ভারতের সমাজ, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির কয়েকটি ধারা: খ্রিস্টীয় সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতক সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর | class 7 history question answer|
একটি বাক্যে উত্তর দাও:
1. খ্রিস্টীয় সপ্তম-অষ্টম শতকের দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কেন্দ্রের নাম লেখো।
উত্তর: খ্রিস্টীয় সপ্তম-অষ্টম শতকের দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কেন্দ্রের নাম থানেসর এবং কনৌজ।
2. 'রৌণক' কাদের বলা হয়?
উত্তর: খ্রিস্টীয় সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতকের ভারতীয় ক্ষমতাশালী গোষ্ঠীর লোকেরা 'রৌণক' নামেও পরিচিত হতেন। সমাজের
3. কোন্ সময়ে ইউরোপে সামন্ত ব্যবস্থায় ভাঙন শুরু হয়েছিল?
উত্তর: খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ-চতুর্দশ শতকে ইউরোপে সামন্ত ব্যবস্থায় ভাঙন শুরু হয়েছিল।
4. তাঙ্কোরের বিখ্যাত মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা কে?
উত্তর: তাঞ্জোরের বিখ্যাত মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা চোল শাসক রাজরাজ।
5. চোল রাজ রাজেন্দ্র কোথায় বিখ্যাত মন্দির নির্মাণ করেছিলেন?
উত্তর: চোল রাজ রাজেন্দ্র গঙ্গাই কোন্ডচোলপুরমে বিখ্যাত মন্দির নির্মাণ করেছিলেন।
6. চোল রাজ্যের প্রধান কে ছিলেন?
উত্তর: চোল রাজ্যের প্রধান ছিলেন রাজা।
7. চোল রাজ্যে গ্রামের শাসনব্যবস্থার তদারকির দায়িত্বে কে ছিল?
উত্তর: চোল রাজ্যে গ্রামের শাসনব্যবস্থার তদারকির দায়িত্বে ছিল গ্রাম-পরিষদ বা উর।
৪. চোল রাজ্যে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য কোন্ পরিষদ গঠিত হয়েছিল?
উত্তর: চোল রাজ্যে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য নগরম পরিষদ গঠিত হয়েছিল।
9. 'চেঙি' কথাটির অর্থ কী?
উত্তর: 'চেটি' কথাটির অর্থ হল বণিক।
10. পাল-সেন যুগে বাংলায় অর্থনীতির মূল ভিত্তি কী ছিল।
উত্তর: পাল-সেন যুগে বাংলায় অর্থনীতির মূল ভিত্তি ছিল কৃষি, শিল্প এবং বাণিজ্য।
11. পাল-সেন যুগে জমির মূল মালিক কে ছিলেন?
উত্তর: পাল-সেন যুগে জমির মূল মালিক ছিলেন রাষ্ট্র বা রাজা।
12. পাল-সেন যুগে রাজারা উৎপন্ন ফসলের কতখানি কৃষকদের কাছ থেকে কর হিসেবে সংগ্রহ করতেন?
উত্তর: পাল-সেন যুগে রাজারা উৎপন্ন ফসলের এক-ষষ্ঠাংশ ভাগ কৃষকদের কাছ থেকে কর হিসেবে সংগ্রহ করতেন।
13. বাঙালিরা কোন্ বিদেশি শক্তির কাছ থেকে খাদ্যে আলুর ব্যবহার করতে শিখেছিল?
উত্তর: বাঙালিরা পোর্তুগিজদের কাছ থেকে খাদ্যে আলুর ব্যবহার করতে শিখেছিল।
15. পাল-সেন যুগে সমাজের উঁচুতলার মানুষদের মধ্যে কোন্ ভাষা প্রচলিত ছিল?
