বিপ্লবী আদর্শ নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর |নবম শ্রেণির ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর | Class 9 history 2nd chapter short & brought question answer|
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -1
1. ফ্রান্সে ডাইরেক্টরি শাসনে কতজন ডাইরেক্টর ছিলেন?
উঃ ফ্রান্সে ডাইরেক্টরি শাসনে ৫ জন ডাইরেক্টর ছিলেন।
2. ফ্রান্সের প্রথম কনসাল কে ছিলেন?
উঃ ফ্রান্সের প্রথম কনসাল ছিলেন নেপোলিয়ন বোনাপার্ট।
3. কনসুলেটের সংবিধানের রচয়িতা কে?
উঃ নেপোলিয়নের নির্দেশে সংবিধান বিশারদ আবে সিয়েস কনসুলেটের সংবিধান রচনা করেন। এটি অষ্টম বছরের সংবিধান নামেও পরিচিত।
4. কবে, কাদের মধ্যে পিরামিডের যুদ্ধ হয়?
উঃ ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের মধ্যে পিরামিডের যুদ্ধ হয়।
5. নেপোলিয়নের সেনাদল কী নামে পরিচিত ছিলেন ?
উঃ নেপোলিয়নের সেনাদল ‘গ্রাদ আর্মি' নামে পরিচিত ছিলেন।
6. কে, কবে ইউনিভার্সিটি অব ফ্রান্স' প্রতিষ্ঠা করেন?
উঃ নেপোলিয়ন ১৮০৮ খ্রিস্টাব্দে ইউনিভার্সিটি অব ফ্রান্স' প্রতিষ্ঠা করেন ৷
7. কে, কবে ও কোথায় নেপোলিয়নের অভিষেক সম্পন্ন করেন?
উঃ পোপ সপ্তম পায়াস ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দের ২ ডিসেম্বর নতোরদাম গির্জায় নেপোলিয়নের অভিষেক সম্পন্ন করেন ৷
৪. কে, কবে স্কলান-এর সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য হয় ?
উঃ জেনা ও আওয়ারস্টার্ট-এর যুদ্ধে ফ্রান্সের কাছে পরাজিত হয়ে প্রাশিয়া ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে স্কলব্রান-এর সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য হয়।
9. তালির কে ছিলেন ?
উঃ তালির ছিলেন ফরাসি বিপ্লবের যুগের উল্লেখযোগ্য বিপ্লবী নেতা। যিনি নেপোলিয়নের শাসনকালে ফ্রান্সের বিদেশ দফতরের দায়িত্ব সামলান।
10. ফ্রান্সে ডাইরেক্টরির শাসনকালের সময়সীমা উল্লেখ করো।
উঃ ফ্রান্সে ডাইরেক্টরির শাসনকালের সময়সীমা হল ১৭৯৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত।
11. কবে, কাদের মধ্যে ক্যাম্পো-ফর্মিও-এর সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়?
উঃ ১৭৯৭ খ্রিস্টাব্দে (১৭ অক্টোবর) ফ্রান্স ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে ক্যাম্পো-ফর্মিও-এর সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।
12. পিরামিডের যুদ্ধ এবং নীলনদের যুদ্ধে কারা জয় লাভ করে ?
উঃ পিরামিডের যুদ্ধে ফ্রান্স এবং নীলনদের যুদ্ধে ইংল্যান্ড জয় লাভ করে।
13. নেপোলিয়ন কত খ্রিস্টাব্দে প্রথম কনসাল নিযুক্ত হন ?
উঃ নেপোলিয়ন ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে প্রথম কনসাল নিযুক্ত হন।
14. কবে নেপোলিয়ন নিজেকে আজীবন কনসাল হিসেবে ঘোষণা করেন ?
উঃ ১৮০২ খ্রিস্টাব্দে সংবিধান সংশোধন করে নেপোলিয়ন নিজেকে আজীবন কনসাল হিসেবে ঘোষণা করেন।
15. ১৮০১ খ্রিস্টাব্দ ও ১৮০২ খ্রিস্টাব্দ অস্ট্রিয়া ও ব্রিটেনের সঙ্গে কীভাবে যুক্ত লেখো।
উঃ ১৮০১ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়া ফ্রান্সের কাছে পরাজিত হয়ে লুনভিলের সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য হয় এবং ১৮০২ খ্রিস্টাব্দে অ্যামিয়েন্সের সন্ধি স্বাক্ষর করে ফ্রান্সের সঙ্গে ইংল্যান্ড তার বিরোধ মিটিয়ে নেয়।
16. নেপোলিয়ন কবে নিজেকে সম্রাট হিসেবে ঘোষণা করেন?
উঃ নেপোলিয়ন ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে নিজেকে সম্রাট হিসেবে ঘোষণা করেন।
17. নেপোলিয়নের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থের নাম কী ?
উঃ নেপোলিয়নের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থের নাম Napoleon on Napoleon।
18. নেপোলিয়ন কত খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের আইনসংহিতার সংকলন করেন ?
উঃ নেপোলিয়ন ১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের আইনসংহিতার সংকলন করেন।
19. করে কোড নেপোলিয়ন প্রচলিত হয় ?
উঃ ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে ‘কোড নেপোলিয়ন' প্রচলিত হয়।
20. ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে আইনসংহিতা সংকলন করেন কে?
উঃ ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে আইনসংহিতা সংকলন করেন সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ।
21. কাদের মধ্যে কনকর্ডাট/ধর্মবিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ?
উঃ ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন এবং পোপ সপ্তম পায়াসের মধ্যে (১৮০১ খ্রি.) কনকর্ডাট বা ধর্মবিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
22. 'ফরাসি সমাজের বাইবেল' কাকে বলা হয় ?
উঃ ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন ১৮০৪ খ্রিস্টাব্দে নতুন আইনবিধির প্রবর্তন করেন। ‘কোড নেপোলিয়ন' নামে পরিচিত এই আইনবিধি ‘ফরাসি সমাজের বাইবেল' নামে পরিচিত।
23. নেপোলিয়ন প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলি কী নামে পরিচিত?
উঃ নেপোলিয়ন প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলি লাইসি নামে পরিচিত।
24. কে 'ব্যাংক অব ফ্রান্স' প্রতিষ্ঠা করেন ? অথবা, ব্যাংক অব ফ্রান্স কে গঠন করেন
উঃ নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৮০০ খ্রি.) 'ব্যাংক অব ফ্রান্স’ প্রতিষ্ঠা করেন।
25. নেপোলিয়নকে কেন দ্বিতীয় জাস্টিনিয়ন বলা হয় ?
উঃ মধ্যযুগে রোমান সাম্রাজ্যের যুগে সম্রাট জাস্টিনিয়ান প্রথম বিভিন্ন আইন সংকলিত করে খ্যাতি অর্জন করেন। আধুনিক যুগে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়নও তাঁর ‘কোড নেপোলিয়ন’ প্রবর্তনের মাধ্যমে কৃতিত্বের পরিচয় দেন। এজন্য তাঁকে দ্বিতীয় জাস্টিনিয়ান বলা হয় ৷
26. লিজিয়ন অব অনার' কে চালু করেন ?
উঃ ‘লিজিয়ন অব অনার' চালু করেন ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন।
27. 'লিজিয়ন অব অনার' কাকে বলে? অথবা, 'লিজিয়ন অব অনার' কী ?
উঃ ‘লিজিয়ন অব অনার' হল নেপোলিয়ন কর্তৃক প্রবর্তিত ফ্রান্সের একটি বিশেষ রাষ্ট্রীয় সম্মান।
28. ফ্রান্সে ‘বিপ্লবের প্রতীক' কাকে বলা হয়েছে ?
উঃ ফ্রান্সে নেপোলিয়ন বোনাপার্টকে বিপ্লবের প্রতীক' বলা হয়েছে।
29. “আমিই বিপ্লব, আবার আমিই বিপ্লবকে ধ্বংস করেছি”–এটি কার উক্তি?
উঃ “আমিই বিপ্লব, আবার আমিই বিপ্লবকে ধ্বংস করেছি”– এই উক্তিটি হল নেপোলিয়নের।
30. নেপোলিয়নের যুগের মূল বৈশিষ্ট্য কী ছিল ?
উঃ নেপোলিয়নের যুগের মূল বৈশিষ্ট্য ছিল বিপ্লবী ভাবধারা ও রাজতান্ত্রিক আদর্শের সহাবস্থান।
31. 'বিপ্লবের তরবারি' রূপে কে পরিচিত?
