উনবিংশ শতকের ইউরোপ নবম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর | class 7 3rd chapter history question answer| - Studing School

Fresh Topics

Tuesday, February 20, 2024

উনবিংশ শতকের ইউরোপ নবম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর | class 7 3rd chapter history question answer|

উনবিংশ শতকের ইউরোপ নবম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর | class 7 3rd chapter history question answer |






অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -1


1. 'হেটাইরিয়া ফিলিকে' কী?

উঃ  'হেটাইরিয়া ফিলিকে' বা স্বাধীনতার অনুরাগী ছিল ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দে স্কুফাস নামক এক গ্রিক ব্যবসায়ী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত গ্রিসের একটি গুপ্ত সমিতি, যাদের উদ্দেশ্য ছিল গ্রিসের স্বাধীনতা অর্জন এবং প্রাচীন বাইজানটাইন সাম্রাজ্যের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা ।


2. লুই সুখ কে ছিলেন?

উঃ  লুই কসুথ ছিলেন ফ্রান্সে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের সময় হাঙ্গেরির জাতীয়তাবাদী নেতা ।


3. কোন্ গির্জাকে কেন্দ্র করে ক্রিমিয়ার যুদ্ধ হয়েছিল ?

উঃ তুরস্কের অন্তর্গত জিশুখ্রিস্টের জন্মস্থান জেরুজালেমের গ্রোটোর গির্জাকে কেন্দ্র করে ক্রিমিয়ার যুদ্ধ হয়েছিল।


4. কোন্ রাজবংশের অধীনে বেলজিয়ামকে নেদারল্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ?

উঃ  রাজবংশের অধীনে বেলজিয়ামকে স্যাক্সকোবার্গ নেদারল্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৷


5. স্পেনবাসী ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে কাকে স্পেনের রাজপদ গ্রহণের আবেদন জানায় ?

উঃ  স্পেনবাসী ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে প্রাশিয়ার হোহেনজোলার্ন বংশীয় প্রিন্স লিওপোল্ডকে স্পেনের রাজপদ গ্রহণের আবেদন জানায় ।


6. 'বলকান অঞ্চলের অন্য নাম কী ?

উঃ  ‘বলকান’ অঞ্চলের অন্য নাম পূর্বাঞ্চল বা নিকট প্রাচ্য ।


7. বলকান অঞ্চলে বসবাসকারী কয়েকটি জাতির নাম লেখো।

উঃ  বলকান অঞ্চলে বসবাসকারী কয়েকটি জাতির নাম গ্রিক, সার্ব, বালগেরীয়, রোমেনীয়, আলবেনীয়, মিশরীয় প্রভৃতি ।


৪. 'জার' কাকে বলা হত ? ।

উঃ  রাশিয়ার সম্রাটকে 'জার' (Czar) বলা হত।

. কোন্ রুশ জার প্রথম 'উয়জল নীতি' গ্রহণ করেন ? 

উঃ  জার পিটার দ্য গ্রেট প্রথম 'উয়জল নীতি' গ্রহণ করেন।


10. কে, কবে হেটাইরিয়া ফিলিকে প্রতিষ্ঠা করেন ? 

উঃ   স্কুফাস নামে এক গ্রিক ব্যবসায়ী ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দে হেটাইরিয়া ফিলিকে প্রতিষ্ঠা করেন।


11. হেটাইরিয়া ফিলিকে-এর উদ্যোগে সংঘটিত দুটি বিদ্রোহের উল্লেখ

 করো।

উঃ  হেটাইরিয়া ফিলিকে-এর উদ্যোগে সংঘটিত দুটি বিদ্রোহ হল তুরস্কের বিরুদ্ধে মলডেভিয়ার বিদ্রোহ (১৮২১ খ্রি.) ও মোরিয়া প্রদেশের বিদ্রোহ (১৮২১ খ্রি.)।


12. কবে, কাদের মধ্যে অ্যাড্রিয়ানোপলের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয় ?

উঃ  ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যে অ্যাড্রিয়ানোপলের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়। 


13. কৰে, কোন্ সন্ধির দ্বারা গ্রিস স্বাধীনতা লাভ করে ?

