্ট্রের বিপ্লবী আন্দোলন । এই অবস্থায় বড়োলাট আর্ল অভ মিন্টো এবং ভারত সচিব জন মর্লে ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অ্যাক্ট পাস করেন । এই আইনে বড়োলাটের কার্য নির্বাহক পরিষদে ও আইন পরিষদে সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয় । এর মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার চরমপন্থীদের বিপরীতে নরমপন্থীদের কাছে টেনে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে দুর্বল করতে চেয়েছিল । অন্যদিকে মুসলমানদের পৃথক নির্বাচনের অধিকার দিয়ে সাম্প্রদায়িকতাকে উসকে দেওয়া হয়েছিল । 


১০.  কিংসফোর্ডকে হত্যার চেষ্টার বিবরণ দাও । উঃ । বিচারক কিংসফোর্ডকে হত্যার ষড়যন্ত্র অনেক দিন ধরে বাংলার বিপ্লবীরা করছিলেন । ১৯০৮ সালের ৩০ শে এপ্রিল মজফফরপুরে কিংসফোর্ডের গাড়িতে ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকি বোমা মারেন । কিন্তু ওই গাড়িতে মিসেস কেনেডি ও তার কন্যা ছিলেন । কিংসফোর্ড ছিলেন না , পরদিন ক্ষুদিরাম ধরা পড়েন । বিচারে ক্ষুদিরামের ফাঁসি হয় । প্রফুল্ল চাকি ধরা পড়ে নিজেকে গুলি করে । আত্মহত্যা করেন । ক্ষুদিরামের স্মরণে গান লেখা হয়— “ একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি । ” 


১১. কংগ্রেস বিভাজনে রবীন্দ্রনাথের বক্তব্য কী ছিল ? 

উঃ । রবীন্দ্রনাথ বলেছেন কংগ্রেস ভেঙ্গে গেল — এরকমটা যে ঘটতে পারে তা অনেকদিন ধরে অশঙ্কা হচ্ছিল । কিন্তু নিজেদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে তারা চেষ্টা করেনি । কংগ্রেসের সভাপতিরা সহজ সত্যকে স্বীকার করেনি । চরমপন্থী বলে একটা দলের উদ্ভব হয়েছে এটা সত্য । এটাকে এড়িয়ে যাবার বা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই । চরমপন্থীরাও এমন কোমর বেঁধে নেমেছেন যেন দেশ থেকে কি একটা বাধা ঠেলে সরানো হচ্ছে । সব মিলিয়ে বলা । যায় বিরুদ্ধ পক্ষের সত্তাকে যথেষ্ট সত্য বলিয়া স্বীকার না করার চেষ্টাতেই এবার কংগ্রেস ভেঙ্গেছে।


১২. স্বদেশি যুগ : অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চোখে কীরূপ ছিল ? 

উঃ । অবনীন্দ্রনাথ সকলের সঙ্গে নাটোরে গিয়েছিলেন প্রভিন্সিয়াল কনফারেন্স উপলক্ষে । নাটোরে যে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল তাতে বাংলায় বক্তৃতা দিতে হবে বলে জোর দাবি তোলা হয় । যেই ইংরেজিতে কেউ মুখ খোলে সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার শুরু হয় বাংলা চাই । এরপর কনফারেন্সে বাংলা ভাষা প্রচলন হয় । অবনীন্দ্রনাথ দেশমাতার ছবি আঁকলেন । নিজেদের সাজ পোশাক বদলে স্বদেশি পোশাকে সেজে নিলেন । রবিকাকা অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গান তৈরি করলেন , দিনু দলবল নিয়ে পতাকা ঘাড়ে করে সেই গান গেয়ে চোরবাগান ঘুরে চাঁদা তুলে নিয়ে এল । রবিকাকার নেতৃত্বে রাখিবন্ধন উৎসব শুরু হল । পায়ে হেঁটে জগন্নাথ ঘাটে গঙ্গায় স্নান করে রাখী পূর্ণিমায় শাঁখ বাজিয়ে একে অপরের হাতে রাখি বেঁধেছেন স্বয়ং রবিঠাকুর । স্বদেশি ও বয়কট আন্দোলনের ফলে পুলিশ দমন পীড়ন শুরু করেন । বিলাতি দ্রব্য বর্জনের জন্য জোর জবরদস্তি রবিকাকার পছন্দ হলো না । তিনি আন্দোলন থেকে সরে এলেন । অবনীন্দ্রনাথের কথায় গেল আমাদের স্বদেশি যুগ ভেঙ্গে । অবনীন্দ্রনাথের মতে তিনি স্বদেশি যুগের দেশের জন্য কিছু করতে হবে । ভেবেছিলেন সেই ভাবটাই তার ছবির জগতে ফুটে উঠেছিল । 