উঃ ‘বিপ্লবের তরবারি' রূপে পরিচিত ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন।
32. নেপোলিয়ন ইউরোপের কোন তিনটি বৃহৎ শক্তিকে পরাজিত করেন ?
উঃ নেপোলিয়ন ইউরোপের তিনটি বৃহৎ শক্তি অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া ও রাশিয়াকে পরাজিত করেন।
33. নেপোলিয়ন নিজ ভগ্নীপতি মিউরাকে কোন্ দেশের সিংহাসনে বসান ?
উঃ নেপোলিয়ন নিজ ভগ্নীপতি মিউরাকে নেপলস্-এর সিংহাসনে বসান।
34. একজন রুশ সাহিত্যিকের নাম বলো।
উঃ একজন রুশ সাহিত্যিক হলেন লিও টলস্টয়।
35. কবে, কাদের নিয়ে ফ্রান্স-বিরোধী দ্বিতীয় শক্তিজোট গড়ে ওঠে?
উঃ ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে (১২ মার্চ) ইংল্যান্ড, রাশিয়া, অস্ট্রিয়া, নেপল্স, পোর্তুগাল ও তুরস্ককে নিয়ে ফ্রান্স-বিরোধী দ্বিতীয় শক্তিজোট গড়ে ওঠে।
36. মৈত্রী জোট-এ কোন্ তিন দেশ অন্তর্ভুক্ত ছিল?
উঃ মৈত্রী জোট-এ ইংল্যান্ড, অস্ট্রিয়া এবং রাশিয়া—এই তিন দেশ অন্তর্ভুক্ত ছিল।
37. নেপোলিয়ন স্পেনের কোন্ শাসককে ক্ষমতাচ্যুত করেন ?
উঃ নেপোলিয়ন স্পেনের বুরবোঁ রাজবংশের শাসক চতুর্থ চার্লস ও যুবরাজ ফার্দিন্যান্দকে ক্ষমতাচ্যুত করেন।
28. নেপোলিয়ন কাকে স্পেনের সিংহাসনে বসান ? অথবা, স্পেনের সিংহাসনে নেপোলিয়ন কাকে বসিয়েছিলেন ? অথবা, নেপোলিয়ন স্পেনের সিংহাসনে কাকে, কবে বসিয়েছিলেন ?
উঃ নেপোলিয়ন ১৮০৮ খ্রিস্টাব্দে স্পেন দখল করে নিজ ভ্রাতা জোসেফকে স্পেনের সিংহাসনে বসান।
39. কোন যুদ্ধে পরাজয় ছিল নেপোলিয়নের পতনের প্রথম ধাপ?
উঃ ঐতিহাসিক ডেভিড টমসনের মতে, স্পেনীয় যুদ্ধে পরাজয় ছিল নেপোলিয়নের পতনের প্রথম ধাপ।
40. 'ওয়ার অ্যান্ড পিস' গ্রন্থটি কার রচনা?
উঃ ‘ওয়ার অ্যান্ড পিস' গ্রন্থটি লিও টলস্টয়-এর রচনা।
41. কোন্ রুশ উপন্যাসে নেপোলিয়নের রাশিয়া অভিযানের সুন্দর বিবরণ রয়েছে?
উঃ লিও টলস্টয় রচিত 'ওয়ার অ্যান্ড পিস' উপন্যাসে নেপোলিয়নের রাশিয়া অভিযানের সুন্দর বিবরণ আছে।
42. নেপোলিয়ন কবে রাশিয়া আক্রমণ করে ?
উঃ নেপোলিয়ন ১৮১২ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়া আক্রমণ করে।
43. কোন্ গ্রন্থে নেপোলিয়নের রুশ অভিযানের বিবরণ পাওয়া যায় ?
উঃ লিও টলস্টয়-এর 'ওয়ার অ্যান্ড পিস' গ্রন্থে নেপোলিয়নের রুশ অভিযানের বিবরণ পাওয়া যায় ৷
44. ‘পোড়ামাটির নীতি' কী?
উঃ ‘পোড়ামাটির নীতি’ হল যুদ্ধের একপ্রকার রণকৌশল। এতে শত্রুদলের অগ্রগতির সময় নিজ দেশের সম্পদ ধ্বংস করে সেনাদের পিছু হটানো হয় ৷
45. নেপোলিয়নের বাহিনীর বিরুদ্ধে কে 'পোড়ামাটি নীতি' নিয়েছিলেন ?
উঃ নেপোলিয়ন বাহিনীর বিরুদ্ধে রুশ সেনাপ্রধান কুটুসফ(kutusoff) 'পোড়ামাটি নীতি' নিয়েছিলেন।
46. 'পোড়ামাটি নীতি' কোন রাষ্ট্র গ্রহণ করেছিলেন ?
উঃ রাশিয়া ফরাসি অভিযানের বিরুদ্ধে 'পোড়ামাটি নীতি' গ্রহণ করেছিল।
47. রাশিয়া কোন্ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে 'পোড়ামাটি নীতি' গ্রহণ করে ?
উঃ রাশিয়া নেপোলিয়নের ফরাসি সেনাবাহিনীর আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে 'পোড়োমাটি নীতি' গ্রহণ করে।
48. বোরোডিনোর যুদ্ধ কবে, কাদের মধ্যে হয়েছিল ?
উঃ ১৮১২ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়া ও ফ্রান্সের মধ্যে বোরোডিনোর যুদ্ধ হয়েছিল।
চতুর্থ শক্তিজোটের কয়েকজন সেনাপতি।
49. ১৮১২ খ্রিস্টাব্দে কোন ঘটনা নেপোলিয়নকে শঙ্কিত করেছিল ?
উঃ ১৮১২ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়া অভিযানের সময় নেপোলিয়নের গ্রান্ড আর্মির ব্যাপক ধ্বংসসাধন তাঁকে শঙ্কিত করেছিল।
50. শতদিবসের রাজত্ব কোন সম্রাটের সময়ের ঘটনা ?
উঃ শতদিবসের রাজত্ব ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়নের সময়ের ঘটনা।
51. 'একশত দিবসের রাজত্ব' কোন সময়কালকে বোঝায় ?
উঃ নেপোলিয়ন এলবা দ্বীপের নির্বাসন থেকে ফিরে এসে (১ মার্চ, ১৮১৫ খ্রি.) ফ্রান্সে তিনি আবার মোটামুটি ১০০ দিন রাজত্ব করার সুযোগ পান। 'একশত দিবসের রাজত্ব' বলতে ১ মার্চ থেকে ১০০ দিন সময়কালকে বোঝায়।
52. প্রথমে কারা, কার বিরুদ্ধে উপদ্বীপের যুদ্ধ শুরু করে ?
উঃ প্রথমে স্পেন ও পোর্তুগাল, ফ্রান্সের বিরুদ্ধে উপদ্বীপের যুদ্ধ শুরু করে।
53. লাইপজিগের যুদ্ধ কবে, কাদের মধ্যে হয়েছিল ?
উঃ ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্স ও চতুর্থ শক্তিজোটের বিভিন্ন দেশের মধ্যে লাইপজিগের যুদ্ধ হয়েছিল।
54. কবে, কোন্ যুদ্ধে নেপোলিয়নের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে ?
উঃ ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে (১৮ জুন) ওয়াটারলু-এর যুদ্ধে নেপোলিয়নের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে।
55. কোন্ যুদ্ধকে 'জাতিসমূহের যুদ্ধ' বলা হয় ? অথবা, কোন্ যুদ্ধ 'জাতিসমূহের যুদ্ধ' নামে পরিচিত ?
উঃ লাইপজিগের যুদ্ধকে (১৮১৩ খ্রি.) ‘জাতিসমূহের যুদ্ধ' অভিহিত করা হয়।
56. নেপোলিয়ন স্পেন জয়ের পর স্পেনের সিংহাসনে কাকে বসিয়েছিলেন ?।
উঃ নেপোলিয়ন স্পেন জয়ের পর তাঁর নিজের ভাই জোসেফকে স্পেনের সিংহাসনে বসিয়েছিলেন।
57. উপদ্বীপের কোন যুদ্ধে ফরাসি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে ?
উঃ উপদ্বীপের ভিত্তোরিয়ার যুদ্ধে (১৮১৩ খ্রি.) ফরাসি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে।
58. কবে, কাদের মধ্যে ড্রেসডেনের যুদ্ধ হয়েছিল ?
উঃ ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্স ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে ড্রেসডেনের যুদ্ধ হয়েছিল।
59. শতদিবসের রাজত্ব'-এর সময়কাল উল্লেখ করো।
উঃ 'শতদিবসের রাজত্ব'-এর সময়কাল হল ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দের ২০ মার্চ থেকে ২৯ জুন।
60. কবে, কাদের উদ্যোগে ফ্রান্স-বিরোধী তৃতীয় শক্তিজোট গড়ে ওঠে ?