 উঃ ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে অ্যাড্রিয়ানোপলের সন্ধির দ্বারা গ্রিস স্বাধীনতা লাভ করে।


14. কৰে, কোন্ চুক্তিতে তুরস্ক গ্রিসের স্বাধীনতা মেনে নেয় ? 

উঃ  ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে লন্ডন চুক্তির দ্বারা তুরস্ক গ্রিসের স্বাধীনতা মেনে নেয়।


15. কবে, কাদের মধ্যে ক্রিমিয়ার যুদ্ধ সংঘটিত হয় ?

উঃ   ১৮৩৪-৫৬ খ্রিস্টাব্দে তুরস্ক, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও পিডমন্ট জোট বনাম রাশিয়ার মধ্যে ক্রিমিয়ার যুদ্ধ সংঘটিত হয়।


16. কোন্ সন্ধির দ্বারা ক্রিমিয়া যুদ্ধের অবসান হয় ?

উঃ  ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে ৩০ শে মার্চ স্বাক্ষরিত প্যারিসের সন্ধি দ্বারা ক্রিমিয়ার যুদ্ধের অবসান হয় ।


17. কবে, কাদের মধ্যে সানস্টেফানোর সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়? 

উঃ  ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যে সানস্টেফানোর সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।


18. কোন দুটি স্থান নিয়ে স্বাধীন রোমেনিয়া রাজ্যের প্রতিষ্ঠা হয়?

উঃ  তুরস্কের মলডেভিয়া ও ওয়ালাকিয়া নিয়ে স্বাধীন রোমেনিয়া রাজ্যের প্রতিষ্ঠা হয়।


19. 'ইউরোপের রুগ্ন মানুষ' কোন্ দেশকে বলা হত ?

উঃ  তুরস্ককে ইউরোপের রুগ্ন মানুষ' বলা হত।


20. 'উন্নজল নীতি' কী ?

উঃ   বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগের উদ্দেশ্যে রাশিয়া বরফমুক্ত কৃষ্ণসাগর, দার্দানালিস প্রণালী অতিক্রম করে ভূমধ্যসাগরে পৌঁছানোর উদ্যোগ নেয়। রাশিয়ার এই পরিকল্পনা 'উয়জল নীতি' বা 'বরফমুক্ত সমুদ্র উপকূল পর্যন্ত বিস্তার নীতি' নামে পরিচিত।


21. সর্বস্লাভ আন্দোলন কবে হয় ?

উঃ   সর্বস্লাভ আন্দোলন হয় উনিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে।


22. গুপ্ত সমিতি 'হেটাইরিয়া ফিলিকে'-এর অর্থ কী ?

 উঃ গুপ্ত সমিতি 'হেটাইরিয়া ফিলিকে'-এর অর্থ হল 'বান্ধব সভা'।


23. হেটাইরিয়া ফিলিকে গুপ্ত সমিতিটি কোথায় গড়ে ওঠে?

উঃ হেটাইরিয়া ফিলিকে গুপ্ত সমিতিটি গ্রিসের ওডেসা বন্দরে গড়ে ওঠে।


24. দ্বিতীয় বলকান যুদ্ধ কবে হয়েছিল?

উঃ দ্বিতীয় বলকান যুদ্ধ হয়েছিল ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে।


25. আধুনিক রাশিয়ার জনক কে ছিলেন?

 উঃ আধুনিক রাশিয়ার জনক ছিলেন জার পিটার দ্য গ্রেট বা মহান পিটার।


26. রাশিয়ায় কে, কবে ভূমিদাসদের মুক্তি ঘোষণা করেন ?

উঃ  জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডার ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ১৯ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ায় ভূমিদাসদের মুক্তি ঘোষণা করেন।


27. কারা রাশিয়ার সামন্তপ্রভু ও মুক্ত ভূমিদাসদের জমির বণ্টন ও ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ধার্য করে দিত?

উঃ  ল্যান্ড ম্যাজিস্ট্রেট নামে সরকারি কর্মচারীরা রাশিয়ার সামন্তপ্রভু ও মুক্ত ভূমিদাসদের জমির বণ্টন ও ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ধার্য করে দিত।


28. রাশিয়ার পার্লামেন্টের নাম কী?