উত্তর: পাল-সেন যুগে সমাজের উঁচুতলার মানুষদের মধ্যে সংস্কৃত ভাষা প্রচলিত ছিল।
16. চক্রপাণিদত্ত রচিত প্রসিদ্ধ বইটির নাম লেখো।
উত্তর: চক্রপাণিদত্ত রচিত প্রসিদ্ধ বইটির নাম হল 'চিকিৎসা- সংগ্রহ'।
17. কবি সন্ধ্যাকর নন্দী কার আমলে 'রামচরিত' কাব্য রচনা করেছিলেন।
উত্তর: কবি সন্ধ্যাকর নন্দী পাল রাজা মদনপালের আমলে 'রামচরিত' কাব্য রচনা করেছিলেন।
18. 'রামচরিত'-এর কাহিনি কোন্ মহাকাব্য অনুযায়ী রচিত।
উত্তর: 'রামচরিত'-এর কাহিনি 'রামায়ণ' মহাকাব্য অনুযায়ী রচিত।
19. রামপালের রাজধানী কোথায় ছিল?
উত্তর: রামাবতী নগরে রামপালের রাজধানী ছিল।
20. 'রামচরিত'-এ রামায়ণের সীতা উদ্ধারের কাহিনির সঙ্গে কোন ঘটনার তুলনা করা হয়েছে?
উত্তর: 'রামচরিত'-এ রামায়ণের সাঁতা উদ্ধারের কাহিনির সঙ্গে রামপালের বরেন্দ্রভূমি উদ্ধার ঘটনার তুলনা করা হয়েছে।
21. পাল যুগে কোন্ বৌদ্ধ ধর্মমতের উদ্ভব ঘটেছিল?
উত্তর: পাল যুগে বজ্রযান বা তান্ত্রিক বৌদ্ধ ধর্মমতের উদ্ভব ঘটেছিল।
22. বজ্রযান ছাড়া পাল যুগে অন্য কোন্ বৌদ্ধ ধর্মমতের উদ্ভব ঘটে?
উত্তর: বজ্রযান ছাড়া পাল যুগে সহজযান ও কালচক্রযান বৌদ্ধ ধর্মমতের উদ্ভব ঘটে।
23. 'নির্বাণ' কথার অর্থ কী? [দীঘা ডি জে শিক্ষাসদন]
উত্তর: বৌদ্ধ ধর্মমতে 'নির্বাণ' কথার অর্থ হল মুক্তি।
24. নালন্দা বৌদ্ধবিহার কোন্ আমলে গড়ে উঠেছিল?
উত্তর: নালন্দা বৌদ্ধবিহার গুপ্ত সম্রাটদের আমলে গড়ে উঠেছিল।
25. বিক্রমশীল মহাবিহারের বিখ্যাত এক মহাচার্যের নাম লেখো।
উত্তর: বিক্রমশীল মহাবিহারের বিখ্যাত এক মহাচার্যের নাম হল দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান।
26. খ্রিস্টীয় অষ্টম শতকে পৃথিবীর বৃহত্তম বৌদ্ধকেন্দ্র কোথায় ছিল? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
উত্তর: খ্রিস্টীয় অষ্টম শতকে পৃথিবীর বৃহত্তম বৌদ্ধকেন্দ্র ছিল ইন্দোনেশিয়ায়।
27. বিক্রমশীল মহাবিহারকে কোন্ অভিযানকারীরা ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছিল?
উত্তর: বিক্রমশীল মহাবিহারকে তুর্কি অভিযানকারীরা ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছিল।
28. প্রাচ্য শিল্পরীতির পূর্বসূরি হিসেবে কোন্ শিল্পকলাকে চিহ্নিত করা হয়?
উত্তর: প্রাচ্য শিল্পরীতির পূর্বসূরি হিসেবে গুপ্তযুগের শিল্পকলাকে চিহ্নিত করা হয়।
29. পাল আমলের একটি উল্লেখযোগ্য বিহারের নাম লেখো।
উত্তর: পাল আমলের একটি উল্লেখযোগ্য বিহার হল পাহাড়পুরের সোমপুরী বিহার।
30. পাল আমলের ভাস্কর্যের সর্বোৎকৃষ্ট নিদর্শন কোথায় পাওয়া গেছে?