উঃ ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, রাশিয়া ও সুইডেনের উদ্যোগে ফ্রান্স-বিরোধী তৃতীয় শক্তিজোট গড়ে ওঠে।
61. চতুর্থ শক্তিজোটের কয়েকজন সেনাপতির নাম লেখো।
উঃ উইটগেনস্টাইন, ইয়র্ক, বুলো, ব্লকার প্রমুখ ছিলেন চতুর্থ শক্তিজোটের কয়েকজন সেনাপতি।
62. কোন্ রুশ সেনাপতির হাতে নেপোলিয়নের পতন হয় ?
উঃ রুশ সেনাপতি কুতুজভের হাতে নেপোলিয়নের পতন হয়।
63. কোন সন্ধির মাধ্যমে নেপোলিয়নকে এলবা দ্বীপে নির্বাসনে পাঠানো হয় ?
উঃ ফঁতেনব্লু সন্ধির মাধ্যমে নেপোলিয়নকে এলবা দ্বীপে নির্বাসনে পাঠানো হয়।
64. 'ওয়াটারলুর যুদ্ধ' কত খ্রিস্টাব্দে হয়?
উঃ ওয়াটারলুর যুদ্ধ হয় ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে।
65. নেপোলিয়নের জীবনের শেষ যুদ্ধ কোনটি?
উঃ নেপোলিয়নের জীবনের শেষ যুদ্ধ হল ওয়াটারলু-র যুদ্ধ (১৮১৫ খ্রি.)।
66. কোন ইংরেজ সেনাপতি ওয়াটারলুর যুদ্ধে নেপোলিয়নকে পরাজিত করেন?
উঃ ইংরেজ সেনাপতি আর্থার ওয়েলেসলি বা ডিউক অব ওয়েলিংটন ওয়াটারলুর যুদ্ধে নেপোলিয়নকে পরাজিত করেন।
67. নেপোলিয়ন কবে, কোন সন্ধির দ্বারা সিংহাসন ত্যাগ করে এলবা দ্বীপে নির্বাসনে যান ?
উঃ নেপোলিয়ন ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দে ফঁতেনব্লু-এর সন্ধির দ্বারা সিংহাসন ত্যাগ করে এলবা দ্বীপে নির্বাসনে যান।
68. কে, কাদের ‘দোকানদারের জাত' বলে বিদ্রুপ করতেন ?
উঃ নেপোলিয়ন বোনাপার্ট, ইংরেজদের ‘দোকানদারের জাত’ বলে বিদ্রুপ করতেন।
69. ইউরোপে 'সমুদ্রের রানি' কোন্ দেশ ?
উঃ ইংল্যান্ডকে ইউরোপের সমুদ্রের রানি বলা হয়।
70. কে নেপোলিয়নকে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধের প্রস্তাব দেন?
উঃ নেপোলিয়নের সেনাপতি মন্টজেলার্ড নেপোলিয়ানকে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধের প্রস্তাব দেন।
71. প্রথমে কোন্ কোন্ দেশ নেপোলিয়নের বার্লিন ডিক্রি মেনে নিতে রাজি হয়?
উঃ প্রথমে রাশিয়া, অস্ট্রিয়া, স্পেন ও পোর্তুগাল নেপোলিয়নের বার্লিন ডিক্রি মেনে নিতে রাজি হয়।
72. কে, কবে ও কার বিরুদ্ধে বার্লিন ডিক্রি জারি করেন ?
উঃ ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বার্লিন ডিক্রি জারি করেন ।
73. মহাদেশীয় ব্যবস্থা কে প্রবর্তন করেন ?
উঃ মহাদেশীয় ব্যবস্থা ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট প্রবর্তন করেন।
74. কে, কবে, কার বিরুদ্ধে মিলান ডিক্রি জারি করেন?
উঃ ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন ১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মিলান ডিক্রি জারি করেন ।
75. চিলসিটের সন্ধি কত খ্রিস্টাব্দে হয়?
উঃ টিলসিটের সন্ধি হয় ১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে।
76. টিলসিটের সন্ধি কাদের মধ্যে হয়েছিল ?
উঃ ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন এবং রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডারের মধ্যে ১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে টিলসিটের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়। পরবর্তীতে অস্ট্রিয়া ও প্রাশিয়া এই সন্ধিতে যোগদান করে।
77. সিজালপাইন প্রজাতন্ত্রের ভিত্তিভূমি কী ছিল ?
উঃ নেপোলিয়ন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত সিজালপাইন প্রজাতন্ত্রের ভিত্তিভূমি ছিল ইটালি।
78. সিজালপাইন প্রজাতন্ত্রের পরের নাম কী ?
উঃ সিজালপাইন প্রজাতন্ত্রের পরের নাম হল ইটালি প্রজাতন্ত্র।
79. ইতালীয় প্রজাতন্ত্র কাকে বলে ?
উঃ ডাইরেক্টরি শাসনকালে ইটালিতে সিজালপাইন প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা হয়। এটিই ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দে ইটালীয় প্রজাতন্ত্র নামে পরিচিত হয়।
80. নেপোলিয়ন ইউরোপের কোন্ কোন্ দেশ অধিকার করেন?
উঃ নেপোলিয়ন ইউরোপের জার্মানির বৃহদংশ, ইটালির বৃহদংশ, স্পেন, হল্যান্ড, মিশর, বেলজিয়াম, অস্ট্রিয়া, পোল্যান্ড প্রভৃতি দেশ অধিকার করেন।
81. ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্য কে গঠন করেন ?
উঃ নেপোলিয়ন বোনাপার্ট হ্যানোভার, স্যাক্সনি, ব্যান্সউইক, হেসে কেসেল প্রভৃতি রাজ্যাংশ নিয়ে ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্য গঠন করেন।
82. নেপোলিয়ন কোন কোন রাজ্যাংশ নিয়ে কিংডম অব ওয়েস্টফেলিয়া' গঠন করেন ?
উঃ নেপোলিয়ন এলবা নদীর পশ্চিম তীরবর্তী হ্যানোভার, স্যাক্সনি প্রভৃতি জার্মান রাজ্যগুলি দখল করে সেগুলিকে নিয়ে 'কিংডম অব ওয়েস্টফেলিয়া' রাজ্য গঠন করেন।
83. নেপোলিয়নের কোন দুই ভাই জার্মানি ও নেদারল্যান্ড্স-এ শাসন ক্ষমতায় বসেন ?
উঃ নেপোলিয়নের ভাই জেরোম বোনাপার্ট জার্মানির ও লুই নেপোলিয়ন নেদারল্যান্ড্স-এর শাসন ক্ষমতায় বসেন।
84. কত খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ন কনফেডারেশন অব দ্য রাইন গঠন করেন ?
উঃ ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ন জার্মানির উটেমবার্গ, বেডেন, হেসবার্গ প্রভৃতি ছোটো ছোটো রাজ্য দখল করে কনফেডারেশন অব দ্য রাইন' গঠন করেন।
85. হোহেনলিন্ডেনের যুদ্ধ কবে, কাদের মধ্যে হয়েছিল ?
উঃ ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্স ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে হোহেনলিন্ডেনের যুদ্ধ হয়েছিল।
86. কবে, কাদের মধ্যে লুনভিলের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়?
উঃ ১৮০১ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্স ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে লুনভিলের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।
87. উমের যুদ্ধ কবে, কাদের মধ্যে হয়েছিল?
উঃ ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্স ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে উল্মের যুদ্ধ হয়েছিল।
88. ম্যারেঙ্গোর যুদ্ধ কবে, কাদের মধ্যে হয়েছিল?
উঃ ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্স ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে ম্যারেঙ্গোর যুদ্ধ হয়েছিল।
89. ট্রাফালগারের যুদ্ধে ফ্রান্স কার কাছে পরাজিত হয় ?
উঃ ট্রাফালগারের যুদ্ধে ফ্রান্স ইংল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয়।
90. ট্রাফালগারের নৌযুদ্ধে ইংরেজ সেনাপতি কে ছিলেন?
উঃ ট্রাফালগারের নৌযুদ্ধে ইংরেজ সেনাপতি ছিলেন নেলসন।
91. ট্রাফালগারের নৌযুদ্ধে কে কাকে পরাজিত করেন ?
উঃ ট্রাফালগারের নৌযুদ্ধে ইংল্যান্ডের সেনাপতি নেলসন ফরাসি সেনাপতি ভিলেনেউভকে পরাজিত করেন।
92. 'গ্র্যান্ড ডাচি অব ওয়ারশ' কোথায় গঠন করা হয়?