উঃ রাশিয়ার পার্লামেন্টের নাম ডুমা।


29. প্রিটোরিয়ান গার্ড কী? (R Hon for Gidel )

উঃ  প্রিটোরিয়ান গার্ড ছিল রাশিয়ায় জারের আমলের পুলিশবাহিনী।


30. জেমস্টোভো কী ?

 উঃ রুশ বিপ্লবের পূর্বে রাশিয়ার জেলা পরিষদগুলি জেমস্টোভো নামে পরিচিত ছিল।


31. 'কুলাক' কথা অর্থ কী ? 

 উঃ 'কুলাক' কথার অর্থ হল 'মুষ্টি’।


32. মির কী?

উঃ রাশিয়ার গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসনমূলক প্রতিষ্ঠানের নাম মির।


33. রাশিয়া মুক্ত ভূমিদাসদের হাতে ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দে কত বছরের কিস্তিতে জমি তুলে দিয়েছিল?

উঃ  রাশিয়া মুক্ত ভূমিদাসদের হাতে ৪৯ বছরের কিস্তিতে জমি তুলে দিয়েছিল।




34. কোন্ কোন্ দেশে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে? 

উঃ ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে জার্মানি, ইটালি, অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ড্স প্রভৃতি দেশে।


35. লুই ফিলিপ কে?

উঃ লুই ফিলিপ ছিলেন ফ্রান্সে অর্লিয়েন্স বংশের শাসক ।


36. কবে, কোথায় জাতীয় কর্মশালা' প্রতিষ্ঠিত হয় ?

উঃ ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের (১৮৪৮ খ্রি.) পর ফ্রান্সে ‘জাতীয় কর্মশালা' প্রতিষ্ঠিত হয়।


37. কোন্ বিপ্লবের প্রভাবে দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় ?

উঃ ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের প্রভাবে ফ্রান্সে ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দের ২৬ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় ।


38. কবে ফ্রান্সে দ্বিতীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয় ?

উঃ  ফরাসি সম্রাট লুই নেপোলিয়ন বা তৃতীয় নেপোলিয়ন ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে ফ্রান্সে দ্বিতীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত করেন।


39. লুই সুথ কে ছিলেন ?

উঃ  লুই কসুথ ছিলেন ফ্রেব্রুয়ারি বিপ্লবের সময় হাঙ্গেরির জাতীয়বাদী নেতা।


40. কোন্ সালকে 'বিপ্লবের বছর' বলা হয়?

উঃ উচ্চ বিদ্যালয় (এইচইটি এইচ বিপ্লবের ব্যাপকতার জন্য ঐতিহাসিকরা ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দকে ‘বিপ্লবের বছর' বলে অভিহিত করেন।


41. কে, কবে জুলাই অর্ডিন্যান্স জারি করেন ?

উঃ  ফরাসি সম্রাট দশম চার্লস ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দের ২৫ জুলাই ‘জুলাই অর্ডিন্যান্স' জারি করেন।


42. নেপোলিয়নের মৃত্যুর পর কে ফরাসি সিংহাসনে বসেন ?

উঃ  নেপোলিয়নের মৃত্যুর পর ফ্রান্সের সিংহাসনে বসেন বুরবোঁ বংশীয় শাসক তথা ষোড়শ লুইয়ের ভ্রাতা অষ্টাদশ লুই।

43. কে, কী উদ্দেশ্যে 'অ্যাক্ট অব জাস্টিস' আইন পাস করেন ?

উঃ ফরাসি সম্রাট দশম চার্লস, দেশে ফিরে আসা অভিজাতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য 'অ্যাক্ট অব জাস্টিস’আইন পাস করেন।


44. কে, কী উদ্দেশ্যে 'ধর্মবিরোধী আইন' (১৮২৭ খ্রি.) পাস করেন ?

উঃ ফরাসি সম্রাট দশম চার্লস, ফরাসি গির্জার বিরুদ্ধে সমালোচনা বন্ধ করার উদ্দেশ্যে ‘ধর্মবিরোধী আইন' (১৮২৭ খ্রি.) পাস করেন।


45. দশম চার্লসের আমলে প্রবর্তিত দুটি দমনমূলক আইনের নাম লেখো।

উঃ দশম চার্লসের আমলে প্রবর্তিত দুটি দমনমূলক আইন হল— [1] অ্যাক্ট অব জাস্টিস, [2] ধর্মবিরোধী আইন।


46. কে, কার প্ররোচনায় জুলাই অর্ডিন্যান্স জারি করেন ?