উত্তর: পাল আমলের ভাস্কর্যের সর্বোৎকৃষ্ট নিদর্শন পাওয়া গেছে পাহাড়পুর প্রত্নক্ষেত্রে।
31. পাল যুগে বরেন্দ্রভূমির দুজন প্রসিদ্ধ শিল্পীর নাম লেখো।
উত্তর: পাল যুগে বরেন্দ্রভূমির দুজন প্রসিদ্ধ শিল্পীর নাম হল ধীমান এবং তাঁর ছেলে বীটপাল।
32. 'রাজ্ঞী' কথাটির অর্থ কী? উত্তর: 'রাজ্ঞী' কথাটির অর্থ হল রাজমহিষী।
33. লক্ষ্মণসেনের পূর্ববর্তী সেন রাজারা কোন্ ধর্মমতে বিশ্বাসী ছিলেন? বিশ্বাসী ছিলেন।
উত্তর: লক্ষ্মণসেনের পূর্ববর্তী সেন রাজারা শৈব ধর্মমতে
34. সেন যুগে সংকর হিসেবে সমাজে কারা পরিচিত ছিলেন?
উত্তর: সেন যুগে সংকর হিসেবে সমাজে অব্রাহ্মণেরা পরিচিত ছিলেন।
35. কবি শ্রীধর দাস সংকলিত গ্রন্থের নাম কী?
উত্তর: কবি শ্রীধর দাস সংকলিত গ্রন্থের নাম 'সদুক্তিকর্ণামৃত'।
36. বল্লালসেনের লেখা দুটি গ্রন্থের নাম লেখো। [পানিপারুল মুক্তেশ্বর হাই স্কুল]
উত্তর: বল্লালসেনের লেখা দুটি গ্রন্থের নাম হল 'দানসাগর' ও 'অদ্ভুতসাগর'।
37. প্রাচীন বাংলায় কৃষকের কৃষি সম্পর্কিত জ্ঞানের উৎস কী ছিল?
উত্তর: প্রাচীন বাংলায় কৃষকের কৃষি সম্পর্কিত জ্ঞানের উৎস ছিল ডাক ও খনার বচন।
38. বাঙালি বৌদ্ধচার্যদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত এবং শ্রেষ্ঠ পণ্ডিত কে ছিলেন?
উত্তর: বাঙালি বৌদ্ধচার্যদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত এবং শ্রেষ্ঠ পণ্ডিত ছিলেন দীপঙ্কর-শ্রীজ্ঞান (অতীশ)।
39. কার বাড়ি 'নাস্তিক পন্ডিতের ভিটা' নামে পরিচিত? [বসিরহাট টাউন হাই স্কুল]
উত্তর: দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান (অতীশ)-এর বাড়ি 'নাস্তিক পন্ডিতের ভিটা' নামে পরিচিত।
40. আদি বাংলা ভাষার উদাহরণ পাওয়া যায় কোন্ লেখায়? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
উত্তর: চর্যাপদের লেখায় আদি বাংলা ভাষার উদাহরণ পাওয়া যায়।
41. ব্রহ্মদেয় ব্যবস্থা কাকে বলে?
উত্তর: দক্ষিণ ভারতে চোল রাজ্যে ব্রাহ্মণদের নিষ্কর জমিদানের ব্যবস্থা ব্রহ্মদেয় ব্যবস্থা নামে পরিচিত।
42. পাল যুগের কয়েকজন সিদ্ধাচার্যের নাম লেখো।
উত্তর: পাল যুগের কয়েকজন বিখ্যাত সিদ্ধাচার্যের নাম হল লুইপাদ, সরহপাদ, কাহ্নপাদ, ভুসুকুপাদ প্রমুখ।
43. সামন্ত ব্যবস্থা বলতে কী বোঝ? [কাশীনগর হাই স্কুল]
উত্তর: রাজস্ব আদায় ও শাসনের অধিকার স্তরে স্তরে ভাগ হয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাকে বলে সামন্ত ব্যবস্থা।
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর মান 2 দু/তিনটি বাক্যে উত্তর দাও:
1. সামন্ত কাদের বলা হয়?
উত্তর: খ্রিস্টীয় সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতকে ভারতীয় সমাজে এক বিশেষ ক্ষমতাশালী গোষ্ঠীর উদ্ভব ঘটে। এরা ছিল উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারী এবং এদের নগদে বেতনের পরিবর্তে জমির রাজস্ব আদায়ের অধিকার দেওয়া হত। এরাই সামন্ত নামে পরিচিত হত।
2. সামন্তপ্রভুরা কী কী কাজ করতেন?