উঃ নেপোলিয়ন প্রাশিয়ার অধীনস্থ পোল্যান্ড এবং রাশিয়ার কিছু অংশ নিয়ে ‘গ্র্যান্ড ডাচি অব ওয়ারশ' গঠন করেন।
93. ‘ফতেব্লু চুক্তি' কত সালে হয় ?
উঃ ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন ও চতুর্থ শক্তিজোটের মধ্যে ‘ফঁতের চুক্তি' স্বাক্ষরিত হয়। এই সন্ধির দ্বারা নেপোলিয়ন ফ্রান্সের সিংহাসন ত্যাগ করে এলবা দ্বীপে নির্বাসিত হন।
94. পেনিনসুলার যুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল?
উঃ স্পেন ও পোর্তুগালের সম্মিলিত বাহিনীর সঙ্গে ফ্রান্সের পেনিনসুলার যুদ্ধ (১৮০৮ খ্রি.-১৮১৪ খ্রি.) হয়েছিল। এই যুদ্ধে স্পেনের আবেদনে ইংল্যান্ড প্রচুর সেনাবাহিনী ও সামরিক সাহায্য পাঠান।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -2/3
1. ১৮ ব্লুমেয়ার' বলতে কী বোঝ ?
উঃ ফরাসি সেনাপতি নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ডাইরেক্টরির শাসনের অবসান ঘটিয়ে ফ্রান্সে 'কনসুলেট' নামে নতুন শাসনব্যবস্থা চালু করেন এবং নিজে প্রথম কনসাল হিসেবে ফ্রান্সের শাসনক্ষমতা হস্তগত করেন। বিভিন্ন ঐতিহাসিক এই ঘটনাকে ফরাসি বিপ্লবের সমাপ্তি বলে মনে করেন। এই ঘটনা ঘটেছিল ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দের ৯ নভেম্বর অর্থাৎ প্রজাতন্ত্রী ফ্রান্সের ক্যালেন্ডার অনুসারে ১৮ রুমেয়ার তারিখে, এজন্য এই ঘটনাকে ‘১৮ ব্রুমেয়ার’ বলা হয় ।
2. নেপোলিয়ন কীভাবে ফ্রান্সের ক্ষমতা দখল করেন ?
উঃ নেপোলিয়ন প্রথম জীবনে একজন সাধারণ সৈনিক থেকে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন। তিনি অদক্ষ ডাইরেক্টরির শাসনকালে (১৭৯৫-৯৯ খ্রি.) বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রে চমকপ্রদ সাফল্যের পরিচয় দিয়ে দেশবাসীর মন জয় করেন এবং ডাইরেক্টরির শাসনের অবসান (৯ নভেম্বর, ১৭৯৯ খ্রি.) ঘটিয়ে কনসুলেট নামে নতুন শাসনব্যবস্থা চালু করেন। তিনি প্রথম কনসাল হিসেবে দেশের শাসনভার গ্রহণ করেন।
3. ভঁদেমিয়ার ঘটনা' কী? অথবা, 'অক্টোবরের ঘটনা' কী?
উঃ ফরাসি বিপ্লবের (১৭৮৯ খ্রি.) পরবর্তীকালে রাজতন্ত্রের সমর্থক উন্মত্ত জনতা ১৭৯৫ খ্রিস্টাব্দের ৫ অক্টোবর ফরাসি জাতীয় সভা আক্রমণ করলে ফরাসি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নেপোলিয়ন অল্প সংখ্যক সৈন্য নিয়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করেন এবং জাতীয় সভা রক্ষা করেন। এটি ভঁদেমিয়ার ঘটনা' বা 'অক্টোবরের ঘটনা' নামে পরিচিত।
4 . সিজালপাইন প্রজাতন্ত্র' কী ?
উঃ নেপোলিয়ন ইটালির লম্বার্ডি দখল করে সেখানে যে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন তা সিজালপাইন প্রজাতন্ত্র নামে পরিচিত। এটি ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দে ইতালীয় রাজ্য' নামে পরিচিত হয়।
5. কে, কোথায় ‘বাটাভিয়া' প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন ?
উঃ ফরাসি সেনাপতি পেশেগ্রু হল্যান্ড দখল করে সেখানে ফ্রান্সের অধীনে এক তাঁবেদার প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। এটি বাটাভিয়া প্রজাতন্ত্র নামে পরিচিত।
6 . কনসুলেটের শাসন' কী?
উঃ ফরাসি সেনাপতি নেপোলিয়ন ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে ডাইরেক্টরির শাসনের অবসান ঘটিয়ে (৯ নভেম্বর, ১৭৯৯ খ্রি.) ফ্রান্সে এক নতুন শাসনব্যবস্থা চালু করেন। এই ব্যবস্থায় নেপোলিয়ন-সহ মোট ৩ জন কনসালের হাতে ফ্রান্সের শাসনভার তুলে দেওয়া হয়। এটি ‘কনসুলেটের শাসন' নামে পরিচিত।
৪. প্রথম কনসাল হিসেবে নেপোলিয়নের কী ক্ষমতা ছিল ?
উঃ প্রথম কনসাল হিসেবে নেপোলিয়ন অপ্রতিহত ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। তাঁর হাতে সামরিক ও অসামরিক কর্মচারী, মন্ত্রী, রাষ্ট্রদূত প্রমুখের নিয়োগ, আইন প্রণয়ন, যুদ্ধ ঘোষণা, শান্তিস্থাপন প্রভৃতি দায়িত্ব ছিল।
9. নেপোলিয়ন নিজের বংশের শাসকদের কোথায় কোথায় শাসক পদে বসান ?
উঃ নেপোলিয়ন নিজ ভ্রাতা জোসেফকে স্পেনের সিংহাসনে, লুই বোনাপার্টকে হল্যান্ডের সিংহাসনে এবং জেরোম বোনাপার্টকে ওয়েস্টফেলিয়ার সিংহাসনে বসান।
10. কবে, কোথায় নেপোলিয়নের জন্ম হয়েছিল ?
উঃ ১৭৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট ভূমধ্যসাগরের কর্সিকা দ্বীপের অ্যাজাকসিও নামক স্থানে এক সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে নেপোলিয়নের জন্ম হয়েছিল।
11. নেপোলিয়নের যুগ কাকে বলে ?
উঃ নেপোলিয়ন ডাইরেক্টরি শাসনের অবসান ঘটিয়ে ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে প্রথম কনসাল হিসেবে ফ্রান্সের ক্ষমতা দখল করেন। তখন থেকে ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত নেপোলিয়ন ছিলেন ফ্রান্সের সর্বময়কর্তা। এই পর্বে তাঁকে কেন্দ্র করেই ফ্রান্স তথা ইউরোপে ব্যাপক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটে। তাই এই সময়কালকে ‘নেপোলিয়নের যুগ' বলা হয়।
12. 'কোড নেপোলিয়ন'-এর গুরুত্ব কী ছিল ?
উঃ কোড নেপোলিয়নের বিভিন্ন গুরুত্ব ছিল,
যেমন— [1] আইনসংহিতার মূল নীতিগুলি তৎকালীন যুগের বিচারে অত্যন্ত আধুনিক ছিল। [2] আইনগুলি পরবর্তীকালে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের আইনব্যবস্থায় স্থান পায়। ফিশারের মতে, এই আইনগুলি বিপ্লবের স্থায়ী বিজয়কে সুনিশ্চিত করে।
13. কাকে, কেন দ্বিতীয় জাস্টিনিয়ান' বলে অভিহিত করা হয় ?