১৩. স্বদেশি শিল্প কীভাবে শুরু হয় ? 

উঃ । বয়কট ও স্বদেশি আন্দোলনের ফলে অনেক দেশীয় শিল্প গড়ে উঠল । ছোটো ছোটো শিল্পের পাশাপাশি বড়ো শিল্পও গড়ে উঠেছিল । ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে চালু হয়েছিল বঙ্গলক্ষ্মী কটন মিল্স । চিনামাটির পাত্র , সাবান , দেশলাই প্রভৃতির দেশীয় কলকারখানা গড়ে ওঠে । তবে মূলধনের অভাবে স্বদেশি শিল্পগুলি বিশেষ সাফল্য পায়নি । তবে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় - এর বেঙ্গল কেমিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ছিল এর ব্যতিক্রম । 


১৪.  হিন্দু মুসলমানের মধ্যে বিভেদ : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশ্লেষণ কী ছিল ? 

উঃ । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘ ব্যাধি ও প্রতিকার ’ প্রবন্ধের একজায়গায় বলেছেন — ইংরেজরা গোপনে মুসলমানদের ‘ উত্তেজিত করছে এতে আমরা ইংরেজদের বিরুদ্ধে রাগ করব কেন ? ইংরেজরা শোষণ করে না , বিভেদনীতি প্রয়োগ করবে না এতটা নির্বোধ ইংরেজদের ভাবাটা কি ঠিক ? মুসলমানদের যে হিন্দুদের বিরুদ্ধে লাগানো যেতে পারে ভেবে দেখা দরকার , কে লাগাচ্ছে সেটা তত গুরুতর বিষয় নয় । এতদিন আমরা পাশাপাশি আছি , একই জল , ফল - ফসল খাচ্ছি ; একই ভাষায় কথা বলছি । একসঙ্গে সুখে দুঃখে আমরা মানুষ ; আজ কি এমন ঘটল যে দাঙ্গার পরিস্থিতি তৈরি হলো । ইংরেজ যে আজ সারা ভারতবর্ষে চেপে বসেছে তা কি কেবলই গায়ের জোরে ? স্বদেশি আন্দোলনের ফলে আমরা যদি স্নেহবশত জনগণকে ভালোবাসতাম তবে ইংরেজি শিক্ষা আমাদের পরস্পরের মধ্যে বিচ্ছেদ না ঘটিয়ে মিলনকে দৃঢ় করতে পারত , সেটি উত্তম হতো । নিজেদের মধ্যে আলস্যে থাকলে কি আর উন্নয়ন ঘটানো যায় । নিজেরা যদি সৎ হই তাহলে বিপদের মুখে এগিয়ে যাবো সবাই কে নিয়ে । 