উঃ ফরাসি সম্রাট দশম চার্লস, প্রধানমন্ত্রী পলিগন্যাকের প্ররোচনায় জুলাই অর্ডিন্যান্স জারি করেন।


47. জুলাই বিপ্লবের সময় ফ্রান্সের রাজা কে ছিলেন?

উঃ জুলাই বিপ্লবের সময় ফ্রান্সের রাজা ছিলেন দশম চার্লস।


48. ফ্রান্সে দশম চার্লসের প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন?

উঃ  ফ্রান্সের সম্রাট দশম চার্লসের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন পলিগন্যাক।


49. ফ্রান্সে জুলাই বিপ্লব কত খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত হয় ?

উঃ  ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে (২৮-২৯শে জুলাই) ফ্রান্সে জুলাই বিপ্লব অনুষ্ঠিত হয়। 


50. ডিলিল কে ছিলেন ?

উঃ ফরাসি সম্রাট অষ্টাদশ লুইয়ের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ভিলিল। 


51. দশম চার্লসের আমলের কয়েকজন উল্লেখযোগ্য মন্ত্রীর নাম লেখো। 

উঃ  দশম চার্লসের আমলের কয়েকজন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন— ভিলিল, মাটিগন্যাক, পলিগন্যাক।


52. কোন ঘটনায় দশম চার্লস পদত্যাগ করেন ?

 উঃ জুলাই বিপ্লবের (১৮৩০ খ্রি.) ঘটনায় দশম চার্লস পদত্যাগ করেন।


53. জুলাই বিপ্লবের কয়েকজন নেতার নাম লেখো। 

 উঃ জুলাই বিপ্লবের কয়েকজন নেতা ছিলেন থিয়ার্স, লাঞ্চিত, লাফায়েৎ, তালির প্রমুখ।


54. অষ্টাদশ লুইয়ের পর কে ফ্রান্সের সম্রাট হন?

উঃ অষ্টাদশ লুইয়ের পর ফ্রান্সের সম্রাট হন দশম চার্লস।


55. জুলাই বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে কে ফ্রান্সের সিংহাসনে বসেন?

উঃ  জুলাই বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে ফ্রান্সের সিংহাসনে বসেন অলিয়েন্স বংশের শাসক লুই ফিলিপ।


56. কোন্ বিপ্লব ফ্রান্সে বুরবো রাজতন্ত্রের পতন ঘটায় ? অথবা, কোন্ বিপ্লবের ফলে ফ্রান্সে বুরবো রাজবংশের চিরতরে পতন ঘটে?

 উঃ জুলাই বিপ্লবের ফলে ফ্রান্সে বুরবো রাজবংশের পতন ঘটে।


57. ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে জুলাই বিপ্লবের ফলে ফ্রান্সে কোন্ রাজবংশের পতন ঘটে।

উঃ  ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে জুলাই বিপ্লবের ফলে ফ্রান্সে বুরবো রাজবংশের পতন ঘটে। 


58. ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে জুলাই বিপ্লবের ফলে ফ্রান্সে কোন্ রাজবংশের শাসক সিংহাসনে বসেন? 

 উঃ ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে জুলাই বিপ্লবের ফলে ফ্রান্সে অর্লিয়েন্স বংশের শাসক লুই ফিলিপ সিংহাসনে বসেন।


59. ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের সিংহাসনে আসীন সম্রাট লুই ফিলিপ কোন্ বংশের রাজা ছিলেন ?

উঃ  ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের সিংহাসনে আসীন সম্রাট লুই ফিলিপ অর্লিয়েন্স বংশের রাজা ছিলেন।


60. দ্বিতীয় ফরাসি সাম্রাজ্য'-এর সময়কাল উল্লেখ করো।

উঃ ‘দ্বিতীয় ফরাসি সাম্রাজ্য'-এর সময়কাল হল ১৮৫২ থেকে ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত।


61. কত খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে দ্বিতীয় ফরাসি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ? 

উঃ ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে ‘দ্বিতীয় ফরাসি সাম্রাজ্য' প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।


62. মধ্যযুগীয় শাসনব্যবস্থার মুখ্য ভাবধারাগুলি কী ছিল ?