উঃ ফরাসি শাসক নেপোলিয়ন খ্রিস্টাব্দে 'কোড ১৮০৪ নেপোলিয়ন' নামে নতুন আইনসংহিতা প্রণয়ন করেন। সমকালীন যুগের চেয়ে প্রগতিশীল এই আইনব্যবস্থা ছিল নেপোলিয়নের সর্বাপেক্ষা গৌরবময় সংস্কার এবং সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য কীর্তি। এই কৃতিত্বের জন্য নেপোলিয়নকে দ্বিতীয় জাস্টিনিয়ান' বলে অভিহিত করা হয়।
14. নেপোলিয়নের শিক্ষা সংক্রান্ত সংস্কারগুলি লেখো।
উঃ নেপোলিয়নের শিক্ষাসংক্রান্ত প্রধান সংস্কারগুলি ছিল—[1] তিনি প্রতিটি কমিউন বা পৌরসভায় একটি করে প্রাথমিক শিক্ষাকেন্দ্র গড়ে তোলেন। [2] তিনি সামরিক শিক্ষাদানের জন্য ফ্রান্সে ২৯টি লাইসি বা আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। [3] সমগ্র ফ্রান্সে একইরকম শিক্ষা-পদ্ধতি প্রচলনের উদ্দেশ্যে তিনি ১৮০৮ খ্রিস্টাব্দে ইম্পিরিয়াল ইউনিভার্সিটি অব ফ্রান্স' প্রতিষ্ঠা করেন।
15. নেপোলিয়নের অভ্যন্তরীণ সংস্কারের দুটি উদ্দেশ্য লেখো।
উঃ নেপোলিয়নের অভ্যন্তরীণ সংস্কারের প্রধান দুটি উদ্দেশ্য ছিল— [1] বিপ্লব-বিধ্বস্ত ফ্রান্সে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশবাসীর মনে শান্তি ও নিরাপত্তাবোধ সুনিশ্চিত করা। [2] দেশের অর্থনৈতিক সংকট দূর করা।
16. নেপোলিয়নের আইনসংহিতায় (কোড নেপোলিয়ন) কতগুলি বিধি ও কটি ভাগ ছিল?
উঃ নেপোলিয়নের আইনসংহিতায় ২২৮৭টি বিধি ও ৩টি ভাগ ছিল।
17. নেপোলিয়নের আইনসংহিতার ত্রুটি কী ছিল ?
উঃ নেপোলিয়নের আইনসংহিতার প্রধান ত্রুটি ছিল—[1] এই আইনের দ্বারা নেপোলিয়নের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলেও বিপ্লবের অগ্রগতি রুদ্ধ হয়। [2] পিতাকে পরিবারের সর্বময় কর্তৃত্ব দেওয়ায় স্ত্রী ও সন্তানদের ব্যক্তিস্বাধীনতা খর্ব হয়। [3] ফরাসি বিপ্লবের দ্বারা নারীসমাজের বন্ধন- মুক্তি ও সমান অধিকার লাভের যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল তা নেপোলিয়নের আইন পূরণ করতে পারেনি। [4] শ্রমিকদের কাজের অধিকার, নিম্নতম মজুরির অধিকার, ধর্মঘটের অধিকার কেড়ে নিয়ে তাদের বিপদে ফেলা হয় ।
18. ব্যাংক অব ফ্রান্স কে, কত খ্রিস্টাব্দে গঠন করেন ?
উঃ ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে ব্যাংক অব ফ্রান্স গঠন করেন।
19. ‘কনকর্ডাট’ বা ‘ধৰ্ম-মীমাংসা চুক্তি' কী ?
উঃ ফরাসি বিপ্লবকালে ‘সিভিল কনস্টিটিউশন অব দ্য ক্লার্জি' নামে এক দলিল দ্বারা ফরাসি গির্জার জাতীয়করণ করা হলে ফরাসি রাষ্ট্রের সঙ্গে পোপের বিরোধ বাধে। এই বিরোধের মীমাংসার উদ্দেশ্যে নেপোলিয়ন পোপ সপ্তম পায়াস-এর সঙ্গে যে চুক্তি স্বাক্ষর করেন তা ‘কনকর্ডাট’বা ‘ধর্ম-মীমাংসা চুক্তি’নামে পরিচিত।
20. কনকর্ডাটের শর্তগুলি কী ছিল ?
উঃ খামার ক্যাল- কনকর্ডাটের প্রধান শর্তগুলি ছিল— [1] পোপ ফরাসি গির্জা ও গির্জার সম্পত্তির জাতীয়করণ মেনে নেন। [2] ফ্রান্স রোমান ক্যাথলিক ধর্মমত ও গির্জাকে স্বীকৃতি দেয়। [3] বলা হয়, সরকার যাজকদের নিয়োগ করবে এবং পোপ তাঁদের স্বীকৃতি দেবে। [4] রাষ্ট্র যাজকদের বেতন দেবে।
21. কনকর্ডাট কত খ্রিস্টাব্দে কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় ?
উঃ কনকর্ডাট বা ধর্ম-মীমাংসা চুক্তি ১৮০১ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন ও পোপ সপ্তম পায়াস-এর মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়।
22. আর্থিক সংস্কারের জন্য নেপোলিয়ন ফ্রান্সে কী প্রচলন করেন ?
উঃ আর্থিক সংস্কারের জন্য নেপোলিয়ন ফ্রান্সে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা অবলম্বন করেন—[1] 'সরকারি ব্যয় হ্রাস' এবং 'অডিট প্রথা' চালু করেন। [2] ব্যাংক অব ফ্রান্স (১৮০০ খ্রি.) প্রতিষ্ঠা করেন। [3] নেপোলিয়ন ‘ব্যয় সংকোচন নীতি' অবলম্বন করে সরকারি দপ্তরগুলিকে কঠোরভাবে ব্যয় সংকোচনের নির্দেশ দেন। [4] নিয়মিত কর আদায়ের ব্যবস্থা করেন।
23. 'লিজিয়ন অব অনার' কী ?
উঃ ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন রাজকর্মচারীদের উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে দক্ষ কর্মচারীদের একটি বিশেষ রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদানের উদ্যোগ নেন। এই সম্মান 'লিজিয়ন অব অনার' নামে খ্যাত ৷
24. নেপোলিয়নকে ‘বিপ্লবের সন্তান' বলা হয় কেন?
উঃ নেপোলিয়নকে ‘বিপ্লবের সন্তান' বলা হয়, কারণ—[1] ফরাসি বিপ্লবের উদারনীতি নেপোলিয়নকে ফ্রান্সের ক্ষমতা দখলে সহায়তা করেছিল। [2] ফরাসি বিপ্লব-প্রসূত সাম্য ও মৈত্রীর আদর্শ নেপোলিয়ন তাঁর শাসনকালে কার্যকর করেছিলেন। [3] ফরাসি বিপ্লবের মূল আদর্শগুলি তিনি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দেন।
25. আমি বিপ্লবকে ধ্বংস করেছি' এই উক্তি কে, কেন করেছিলেন?
উঃ আমি বিপ্লবকে ধ্বংস করেছি' এই উক্তিটি করেন ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট।
নেপোলিয়ন এই উক্তি করেন, কারণ— [1] তিনি গণতান্ত্রিক জনপ্রতিনিধিমূলক সব প্রতিষ্ঠানের বিলোপ ঘটিয়ে দেশে রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনেন।[2] তিনি বিপ্লবের স্বাধীনতার আদর্শ ধ্বংস করে দেশের সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করেন। [3] তিনি সাধারণ মানুষের বাক-স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা কেড়ে নেন। [4] তিনি বিনা বিচারে গ্রেফতারের নিয়ম চালু করেন। ঐতিহাসিক ওলারের মতে, 'নেপোলিয়নের সম্রাট পদ লাভ করার সঙ্গে সঙ্গে ফরাসি বিপ্লবের সমাধি ঘটে।’
26. নেপোলিয়নকে 'বিপ্লবের ধ্বংসকারী' বলা হয় কেন?
উঃ নেপোলিয়নকে বিপ্লবের ধ্বংসকারী বলা হয়, কারণ—[1] বিপ্লবের স্বাধীনতার আদর্শ তিনি ধ্বংস করেন। [2] বিপ্লব ফ্রান্সে যে রাজতন্ত্রের পতন ঘটিয়েছিল তিনি ফ্রান্সে সেই রাজতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।
27. ফ্রান্স-বিরোধী দ্বিতীয় শক্তিজোট সম্পর্কে কী জান?
উঃ নেপোলিয়নের উগ্র সাম্রাজ্যবাদী নীতি ও বিভিন্ন সামরিক অভিযানের সফলতা ইউরোপীয় দেশগুলিকে আতঙ্কিত করে। এই পরিস্থিতিতে ইংল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, পোর্তুগাল, রাশিয়া প্রভৃতি দেশ ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় শক্তিজোট গড়ে তোলে। ১৮০২ খ্রিস্টাব্দে এই জোট ভেঙে যায়।
28. ফ্রান্স-বিরোধী তৃতীয় শক্তিজোট সম্পর্কে কী জান?
উঃ নেপোলিয়নের ধারাবাহিক সামরিক সাফল্য ও দ্রুত ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ আতঙ্কিত হয়। ফলে ইংল্যান্ড, সুইডেন ও রাশিয়া প্রভৃতি দেশ তাঁর বিরুদ্ধে ১৮০৪-০৫ খ্রিস্টাব্দে তৃতীয় শক্তিজোট গড়ে তোলে।
29. ফ্রান্স-বিরোধী চতুর্থ শক্তিজোট সম্পর্কে কী জান?