১৫. জাতীয় শিক্ষা সম্পর্কে যা জানো লেখো । উঃ । স্বদেশি আন্দোলনের ফলে ইংরেজি ভাষা ও ইংরেজি শিক্ষার প্রতি বিরাগ তৈরি হয় । তাই মাতৃভাষায় সমস্ত বিষয়ে পঠন - পাঠন চর্চার উদ্যোগ নেওয়া হয় । এই উদ্যোগের একটি উদাহরণ হলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠা । ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় শিক্ষা পরিষদ তৈরি হয় । অনেক ছাত্রই জাতীয় বিদ্যালয়গুলিতে ভর্তি হতো । বেঙ্গল ন্যাশনাল


 ১৬.  জাতীয় সম্মেলনের গুরুত্ব আলোচনা করো । 

উঃ । সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও আনন্দমোহন বসুর নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত ভারত সভার উদ্যোগে ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার অ্যালবার্ট হলে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রথমবার একটি সর্বভারতীয় সম্মেলন বা জাতীয় সম্মেলন আয়োজন করা হয় । এর সভাপতি ছিলেন রামতনু লাহিড়ি । এই সম্মেলনে স্বায়ত্বশাসন , প্রতিনিধিমূলক ব্যবস্থা পরিষদ , সাধারণ ও কারিগরি শিক্ষা , বিচার ব্যবস্থা পৃথকীকরণ প্রভৃতি নানা বিষয়ে আলোচনা হয় । এই আন্দোলন পরিচালনার জন্য ‘ জাতীয় ধনভাণ্ডার ’ গঠিত হয় । আনন্দমোহন বসু জাতীয় সম্মেলনকে ‘ জাতীয় পার্লামেন্টের দিকে প্রথম পদক্ষেপ ' বলে অভিহিত করেন ।


 ১৭. জাতীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব কীভাবে কংগ্রেস পরিচালনা করতেন ? 

উঃ । প্রথম থেকেই ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দেশের ভিতরে আঞ্চলিক পার্থক্য ও স্বার্থগুলির বাইরে এক বৃহত্তর আদর্শ ও চিন্তার ডাক দেয় । কংগ্রেসের নীতি ছিল প্রতিবছর দেশের এক একটি স্থানে কংগ্রেসের অধিবেশন বসবে । বলা হয় যে অঞ্চলে অধিবেশন বসবে সেখানের কেউ কংগ্রেসের সভাপতি হতে পারবেন না । এক ঐক্যবদ্ধ সংগঠন গড়ার জন্য কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ এইসব নীতি নেন । ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে ঠিক হয় যে কোনো প্রস্তাবে যদি বেশিরভাগ হিন্দু বা মুসলমানদের সমর্থন না পাওয়া যায় তবে সেই প্রস্তাব স্থগিত থাকবে । এইভাবে গণতান্ত্রিক ও সার্বিক ঐক্যমতের ভিত্তিতে জাতীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব কংগ্রেস পরিচালনা করতেন ।


 ১৮. জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠার পর থেকে তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতাগুলি আলোচনা করো । 

উঃ । জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার প্রথম থেকেই কংগ্রেসের মধ্যে নানা সাংগঠনিক দুর্বলতা ছিল । ভারতীয় সমাজের সব ধরনের মানুষ কংগ্রেসের আওতায় ছিল না । লিঙ্গগত ও শ্রেণিগত প্রতিনিধি সমান ছিল না । কংগ্রেসের আদি নেতৃত্বের মানুষজন ছিলেন পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত ও সম্মানীয় পেশার । ফলে তাঁরা নিম্নবর্গের মানুষজনের অভাব অভিযোগকে সেভাবে সংগঠনের বৃত্তে আনতে চাননি । মুখে সর্বভারতীয় বলে দাবি করা হলেও বাস্তবে বোম্বাই , মাদ্রাজ ও বাংলা প্রেসিডেন্সির কিছু শিক্ষিত , ব্যবসায়ী ও জমিদার শ্রেণিই ছিলেন কংগ্রেসের প্রধান স্তম্ভ । এছাড়া নেতৃত্বের মধ্যে উচ্চবর্গীয় হিন্দুরাই ছিলেন সংখ্যাগরিষ্ঠ , তাঁরা নিজেরাই নিজেদের জাতির প্রতিনিধি হিসেবে প্রচার করে গৌরববোধ করতেন । এর ফলস্বরূপ সামাজিক ও সম্প্রদায়গতভাবে জাতীয় কংগ্রেসের কর্মসূচিগুলি প্রকৃত জাতীয় চরিত্র হারিয়ে ফেলে ।


১৯. মহারাষ্ট্রে কীভাবে সমস্ত বিপ্লৰী কার্যকলাপ সংগঠিত হয় ? 