 উঃ মধ্যযুগীয় শাসনব্যবস্থার মুখ্য ভাবধারাগুলি ছিল স্বৈরাচারী নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র, রাজার দৈব অধিকার, অভিজাততন্ত্র, সামন্ততন্ত্র, ক্যাথোলিক গির্জার প্রাধান্য প্রভৃতি।


63. 'জাতি-রাষ্ট্র' বলতে কী বোঝায় ?

উঃ যখন কোনো নির্দিষ্ট ভূখন্ডে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর জাতি, ধর্ম, ভাষা ও সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যে ঐক্য গড়ে ওঠে এবং সেই ঐক্যবদ্ধ জনগোষ্ঠীর সমন্বয়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র গড়ে ওঠে তাকে জাতি-রাষ্ট্র বলে ।


64. উনিশ শতকে ফ্রান্সের বাইরে কোন্ কোন্ দেশে জাতীয়তাবাদী মুক্তিসংগ্রাম শুরু হয় ?

উঃ  উনিশ শতকে ফ্রান্সের বাইরে ইটালি, জার্মানি, পোল্যান্ড, পোর্তুগাল, অস্ট্রিয়া, গ্রিস, বেলজিয়াম প্রভৃতি দেশে জাতীয়তাবাদী মুক্তিসংগ্রাম শুরু হয়।

65. ফরাসি বিপ্লব-প্রসূত আধুনিক ভাবধারাগুলি কী ?

উঃ ফরাসি বিপ্লব-প্রসূত আধুনিক ভাবধারাগুলি হল জাতীয়তাবাদ, উদারতন্ত্র, গণতন্ত্র, গণ-সার্বভৌমত্ব প্রভৃতি।


66. কোথায় ভিয়েনা সম্মেলন হয় ?

উঃ  ভিয়েনা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ।


67. ন্যায্য অধিকার নীতির তীব্র সমর্থক কারা ছিলেন ?

উঃ ন্যায্য অধিকার নীতির তীব্র সমর্থক ছিলেন অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী মেটারনিখ এবং ফরাসি প্রতিনিধি তালির ।


68. ট্রপোর বৈঠকে কী ঘোষণা করা হয় ?

উঃ  ট্রপোর বৈঠকে (১৯২০ খ্রি.) ঘোষণা করা হয়—জনগণের সরকার পরিবর্তনের কোনো অধিকার নেই এবং তারা কোনো দেশে আন্দোলন করলে শক্তি সমবায় সেখানে বলপ্রয়োগের দ্বারা আন্দোলন দমন করবে।


69. ভিয়েনা সম্মেলনের ন্যায্য অধিকার নীতি প্রযোজ্য না হওয়ার একটি উদাহরণ দাও । 

উঃ  ভিয়েনা সম্মেলনের ন্যায্য অধিকার নীতি প্রযোজ্য না হওয়ার একটি উদাহরণ হল – ফরাসি বিপ্লবের আগে ভেনিস ও জেনোয়ায় প্রজাতান্ত্রিক শাসন প্রচলিত থাকলেও ন্যায্য অধিকার নীতির দ্বারা সেখানে প্রজাতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়নি।


70. ন্যায্য অধিকার নীতির দ্বারা ইংল্যান্ড কোন্ কোন্ স্থান লাভ করে ?

উঃ  ন্যায্য অধিকার নীতির দ্বারা ইংল্যান্ড মাল্টা, আয়নীয় দ্বীপপুঞ্জ, হেলিগোল্যান্ড, কেপ কলোনি, ত্রিনিদাদ, মরিশাস ও সিংহল লাভ করে ।


71. শক্তি সমবায়ের প্রথম ও শেষ, বৈঠক কোথায় বসেছিল? 

উঃ  শক্তি সমবায়ের প্রথম বৈঠক আই-লা-সাপেল নগরীতে (১৮১৮ খ্রি.) এবং শেষ বৈঠক সেন্ট পিটার্সবার্গ-এ (১৮২৫ খ্রি.) বসেছিল।


72. কোন্ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে 'কার্লসবাড ডিক্রি জারি হয় ?