উঃ আগ্রাসী নেপোলিয়নের ক্ষমতা ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে রুশ জার প্রথম আলেকজান্ডারের উদ্যোগে ইংল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া, রাশিয়া ও সুইডেন প্রভৃতি দেশ ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে চতুর্থ তথা শেষ শক্তিজোট গড়ে তোলে।
30. নেপোলিয়ন কর্তৃক রাশিয়া আক্রমণ সম্পর্কে কী জান?
উঃ রাশিয়া মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা মানতে অস্বীকার করলে নেপোলিয়ন ১৮১২ খ্রিস্টাব্দে (২৪ জুন) ৬ লক্ষ সৈন্যের বিশাল বাহিনী নিয়ে রাশিয়া অভিযান করেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত তিনি রাশিয়ার যুদ্ধে পরাজিত হন এবং তাঁর বিখ্যাত সেনাদল 'গ্রাদ আর্মি' বিধ্বস্ত হয়।
31. 'পোড়ামাটি নীতি' কী?
উঃ ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন ১৮১২ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়া আক্রমণ করলে রাশিয়া সম্মুখ যুদ্ধ এড়িয়ে সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরে ক্রমাগত পিছু হটতে থাকে। ফরাসি বাহিনী রাশিয়ায় যাতে সমস্যায় পড়ে সে উদ্দেশ্যে পিছু হটার সময় রুশ বাহিনী নিজেদের রাস্তাঘাট ও সেতু ধ্বংস করে, খাদ্যশস্য, শস্যক্ষেত্র, শহর, জনপদ প্রভৃতি আগুনে পুড়িয়ে, পানীয় জলে বিষ মিশিয়ে দিয়ে যায়। রুশ বাহিনীর এই পদক্ষেপ ‘পোড়ামাটি নীতি' নামে পরিচিত।
32. নেপোলিয়নের অভিযান ব্যর্থ করতে রাশিয়ার কোন গেরিলা বাহিনী নামানো হয় ? এই সময় কোন জ্বরের প্রাদুর্ভাব হয় ?
উঃ [1] নেপোলিয়নের অভিযান ব্যর্থ করতে রাশিয়ার 'কসাক' নামে গেরিলা বাহিনী নামানো হয়। [2] এই সময় 'টাইফাস' নামে অজানা জ্বরের প্রাদুর্ভাব হয়।
33. রাশিয়া অভিযানে নেপোলিয়নের ব্যর্থতার দুটি তাৎপর্য উল্লেখ করো।
উঃ রাশিয়া অভিযানে নেপোলিয়নের ব্যর্থতার দুটি প্রধান তাৎপর্য ছিল— [1] নেপোলিয়ন যে অপরাজেয় নন তা ইউরোপের দেশগুলির কাছে প্রকাশিত হয়ে পড়ে। [2] রাশিয়া অভিযানে তার ব্যর্থতায় অনুপ্রাণিত হয়ে ফরাসি সাম্রাজ্যের বিভিন্ন জাতি নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করে।
34. কসাক গেরিলা বাহিনী কী ?
উঃ কসাক গেরিলা বাহিনী হল রাশিয়ার একপ্রকার বিশেষ সেনাবাহিনী। এরা সাধারণত আড়ালে থেকে যুদ্ধ করে।
35. স্পেনীয় ক্ষত কী ?
উঃ ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন স্পেন দখল করে সেখানকার সিংহাসনে নিজের ভাই জোসেফকে বসিয়ে দিলে স্পেনবাসী নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে তীব্র মুক্তিসংগ্রাম শুরু করে। স্পেনের যুদ্ধে নেপোলিয়নের বাহিনীর শোচনীয় পরাজয় ঘটে এবং জোসেফ স্পেন থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হন। স্পেনে নেপোলিয়নের এই সামরিক ব্যর্থতা 'স্পেনীয় ক্ষত' নামে পরিচিত।
36. ‘স্পেনীয় ক্ষত' কীভাবে নেপোলিয়নকে ধ্বংস করেছিল ?
উঃ ‘স্পেনীয় ক্ষত' বিভিন্নভাবে নেপোলিয়নকে ধ্বংস করে— [1] নেপোলিয়ন স্পেন দখল করলে প্রবল জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ স্পেনবাসী তাঁর বিরুদ্ধে দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রামে লিপ্ত হয় (১৮০৮-১৪ খ্রি.)। [2] স্পেন, পোর্তুগাল ও ইংল্যান্ডের সম্মিলিত বাহিনীর কাছে ফ্রান্সের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে। [3] যুদ্ধে পরাজয়ের ফলে নেপোলিয়নের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।[4] এই দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে নেপোলিয়নের অর্থনৈতিক ও সামরিক বিপর্যয় ঘটে। [5] ইউরোপে নেপোলিয়ন-বিরোধী শক্তি ঐক্যবদ্ধ হতে শুরু করে।
37. আইবেরীয় উপদ্বীপে নেপোলিয়নের অভিযান সম্পর্কে কী জান ?
উঃ আইবেরীয় উপদ্বীপে পোর্তুগাল ছিল ব্রিটিশদের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র। সমগ্র আইবেরীয় উপদ্বীপ দখলের উদ্দেশ্যে নেপোলিয়ন বার্লিন ডিক্রি (১৮০৬ খ্রি.) জারি করে পোর্তুগালকে নির্দেশ দেন, ইংরেজদের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছেদ করার। কিন্তু পোর্তুগাল তা করতে অস্বীকার করলে ফ্রান্স, স্পেনের সঙ্গে গোপনে 'ফঁতেনব্লু-এর সন্ধি' স্বাক্ষর করে যৌথভাবে ১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে সেনাপতি মার্শাল জুনো- র নেতৃত্বে পোর্তুগাল অভিযান করে তা দখল করে নেয়। ফলে পোর্তুগালে নেপোলিয়নের ‘মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা' চালু হয়।
38. স্পেনে কীভাবে জাতীয়তাবাদের সৃষ্টি হয়?
উঃ ১৮০৮ খ্রিস্টাব্দে নেপোলিয়ন স্পেন দখল করলে স্পেনবাসীরা নিজেদের মধ্যেকার বিবাদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে ফরাসি বাহিনীর বিরুদ্ধে মরণপণ সংগ্রাম শুরু করে। এভাবেই স্পেনে জাতীয়তাবাদের সৃষ্টি হয়।
39. নেপোলিয়নের বাহিনী স্পেনে প্রথম কোন্ যুদ্ধে পরাস্ত হয় ? এর ফল কী হয়েছিল?
উঃ [1] নেপোলিয়নের বাহিনী স্পেনে বেলেনের যুদ্ধে (১৮০৮ খ্রি.) প্রথম পরাস্ত হয়। [2] স্পেনে বেলেনের যুদ্ধে নেপোলিয়নের পরাজয়ের প্রধান ফলাফলগুলি ছিল— [I] যুদ্ধজয়ী স্পেনীয়রা নতুন উদ্যমে জেগে উঠে নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলে। (ii) নেপোলিয়নের অপরাজিত ভাবমূর্তি ধ্বংস হয় এবং ইউরোপে নেপোলিয়ন-বিরোধী শক্তিগুলি সক্রিয় হতে শুরু করে।
40. উপদ্বীপের যুদ্ধ বলতে কী বোঝায় ?
উঃ স্পেনের রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার সুযোগে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন দখল করে নিজ ভ্রাতা জোসেফকে স্পেনের সিংহাসনে বসান। ফলে ক্ষুব্ধ স্পেনবাসী নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে তীব্র মুক্তিসংগ্রাম শুরু করে। ইংল্যান্ড এবং পোর্তুগাল এই যুদ্ধে স্পেনের পক্ষে যোগ দেয়। ফ্রান্সের বিরুদ্ধে স্পেন, পোর্তুগাল ও ইংল্যান্ডের এই যুদ্ধ উপদ্বীপীয় যুদ্ধ (১৮০৮-১৮১৪ খ্রি.) নামে পরিচিত। যুদ্ধে ফ্রান্সের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে এবং জোসেফ সিংহাসন ছাড়তে বাধ্য হন ।
41. উপদ্বীপের যুদ্ধের সঙ্গে যুক্ত কয়েকটি যুদ্ধের নাম করো।
উঃ উপদ্বীপের যুদ্ধের (১৮০৮-১৪ খ্রি.) সঙ্গে যুক্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ ছিল— [1] ভিমেয়েরো-এর যুদ্ধ (১৮০৮ খ্রি.), [2] করুন্নার যুদ্ধ (১৮০৮ খ্রি.), [3] ট্যালাভেরার যুদ্ধ (১৮০৯ খ্রি.), [4] ওয়াগ্রামের যুদ্ধ (১৮০৯ খ্রি.), [5] টোরেস ভেড্রাস-এর যুদ্ধ (১৮০১ খ্রি.), [6]স্যালামাঙ্কার যুদ্ধ (১৮১২ খ্রি.), [7] ভিত্তোরিয়ার যুদ্ধ (১৮১৩ = খ্রি.) প্রভৃতি।
42. নেপোলিয়ন উপদ্বীপের যুদ্ধকে 'স্পেনীয় ক্ষত' বলেছেন কেন ?