উঃ । ভারতের বিপ্লবী আন্দোলনের অন্যতম ধাত্রীভূমি ছিল মহারাষ্ট্র । ১৮৭৬-৭৭ খ্রিস্টাব্দে মহারাষ্ট্রে বাসুদেও বলবস্তু ফাদকে সাধারণ মানুষদের নিয়ে একটি সংগঠন তৈরি করেন । ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে অর্থের প্রয়োজনে ফাদকে তাঁর দলকে ডাকাতি করতে পাঠান । শেষ অবধি ফাদকে ধরা পড়েন ও তাঁর সশস্ত্র বিদ্রোহের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয় । এরপরও মহারাষ্ট্রে বিভিন্ন সমিতি ও আখড়ার মাধ্যমে বিপ্লবী কার্যকলাপ চলতে থাকে । বাল গঙ্গাধর তিলক প্রকাশ করেন ‘ কেশরী ’ ও ‘ মারাঠা ' পত্রিকা । গণপতি ও শিবাজি উৎসব দ্বারা মানুষ অনুপ্রাণিত হয় । ' আর্যবান্ধব সমাজ -এর মতো গুপ্ত সমিতি মহারাষ্ট্রের ছাত্র - যুবকদের মনে বিপ্লবী চেতনা গড়ে তোলে । 


২০. চরমপন্থীদের নেতৃত্বে কীভাবে জাতীয়তাবাদী প্রতিবাদ গড়ে ওঠে ? 

উঃ । লর্ড কার্জনের কয়েকটি প্রশাসনিক সংস্কার ও পদক্ষেপের বিরুদ্ধে চরমপন্থীদের নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী প্রতিবাদ গড়ে ওঠে । ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে আইন করে কার্জন পৌরসভার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সংখ্যা কমিয়ে দেন । ১৯০৪ - এ আইন করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করা হয় ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপর নজরদারি কঠোর করা হয় । এছাড়া ঔপনিবেশিক সরকার ভারতীয়দের স্বশাসনের অযোগ্য ‘ পৌরুষহীন ’ জাতি বলে বর্ণনা করত । এর বিরোধিতা করে চরমপন্থীরা বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক ব্যক্তিদের জাতীয় আদর্শ বলে তুলে ধরেন । মহারাষ্ট্রে তিলকের নেতৃত্বে ‘ শিবাজি উৎসব ’ প্রচলিত হয় । এর পাশাপাশি শরীরচর্চার উদ্যোগ নেওয়া হয় । বাংলার বিভিন্ন জায়গায় চরমপন্থী নেতৃত্ব আখড়া , ব্যায়ামগার তৈরি করে কুস্তি , লাঠিখেলা , ছোরা , তরবারি প্রভৃতি চালানো শেখাতে থাকেন । এইভাবে চরমপন্থী নেতৃত্ব ও তাঁদের আন্দোলন নানাভাবে জাতীয়তাবাদী প্রতিবাদ গড়ে তোলেন । 


২১. ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় কংগ্রেসের সুরাট অধিবেশনের তাৎপর্য কী ছিল ? 