 উঃ জেনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কার্ল স্যান্ড কর্তৃক সাংবাদিক অগাস্ট ভন কটজেভু হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে কার্লসবাড ডিক্রি’ জারি হয়।


73. কবে মেটারনিখতন্ত্রের পতন ঘটে ?

উঃ ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের ফলে মেটারনিখতন্ত্রের পতন ঘটে।


74. মেটারনিখ কে ছিলেন ?

উঃ মেটারনিখ ছিলেন অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী (১৮০১-৪৮ খ্রি.) এবং ভিয়েনা সম্মেলনের (১৮১৫ খ্রি.) সভাপতি।


75. ইউরোপীয় রক্ষণশীলতার জনক বলা হয় কাকে?

উঃ ইউরোপীয় রক্ষণশীলতার জনক হলেন মেটারনিখ।


76. ক্যাসলরি কে ছিলেন? 

উঃ ক্যাসলরি ছিলেন জনৈক ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ভিয়েনা সম্মেলনে ইংল্যান্ডের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন।


77. কোন্ কোন্ দেশের রাজারা ভিয়েনা সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ?

উঃ ভিয়েনা সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রিয়ার রাজা প্রথম ফ্রান্সিস, প্রাশিয়ার রাজা তৃতীয় ফ্রেডরিখ উইলিয়াম এবং রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডার।


78. ন্যায্য অধিকার নীতির দ্বারা স্যাভয় বংশের কর্তৃত্ব কোথায় প্রতিষ্ঠিত হয় ?

উঃ  ন্যায্য অধিকার নীতির দ্বারা স্যাভয় বংশের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় স্যাভয়, জেনোয়া, পিডমন্ট ও সার্ডিনিয়ায়।

79. কোন্ দেশগুলি ক্ষতিপূরণ নীতির দ্বারা বেশি লাভবান হয়? 

উঃ অস্ট্রিয়া, রাশিয়া, প্রাশিয়া ও ইংল্যান্ড ক্ষতিপূরণ নীতির দ্বারা বেশি লাভবান হয়।


80. অস্ট্রিয়ার রাজধানী কোথায় ছিল? 

উঃ অস্ট্রিয়ার রাজধানী ছিল ভিয়েনা।


81. ভিয়েনা সম্মেলন কোথায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল ?

উঃ ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ভিয়েনা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায়।


82. ভিয়েনা সম্মেলন কবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ?

উঃ ভিয়েনা সম্মেলন ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।


83.  ভিয়েনা সম্মেলনে কোন্ চারটি দেশ প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিল?

উঃ ভিয়েনা সম্মেলনে চারটি প্রধান দেশ হল অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া, রাশিয়া ও ইংল্যান্ড।


84.  ভিয়েনা সম্মেলনের সভাপতি কে ছিলেন ?

উঃ ভিয়েনা সম্মেলনের সভাপতি ছিলেন মেটারনিখ।


85. ভিয়েনা সম্মেলনের প্রকৃত নিয়ন্ত্রক কে ছিলেন ?

উঃ ভিয়েনা সম্মেলনের প্রকৃত নিয়ন্ত্রক ছিলেন অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর মেটারনিখ।


86. মেটারনিখ কত খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী হন ?

উঃ মেটারনিখ ১৮০৯ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী হন।


87. ১৮১৫ সময়কালে 'বিগ-ফোর' বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে?

উঃ ১৮১৫ সময়কালে 'বিগ-ফোর' বলতে অস্ট্রিয়া, রাশিয়া, প্রাশিয়া ও ইংল্যান্ডকে বোঝানো হয়েছে।


88. ভিয়েনা সম্মেলনে ফ্রান্সের প্রতিনিধি কে ছিলেন ?

উঃ ভিয়েনা সম্মেলনে ফ্রান্সের প্রতিনিধি ছিলেন তালির।


89. ভিয়েনা সম্মেলনে ইংল্যান্ডের কোন বিদেশমন্ত্রী যোগ দিয়েছিলেন ?

উঃ ভিয়েনা সম্মেলনে ইংল্যান্ডের বিদেশমন্ত্রী ক্যাসলরি যোগ দিয়েছিলেন।


90. ইটালি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আগে পিডমন্ট-সার্ডিনিয়ার রাজা কে ছিলেন?