উত্তর: সামন্তপ্রভুরা কখনোই পরিশ্রম করে উৎপাদন করতেন না। তাঁরা তাঁদের দখলিকৃত গ্রাম থেকে রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি গ্রামের শাসন এবং বিচারকার্য সম্পাদনার কাজ করতেন।
3. দক্ষিণ ভারতে কারা মন্দির কর্তৃপক্ষকে নিষ্কর জমি দান করতেন?
উত্তর: দক্ষিণ ভারতের রাজশক্তিগুলি বহু মন্দির তৈরি করেন। সেখানকার রাজা, ব্যবসায়ী ও অভিজাতরা এই মন্দির কর্তৃপক্ষকে নিষ্কর জমি দান করতেন।
4. দক্ষিণ ভারতে মন্দির সংলগ্ন অঞ্চলে কারা বসবাস করতেন।
উত্তর: দক্ষিণ ভারতে রাজা, ব্যবসায়ী ও অভিজাতরা মন্দির কর্তৃপক্ষকে নিষ্কর জমি দান করতেন। এই মন্দির সংলগ্ন অঞ্চলে পুরোহিত, মালাকার, রাঁধুনি, গায়ক, নর্তক-নর্তকী প্রমুখ বসবাস করতেন।
5. উর এবং নাচু কী কাজ সম্পাদন করত।
উত্তর: উর এবং নাড়ু হল চোল রাজ্যের দুই স্থানীয় সভা। এই দুই স্থানীয় সভা স্বায়ত্তশাসন, বিচার এবং রাজস্ব বা কর সংগ্রহের দায়িত্ব পালন করত।
6. ব্রাহ্মণদের ব্রহ্মদেয় জমি দানের ফলে কী পরিবর্তন ঘটেছিল।
উত্তর: চোল রাজ্যে ব্রাহ্মণদের কিছু ব্রহ্মদেয় অর্থাৎ নিষ্কর জমি দান করা হত। কাবেরী উপত্যকায় ব্রাহ্মণদের এই ব্রহ্মদেয় জমি দানের ফলে ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের নেতৃত্বে বন্ধু নতুন নতুন গ্রামের পত্তন ঘটেছিল।
7. দক্ষিণ ভারতের রাজারা কী কী উপাধি গ্রহণ করতেন?
উত্তর: দক্ষিণ ভারতের রাজারা অনেকেই নিজেদের উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন উপাধিতে ভূষিত করতেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় তাঁরা 'মহারাজা-অধিরাজ', 'ত্রিভুবন-চক্রবর্তীন' ইত্যাদি উপাধি গ্রহণ করেছিলেন।
৪. পাল-সেন যুগের প্রধান ফসলগুলির নাম লেখো। [নবদ্বীপ হিন্দু স্কুল)
উত্তর: পাল-সেন যুগের সমাজ ছিল কৃষিনির্ভর। এই যুগের প্রধান ফসলগুলি ছিল ধান, সরষে এবং নানা রকমের ফল, যেমন-আম, কাঁঠাল, কলা, ডালিম, খেজুর, নারকেল ইতাদি।
9. সন্ধ্যাকর নন্দী 'রামচরিত'-এ সীতার রূপ বর্ণনার মাধ্যমে কীসের বিবরণ দিয়েছেন?