উঃ নেপোলিয়ন স্পেন দখল করে স্পেন, পোর্তুগাল ও ইংল্যান্ডের র বিরুদ্ধে উপদ্বীপীয় যুদ্ধে (১৮০৮-১৮১৪ খ্রি.) জড়িয়ে পড়েন। যুদ্ধে তাঁর পরাজয় ঘটে এবং তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। পরাজিত ফ্রান্সের ব্যাপক আর্থিক ও সামরিক ক্ষতি হলে ফ্রান্সের দুর্বলতা প্রকাশে এসে পড়ে। ফলে নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে আবার শক্তিজোট গড়ে ওঠে যার কাছে নেপোলিয়নের পরাজয় ও পতন ঘটে। এজন্য তিনি এই যুদ্ধকে 'স্পেনীয় ক্ষত' বলেছেন।
43. বোরোডিনের যুদ্ধের গুরুত্ব কী ?
উঃ ১৮১২ খ্রিস্টাব্দের বোরোডিনের যুদ্ধে নেপোলিয়ন জয়লাভ করলেও তাঁর প্রায় ৩০ হাজার সৈন্য মারা যায় এবং টাইফাস' নামক জ্বরের প্রকোপে তিনি ফ্রান্সে ফিরে যেতে বাধ্য হন। ফলে ইউরোপীয় শক্তিগুলি পুনরায় তাঁর বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হয় এবং চতুর্থ শক্তিজোট গঠন করে নেপোলিয়নের পতন না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালাবার সিদ্ধান্ত নেয়।
44. ফ্রান্সে নেপোলিয়নের জনপ্রিয়তা নষ্ট হয়েছিল কেন?
উঃ ফ্রান্সে নেপোলিয়নের জনপ্রিয়তা নষ্ট হওয়ার প্রধান কারণ ছিল [1] ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মহাদেশীয় অবরোধ প্রথা কার্যকর করতে গিয়ে নেপোলিয়ন ফ্রান্সের বণিক ও শিল্পপতিদের বিরোধিতার মুখে পড়েন। [2] ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ড পালটা অবরোধ ঘোষণা করলে ফ্রান্সের ক্ষতি হয় এবং ফ্রান্সের সাধারণ মানুষ নেপোলিয়নের বিপক্ষে চলে যায়। [3] বিভিন্ন বৈদেশিক যুদ্ধে নেপোলিয়ন পরাজিত হতে থাকলে দেশবাসীর কাছে তিনি জনপ্রিয়তা হারান।
45. জাতিসমূহের যুদ্ধ কোন্ যুদ্ধকে এবং কেন বলা হয় ?
উঃ চতুর্থ শক্তিজোটের বিভিন্ন সদস্য-রাষ্ট্র ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে জার্মানির লাইপজিগের যুদ্ধে নেপোলিয়নকে পরাজিত করে। এটি লাইপজিগের বা জাতিসমূহের যুদ্ধ নামে পরিচিত। ইউরোপের প্রায় ১৩টি রাষ্ট্র লাইপজিগের যুদ্ধে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে অংশ নেয়। এজন্য এই যুদ্ধকে ‘জাতিসমূহের যুদ্ধ' বলা হয় ।
46. লাইপজিগ বা জাতিসমূহের যুদ্ধে কার পরাজয় ঘটে ? এই পরাজয়ের ফল কী হয়েছিল ?
উঃ লাইপজিগ বা জাতিসমূহের যুদ্ধে (১৮১৩ খ্রি.) নেপোলিয়নের পরাজয় ঘটে। এই পরাজয়ের ফলে— [1] ফরাসি সাম্রাজ্য ভেঙে যায়, [2] হল্যান্ড স্বাধীনতা পায় এবং [3] অস্ট্রিয়া তার হারানো রাজ্য ফিরে পায়।
47. ‘শতদিবসের রাজত্ব' কী ?
উঃ ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দের শুরুতে ফ্রান্সে গোলযোগের পরিস্থিতিতে নেপোলিয়ন এলবা দ্বীপের নির্বাসন থেকে পালিয়ে ফ্রান্সে ফিরে আসেন (মার্চ, ১৮১৫ খ্রি.)। সাধারণ মানুষ তাঁকে সাদর অভ্যর্থনা জানালে রাজা অষ্টাদশ লুই সিংহাসন ছেড়ে পালিয়ে যান। এরপর তিনি ২০ মার্চ থেকে ২৯ জুন (১৮১৫ খ্রি.) পর্যন্ত মোট ১০০ দিন রাজত্ব করেন। এই ঘটনা ‘শতদিবসের রাজত্ব' নামে পরিচিত।
48. টিলসিটের সন্ধি' থেকে রাশিয়া সরে দাঁড়িয়েছিল কেন?
উঃ রাশিয়া ও ফ্রান্সের মধ্যে টিলসিটের সন্ধি (১৮০৭ খ্রি.) স্বাক্ষরিত হয়। এই সন্ধি থেকে রাশিয়ার সরে দাঁড়ানোর কারণ ছিল—[1] সন্ধিতে সম্ভাব্য রুশ-তুরস্ক যুদ্ধে নেপোলিয়ন রাশিয়াকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিলেও তিনি পরে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন। [2] নেপোলিয়ন সুইডেনের বিরুদ্ধেও জার প্রথম আলেকজান্ডারকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রক্ষা করেননি।
49. কনফেডারেশন অব দ্য রাইন' কী? এর প্রতিষ্ঠাতা কে?
উঃ ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন জার্মানির উটেমবার্গ, বেডেন, হেসবার্গ প্রভৃতি ছোটো ছোটো রাজ্য দখল করে এদের নিয়ে কনফেডারেশন বা রাষ্ট্র-সমবায় গঠন করেন। এটি কনফেডারেশন অব দ্য রাইন' নামে পরিচিত। এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন।
50. কনফেডারেশন অব দ্য রাইন কোন্ কোন্ রাজ্য নিয়ে গঠিত হয় ?
উঃ নেপোলিয়ন জার্মানির উটেমবার্গ, ব্যাভেরিয়া, ব্যাডেন, হেসবার্গ, স্যাক্সনি-সহ ক্ষুদ্র রাজ্যগুলি নিয়ে কনফেডারেশন অব রাইন' গঠন করেন।
51. ‘কিংডম অব ওয়েস্টফেলিয়া' সম্পর্কে কী জান?
উঃ নেপোলিয়ন এলবা নদীর পশ্চিম তীরবর্তী হ্যানোভার, স্যাক্সনি প্রভৃতি জার্মান রাজ্যগুলি দখল করে সেগুলিকে নিয়ে একটি রাষ্ট্র-সমবায় গড়ে তোলেন যা 'কিংডম অব ওয়েস্টফেলিয়া' নামে পরিচিত। নেপোলিয়নের ছোটো ভাই জেরোম বোনাপার্ট এখানকার রাজা হন।
52. ট্রাফালগারের যুদ্ধ কবে কাদের মধ্যে হয়?
উঃ [1] ১৮০৫ খ্রিস্টাব্দে ট্রাফালগারের নৌযুদ্ধ সংঘটিত হয়। [2] ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের মধ্যে ট্রাফালগারের নৌযুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে ইংরেজ নৌ-সেনাপতি নেলসন ফরাসি নৌ-সেনাপতি ভিলনেউভ-কে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেন।
53. ট্রাফালগারের নৌযুদ্ধের গুরুত্ব কী ?