উঃ । ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় কংগ্রেসের সুরাট অধিবেশনের তাৎপর্য ছিল — সুরাট অধিবেশনে নরমপন্থী বনাম চরমপন্থী দ্বন্দ্ব চূড়ান্ত রূপ নেয় । দুটি গোষ্ঠী পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় । এর ফলস্বরূপ জাতীয় কংগ্রেসে ভাঙন দেখা দেয় । কংগ্রেসের ভাবমূর্তি মলিন এবং জাতীয় কংগ্রেস সাময়িকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে । সুরাট অধিবেশনের ফলশ্রুতিতে ভারতীয় রাজনীতিতে চরমপন্থী মতাদর্শের আত্মপ্রকাশ ঘটে ।


  রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তরঃ

 ১. ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সূচনাপর্ব আলোচনা করো । 

উঃ । ঊনবিংশ শতকের শেষ দিকে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল । জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার পিছনে অবসরপ্রাপ্ত ইংরেজ কর্মচারী অ্যালান অক্টোভিয়ান হিউম এর উদ্যোগ ছিল । হিউম তার কাজের সূত্রে গোটা উপমহাদেশ ঘুরেছিলেন । সেই সুবাদে বিভিন্ন প্রদেশের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল । সেই সময় নানা ঘটনায় ভারতীয়দের মধ্যে ব্রিটিশ বিরোধী ক্ষোভের প্রকাশ দেখা যায় । ফলে রাজনৈতিকভাবে উদারমনা হিউম চেয়েছিলেন এমন একটি সংগঠন ভারতীয়রা গড়ে তুলুক যা তাদের স্বার্থরক্ষা করবে । এই উদ্দেশ্য হিউম বিভিন্ন ভারতীয় নেতৃবৃন্দকে একসঙ্গে আলোচনার জন্য বসতে বলেন । ফলস্বরূপ ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে বোম্বাইতে গোকুলদাস তেজপাল সংস্কৃত কলেজে একটি অধিবেশন বসে । এটিই ছিল জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশন । এই অধিবেশনের সভাপতি ছিলেন উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় । 


২. বঙ্গভঙ্গ বিরোধী স্বদেশি আন্দোলন প্রকৃত গণআন্দোলন রূপে গড়ে উঠতে ব্যর্থ হয় কেন ? 

উঃ । বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে বঙ্গভঙ্গ রদ করার যে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে তা ক্রমেই স্বদেশি আন্দোলনে পরিণত হয় । কিন্তু এই আন্দোলন প্রকৃত গণআন্দোলনে পরিণত হতে পারেনি । কারণ আন্দোলনের অধিকাংশ নেতা ছিলেন বড়ো শহরের শিক্ষিত ভদ্রলোক গোষ্ঠীর মানুষ । ফলে স্বদেশি নেতৃত্ব জনগণের উপযোগী কোনো সামাজিক , সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক কর্মসূচি হাজির করতে ব্যর্থ হন । এছাড়া স্বদেশি জিনিস ব্যবহারের জন্য গরিবদের ওপর জুলুম করা হতো । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্বদেশি দ্রব্যের দাম বেশি হওয়ায় উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি তা কিনলেও গরিব জনগণের তা কেনার ক্ষমতা ছিল না । পাশাপাশি স্বদেশি নেতৃত্ব যখন শ্রমিক ধর্মঘটের আয়োজন করতেন তা থেকে হিন্দুস্থানি ও বাগিচা শ্রমিকরা বাদ পড়ে যেতেন । ফলে দরিদ্র কৃষক ও সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষ স্বদেশি আন্দোলনে সামিল হতে পারেননি । এছাড়া বেশ কিছু চরমপন্থী নেতা স্বদেশি আন্দোলনে ধর্মীয় প্রতীক ও দেবদেবীর ছবি ব্যবহার করেন । এই প্রসঙ্গে হিন্দু ঝোঁক ক্রমেই বেড়ে চলে । ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান ও বৈশব কৃষকরা এই আন্দোলনের সঙ্গে মানসিকভাবে যুক্ত হতে পারেনি । 