উত্তর: সন্ধ্যাকর নন্দী পাল আমলে তাঁর বিখ্যাত 'রামচরিত' কাব্য রচনা করেছিলেন। তাঁর কাব্যে তিনি সাঁতার রূপ বর্ণনার মাধ্যমে বরেন্দ্রভূমি এবং তার চারপাশের এলাকার নদনদী, ফুলফল, গাছপালা, ফসল, বর্ষাকাল ইত্যাদির বিবরণ দিয়েছেন।
10. সিদ্ধাচার্য কাদের বলা হত? [বেলমা শ্রী শ্রী আর এন হাই স্কুল)
উত্তর: পাল যুগে মহাযান বৌদ্ধধর্মের সঙ্গে অন্যান্য দার্শনিক চিন্তাধারা মিলে গিয়ে বজ্রযান বা তান্ত্রিক বৌদ্ধমতের জন্ম। হয়েছিল। এই মতের নেতাদের বলা হত সিদ্ধাচার্য।
11. চর্যাপদ কী? [সরস্বতী বিদ্যা মন্দির]
উত্তর: চর্যাপদ হল খ্রিস্টীয় অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতকে লেখা বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যদের কবিতা ও গানের সংকলন। চর্যাপদে ব্যবহৃত ভাষা হল আদি বাংলা ভাষার নিদর্শন।
12. পাল যুগে কয়েকটি বৌদ্ধ জ্ঞানচর্চা কেন্দ্রের নাম লেখো।
উত্তর: পাল আমলের শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা এবং বিহারে বহু বৌদ্ধ জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র গড়ে উঠেছিল। এরকম কয়েকটি বিখ্যাত বৌদ্ধ জানষ্টার কেন্দ্র হল-নারদা, ওদত্তপুরী, বিক্রমশীল, সোমপুরী, জগদ্দল, 'বিক্রমপুরী ইত্যাদি।
13. বিক্রমশীল বৌদ্ধবিহারে কী কী বিষয়ে শিক্ষাদান করা হত?
উত্তর: পাল সম্রাট ধর্মপাল খ্রিস্টীয় অষ্টম শতকে মগধের উত্তরে বিক্রমশীল মহাবিহার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বিক্রমশীল বৌদ্ধবিহারে ব্যাকরণ, তর্কশাস্ত্র, দর্শন ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষাদান করা হত।
14 পাল আমলে কেন বেশি স্তূপ বানানো হয়েছিল? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
উত্তর: পাল রাজারা ছিলেন বৌদ্ধধর্মের পরম পৃষ্ঠপোষক। পাল রাজা ধর্মপাল, দেবপাল প্রমুখের প্রচেষ্টা ও উদ্যোগে বাংলার ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, বর্ধমান প্রভৃতি স্থানে বহু বৌদ্ধস্তূপ নির্মিত হয়।
15. বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের কোথায় বৌদ্ধস্তূপের নিদর্শন পাওয়া গেছে?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার ভরতপুর গ্রামে বৌদ্ধস্তূপের নিদর্শন পাওয়া গেছে। এই বৌদ্ধস্তূপ হল পাল আমলের স্থাপত্যের নিদর্শন।
16. সেন আমলে ব্রাহ্মণ্যধর্মে কোন্ দুই ধর্মের সংমিশ্রণ ঘটেছিল?
উত্তর: সেন যুগের রাজারা ব্রাহ্মণ্যধর্মকেই প্রাধান্য দিতেন। সেন আমলে ব্রাহ্মণ্যধর্মে বৈদিক ধর্ম ও পৌরাণিক ধর্মের সংমিশ্রণ ঘটেছিল।
17. সেন আমলের বিখ্যাত কবিদের নাম লেখো।
উত্তর: সেন আমলের সবচেয়ে বিখ্যাত কবি হলেন জয়দেব। এ ছাড়াও ধোয়ী, গোবর্ধন, উমাপতিধর এবং শরণ ছিলেন সেন আমলের বিখ্যাত কবি।
18. দীপঙ্কর-শ্রীজ্ঞান কোন্ কোন্ মহাবিহারের আচার্য ও অধ্যক্ষ ছিলেন?