উঃ ট্রাফালগারের নৌযুদ্ধ (২১ অক্টোবর, ১৮০৫ খ্রি.) ছিল নেপোলিয়নের পতনের প্রথম ধাপ। এই যুদ্ধে পরাজয়ের ফলে ইউরোপে নেপোলিয়নের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয় এবং ফরাসি নৌবহর সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়।
54. ডাইরেক্টরির আমলে ইটালিতে নেপোলিয়নের সাফল্য ব্যক্ত করো।
উঃ ডাইরেক্টরির শাসনকালে (১৭৯৫-৯৯ খ্রি.) নেপোলিয়ন— [1] ইটালির সার্ডিনিয়াকে পরাজিত করে স্যাভয় ও নিস দখল করেন। [2] ইটালির পার্মা, মডেনা ও নেপল্স-এর শাসকরা নেপোলিয়নের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। [3] অস্ট্রিয়াকে পরাজিত করে লম্বার্ডি, ভেনিস ও মিলান দখল করেন।
55. 'গ্র্যান্ড ডাচি অব ওয়ারশ' কী ?
উঃ নেপোলিয়ন প্রাশিয়ার অধীনস্থ পোল্যান্ড এবং রাশিয়ার কিছু অংশ নিয়ে একটি রাষ্ট্র-সমবায় গড়ে তোলেন যা 'গ্র্যান্ড ডাচি অব ওয়ারশ' নামে পরিচিত। স্যাক্সনির রাজা এখানকার শাসন পরিচালনার দায়িত্ব পান।
56. প্রেম মহাদেশীয় ব্যবস্থা বলতে কী বোঝ ?
উঃ ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বার্লিন, মিলান, ওয়ারশ, ফতেন প্রভৃতি ডিক্রির মাধ্যমে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ ঘোষণা করে বলেন যে, ইংল্যান্ডের কোনো জাহাজ ইউরোপের কোনো বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে না এবং ইউরোপের কোনো রাষ্ট্র ইংল্যান্ড থেকে পণ্য আমদানি করতে পারবে না। এই নীতি ‘মহাদেশীয় ব্যবস্থা' বা “মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা' বা 'কন্টিনেন্টাল সিস্টেম' নামে পরিচিত।
57. নেপোলিয়ন কী উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মহাদেশীয় অবরোধ ঘোষণা করেন?
উঃ নেপোলিয়ন প্রধানত দুটি উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মহাদেশীয় অবরোধ ঘোষণা করেন। যথা—–[1] মহাদেশীয় ভূখণ্ডে শিল্পোন্নত ইংল্যান্ডের পণ্য বিক্রি করে দিয়ে ইংল্যান্ডের অর্থনীতি পঙ্গু করা এবং [2] ইউরোপে ব্রিটিশ পণ্যের অনুপস্থিতির সুযোগে ফ্রান্সে দ্রুত শিল্পায়ন ঘটিয়ে ব্রিটিশ পণ্যের শূন্যস্থান দখল করা।
58. 'বার্লিন ডিক্রি' কী ?
উঃ নেপোলিয়ন “মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা' কার্যকর করার উদ্দেশ্যে যেসব হুকুমনামা জারি করেন, সেগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল বার্লিন ডিক্রি (১৮০৬ খ্রি.)। এতে বলা হয়—[1] ইংল্যান্ড বা তার উপনিবেশগুলির কোনো জাহাজ ফ্রান্স এবং ফ্রান্সের মিত্র বা নিরপেক্ষ কোনো দেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না। [2] এসব দেশে কোনো জাহাজে করে ব্রিটিশ পণ্য ঢুকলে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে।
59. বার্লিন ডিক্রিতে কী বলা হয় ?
উঃ ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে (১১ নভেম্বর) বার্লিনে এক হুকুমনামা বা ঘোষণা জারি করে বলেন যে—[1] ইংল্যান্ড বা তার উপনিবেশগুলির কোনো জাহাজ ফ্রান্স এবং ফ্রান্সের মিত্র বা নিরপেক্ষ কোনো দেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না। [2] এসব দেশে কোনো ব্রিটিশ পণ্য ঢুকতে দেওয়া হবে না। [3] এসব দেশে কোনো জাহাজে করে ব্রিটিশ পণ্য ঢুকলে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে। এই ঘোষণা বার্লিন ডিক্রি নামে পরিচিত।
60. অর্ডার্স-ইন-কাউন্সিলে কী বলা হয় ?
উঃ ইংল্যান্ড কর্তৃক ঘোষিত ‘অর্ডার্স-ইন-কাউন্সিল'-এর ঘোষণায় বলা হয় যে–[1] ফ্রান্স ও তার মিত্র দেশগুলির বন্দরে অন্য কোনো দেশের জাহাজ ঢুকতে পারবে না। ঢুকলে সেই জাহাজ ও তার মালপত্র বাজেয়াপ্ত করা হবে।[2] কোনো নিরপেক্ষ দেশ ফ্রান্স ও তার মিত্র কোনো দেশের বন্দরে একান্তই জাহাজ পাঠাতে চাইলে সেই জাহাজকে যথার্থ কি দিয়ে ইংল্যান্ডের কাছ থেকে লাইসেন্স বা আগাম অনুমতি নিতে হবে।
61. ফঁতেনব্লু-এর গোপন সন্ধি (১৮০৭ খ্রি.) সম্পর্কে কী জান ?
উঃ পোর্তুগাল মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা মানতে অস্বীকার করলে নেপোলিয়ন স্পেনের সঙ্গে ফঁতেনব্লু-এর গোপন সন্ধি (১৮০৭ খ্রি.) স্বাক্ষর করেন। এই সন্ধির দ্বারা স্থির হয় যে [1] ফ্রান্স ও স্পেনের যৌথ বাহিনী পোর্তুগাল আক্রমণ করবে। [2] যুদ্ধে জয়লাভের পর পোর্তুগাল ও তার উপনিবেশগুলি ফ্রান্স ও স্পেন ভাগ করে নেবে।
62. মিলান ডিক্রি ?
উঃ ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন ১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে মিলান শহর থেকে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ ঘোষণা করে বলেন যে [1] কোনো নিরপেক্ষ বা মিত্র দেশ অবরুদ্ধ বন্দরে জাহাজ পাঠালে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে। [2] কোনো নিরপেক্ষ দেশের জাহাজ ইংল্যান্ডে প্রবেশ করলে তা শত্রুদেশের জাহাজ বলে গণ্য হবে। এই ঘোষণা মিলান ডিক্রি নামে পরিচিত।
63. মহাদেশীয় অবরোধ প্রথা কার্যকর করতে গিয়ে নেপোলিয়ন রোম ও হল্যান্ডে কী পদক্ষেপ নেন?
উঃ নেপোলিয়ন মহাদেশীয় অবরোধ প্রথা কার্যকর করতে গিয়ে রোম ও হল্যান্ডের প্রতি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। [1] ব্রোমের পোপ নেপোলিয়নের মহাদেশীয় অবরোধ মানতে অস্বীকার করেন। ফলে নেপোলিয়ন পোপকে বন্দি করেন। [2] হল্যান্ডের শাসক লুই (নেপোলিয়নের ভাই) মহাদেশীয় অবরোধ মানতে অস্বীকার করলে নেপোলিয়ন তাঁকে সিংহাসনচ্যুত করে হল্যান্ড দখল করেন।
64. ফঁতেনর সন্ধি কত সালে, কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়?
উঃ ফঁতেব্রু সন্ধি ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন ও বিজরী চতুর্থ শক্তিজোটের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়।
65. মহাদেশীয় ব্যবস্থা কেন ব্যর্থ হয়েছিল?
উঃ নেপোলিয়নের মহাদেশীয় ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়েছিল কারণ [1] নেপোলিয়ন মহাদেশীয় অবরোধ ঘোষণা করলেও শক্তিশালী নৌবাহিনীর অভাবে তা বাস্তবায়িত করতে পারেননি। [2] ফ্রাজ্যে বিরুদ্ধে ইংল্যান্ড অর্ডার্স -ইন-কাউন্সিল' নামে পালটা অবরোধ ঘোষণা করে তা নৌশক্তির জোরে বাস্তবায়িত করেন। [3] ফ্রান্সের পণ্যসামগ্রী গুণগত মান ব্রিটিশ পণ্যের সমতুল্য ছিল না বলে মহাদেশীয় ভূখণ্ডের রাষ্ট্রগুলি ব্রিটিশ পণ্যই কিনতে চাইত।
66. ফ্রান্স-বিরোধী প্রথম শক্তিজোট সম্পর্কে কী জান?
উঃ ফ্রান্সের বিপ্লবী আইনসভা রাজা ষোড়শ লুই-এর প্রাণদণ্ড দিলে ইউরোপের রাজতন্ত্রগুলি এর বিরোধিতা করে। বিপ্লবী ফ্রান্সকে শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া, স্পেন, পোর্তুগাল, সুইডেন প্রভৃতি দেশ ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে প্রথম শক্তিজোট গড়ে তোলে।
No comments:
Post a Comment