৩. বঙ্গভঙ্গ কী ? তার বিবরণ দাও । 

উঃ । বাংলায় ব্রিটিশ শাসনের সমালোচক ও বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে দুর্বল করার উদ্দেশ্যে লর্ড কার্জন বাংলাভাগের যে পরিকল্পনা করেন ইতিহাসে তা ‘ বঙ্গভঙ্গ ’ নামে পরিচিত । উনবিংশ শতকে বাংলা । প্রেসিডেন্সির ভৌগোলিক সীমানা ছিল বিশাল । ওই অঞ্চলে সুষ্ঠুভাবে প্রশাসনিক তদারকি ক্রমেই । ব্যয়বহুল ও অসুবিধাজনক হয়ে পড়ায় এর বিভাজন নিয়ে প্রশাসনিক আলোচনা শুরু হয় । ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে আসামকে স্বতন্ত্র অঞ্চল রূপে বাংলা থেকে আলাদা করে দেওয়া হয় । ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে কার্জন দেখেন বাংলার জনসংখ্যা ৭ কোটি ৮০ লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে ফলে তড়িঘড়ি বাংলা বিভাজনের উদ্যোগ । নেন কার্জন । ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৯ জুলাই সরকারিভাবে বাংলা বিভাজনের পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয় । ওই বছর ১৬ অক্টোবর ওই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত করা হয় । ঔপনিবেশিক সরকার প্রশাসনিক । সুবিধার যুক্তি দেখিয়ে বাংলা ভাগ করার কথা বললেও মনে করা হয় ঐক্যবদ্ধ বাংলা ও বাঙালিদের রাজনৈতিক বিরোধিতার সম্ভাবনাকে দুর্বল করে দিতেই বাংলা বিভাজন করা হয়েছিল । আদতে বাংলা ভাগের উদ্যোগ ব্রিটিশ সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোয়নি । বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন বাঙালি সম্প্রদায় ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল । বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ গড়ে ওঠে । ফলে ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয় । ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় । 


৪. বাংলায় বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ এর বিবরণ দাও । 

উঃ । বাংলাতে শরীরচর্চার প্রতিষ্ঠানগুলিকে কেন্দ্র করে বিপ্লবী কার্যকলাপ সংগঠিত হতে শুরু করে । ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় তিনটি ও মেদিনীপুরে একটি দল তৈরি হয় । এদের মধ্যে অন্যতম ছিল সতীশচন্দ্র বসু প্রতিষ্ঠিত ‘ অনুশীলন সমিতি ’ । এই রিপ্লবী সমিতিগুলির কার্যকলাপ গোপনে চলত । ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে পুলিনবিহারী দাসের নেতৃত্বে ঢাকা অনুশীলন সমিতি তৈরি হয় ‘ যুগান্তর পত্রিকা ’ হয়ে ওঠে বাংলায় বিপ্লবীদের মুখপত্র । অর্থ জোগাড় করতে স্বদেশি ডাকাতির পাশাপাশি বিপ্লবীরা বোমা বানাতে শুরু করেন । কলকাতার মানিকতলায় বোমা বানানোর কারখানা তৈরি হয় । ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ৩০ এপ্রিল বাংলার অত্যাচারী প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে মারার উদ্যোগ নেন ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকি । বাংলায় যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ( বাঘা যতীন ) জার্মানি থেকে অস্ত্র আনিয়ে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পরিকল্পনা করেন । কিংসফোর্ডকে মারার উদ্যোগ ব্যর্থ হওয়ার পর সরকার বিপ্লবী আন্দোলনের প্রতি চরম দমনপীড়ন চালাতে থাকেন । মানিকতলার বোমা কারখানাটির সন্ধান পান ব্রিটিশ প্রশাসন । বিভিন্ন বিপ্লবী নেতাকে গ্রেফতার করে মৃত্যুদণ্ড বা কারাদণ্ড দেওয়া হয় । এর ফলে বাংলায় বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বড়োসড়ো ধাক্কা খায় । 



























No comments:

Post a Comment