উত্তর: ভারত এবং বহির্ভারতের মধ্যে পারস্পরিক নির্ভরশীলতার অন্যতম উদাহরণ হল দীপঙ্কর-শ্রীজ্ঞান। তিনি সম্ভবত বিক্রমশীল, ওদন্তপুরী এবং সোমপুরী মহাবিহারের আচার্য ও অধ্যক্ষ ছিলেন।
19. চর্যাপদ কেন পাল আমলে বাংলার সামাজিক ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
উত্তর: চর্যাপদ হল খ্রিস্টীয় অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতকে লেখা বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যদের কবিতা ও গানের সংকলন। চর্যাপদের মধ্যে দিয়ে পাল যুগে বাংলার সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ছবি ফুটে ওঠে। তাই চর্যাপদ পাল আমলে বাংলার সামাজিক ইতিহাসের উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়।
20. জনসমর্থনের নিরিখে বাংলার পাল ও সেন শাসনের তুলনা করো।
উত্তর: পাল আমল
[a] চারশো বছরেরও বেশি স্থায়ী হয়। [b] জনগণের সমর্থনে গোপাল ক্ষমতাসীন হন। [c] সমাজে পাল রাজারা নিজেদের গ্রহণযোগ্য করে তোলেন।
সেন আমল
a] একশো বছরের কিছু বেশি স্থায়ী হয়। [b] জনগণের সমর্থনে বিজয়সেন ক্ষমতায় আসেন। [c] সেন রাজারা সমাজে তেমন গ্রহণযোগ্য ছিলেন না।
চার/পাঁচটি বাক্যে উত্তর দাও:
1 টীকা লেখো: চর্যাপদ।
উত্তর: খ্রিস্টীয় অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতকে লেখা বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যদের কবিতা ও গানের সংকলন হল চর্যাপদ। পাল যুগের শেষ দিক থেকে বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যরা প্রাচীন বাংলা ভাষায় চর্যাপদ লেখা শুরু করেন। এককথায় বলা যায়, চর্যাপদে যে ভাষা রয়েছে তা একেবারেই আদি বাংলা ভাষার নিদর্শন। লুইপাদ, সরহপাদ, কাহ্নপাদ, ভুসুকুপাদ প্রমুখ চর্যাপদকে কবিতায় ভরিয়ে তোলেন। চর্যাপদের মধ্যে দিয়ে সেই সময়ের বাংলার পরিবেশ ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ছবি ফুটে ওঠে।
2. পাল রাজাদের বৌদ্ধধর্মের প্রতি অনুরাগ বাংলার সংস্কৃতিতে কী প্রভাব ফেলেছিল বলে তোমার মনে হয়, বিশ্লেষণ করো।
উত্তর: পাল রাজাদের বৌদ্ধধর্মের প্রতি অনুরাগ বাংলার সংস্কৃতির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটিয়েছিল। পাল রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা ও বিহারে শিক্ষাদীক্ষায় বৌদ্ধ প্রভাব অনেক বেশি পড়েছিল। নালন্দা, ওদন্তপুরী, বিক্রমশীল, সোমপুরী, জগদ্দল, বিক্রমপুরী প্রভৃতি বৌদ্ধবিহারগুলি সেকালের শিক্ষাদীক্ষায় বড়ো ভূমিকা নিয়েছিল। বিখ্যাত বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যদের মধ্যে শান্তরক্ষিত, শান্তিদেব, কম্বলপাদ, শবরীপাদ, কাহ্নপাদ, গোরক্ষনাথ এবং অতীশ দীপঙ্কর ছিলেন উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া চর্যাপদ-সহ ভাষা-সাহিত্য, স্থাপত্য-ভাস্কর্য ও চিত্রশিল্পে বৌদ্ধধর্মের বিশেষ প্রভাব পড়েছিল। পাল আমলে স্থাপত্য নিদর্শনগুলির মধ্যে বৌদ্ধস্তূপ ও বিহার ছিল প্রধান। পোড়ামাটির শিল্পসামগ্রী- গুলিতে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সুখ-দুঃখ, সমাজজীবন ও ধর্মবিশ্বাস ইত্যাদি ফুটে উঠত। বৌদ্ধধর্মের পান্ডুলিপি অলংকরণ করতে মিনিয়েচার বা অণুচিত্র আঁকার চল জনপ্রিয় হয়েছিল।
[3] সামন্ততান্ত্রিক সমাজকাঠামোর আকৃতি কেন ত্রিভুজাকার হয় বলে তোমার মনে হয়? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন] উত্তর: সমাধানসহ পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নাবলির 'বিশদে উত্তর দাও' বিভাগের 1 নং প্রশ্নের প্রথম অংশের উত্তরটি দ্যাখো।
No comments:
Post a Comment