উঃ  ইটালি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আগে পিডমন্ট-সার্ডিনিয়ার রাজা ছিলেন স্যাভয় বংশীয় চার্লস অ্যালবার্ট।


91. ইটালি ছিল—'একটি ভৌগোলিক সংজ্ঞামাত্র'-এই কথাটি কে বলেছেন ? 

উঃ অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর মেটারনিখ বলতেন ইটালি একটি ভৌগোলিক সংজ্ঞামাত্র (a geographical expression)'।


 92. ঐক্যের দাবিতে ইটালির পুনর্জাগরণ আন্দোলন কী নামে পরিচিত?

উঃ ঐক্যের দাবিতে ইটালির পুনর্জাগরণ আন্দোলন “রিসর্জিমেন্টো' নামে পরিচিত।


93. রিসর্জিমেন্টো আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন বুদ্ধিজীবীর নাম লেখো।

উঃ  রিসর্জিমেন্টো আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন বুদ্ধিজীবী ছিলেন কানটু, ত্রোয়া, ক্যাপ্পানি, মাসিমো ডাজেগলিয়ো, গুয়েরাজি প্রমুখ। 


94. ইটালির ঐক্য আন্দোলনের প্রধান নেতা কারা ছিলেন ?

 উঃ ইটালির ঐক্য আন্দোলনের প্রধান নেতা ছিলেন ম্যাৎসিনি, ক্যাভুর ও গ্যারিবল্ডি।


95. কে, কবে, কোথায় ইয়ং ইটালি বা নব্য ইটালি নামে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন ?

উঃ  জোসেফ ম্যাৎসিনি, ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের মার্সাই শহরে ইয়ং ইটালি বা নব্য ইটালি নামক সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন ।


96. ইটালির ঐক্য আন্দোলনের উদ্দেশ্যে গড়ে ওঠা কয়েকটি গুপ্ত সমিতির নাম লেখো।

উঃ ইটালির ঐক্য আন্দোলনের উদ্দেশ্যে গড়ে ওঠা কয়েকটি গুপ্ত সমিতি ছিল লম্বার্ডির গুয়েলফি ও অ্যাডেলফি, পিডমন্টের ফেডারিটি ও কার্বোনারি।

97. ম্যাৎসিনি প্রথম ইটালির কোন্ গুপ্ত বিপ্লবী দলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন ?

উঃ ম্যাৎসিনি প্রথমে ইটালির কার্বোনারি নামে গুপ্ত বিপ্লবী দলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।


98. ম্যাৎসিনি কোন্ সমিতির সদস্য ছিলেন ?

উঃ জোসেফ ম্যাৎসিনি প্রথম জীবনে কার্বোনারি দলের সদস্য ছিলেন এবং পরবর্তীকালে তিনি 'ইয়ং ইটালি' (১৮৩২ খ্রি.) নামে একটি যুব সংগঠন করেন।


99. ইটালির মুক্তি আন্দোলনের ‘দার্শনিক ও আত্মা' কাকে বলা হয় ?

উঃ জোসেফ ম্যাৎসিনিকে ইটালির দার্শনিক ও আত্মা বলা হয়।


100. ইটালির ঐক্য আন্দোলনের মস্তিষ্ক কে ?

উঃ অধ্যাপক গ্রেনভিল কাউন্ট ক্যাভুরকে ইটালির  ঐক্য আন্দোলনের মস্তিষ্ক বলে অভিহিত করেছেন।


101. ভিন্নাফ্রাঙ্কার সন্ধি কবে, কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় ? 

উঃ ভিল্লাফ্রাঙ্কার সন্ধি ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়া ও ফ্রান্সের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়।


102. ম্যাজেন্টা ও সলফেরিনোর যুদ্ধ কবে, কাদের মধ্যে হয়েছিল? 

উঃ ম্যাজেন্টা ও সলফেরিনোর যুদ্ধ ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে পিডমন্ট- সার্ডিনিয়া ও ফরাসি জোট এবং অস্ট্রিয়ার মধ্যে হয়েছিল।


103. ক্যাভুরের চিন্তাধারার কথা কোন্ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ?

উঃ ক্যাভুরের চিন্তাধারার কথা তাঁর সম্পাদিত ‘রিসর্জিমেন্টো’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ।


104. ভিল্লাফ্রাঙ্কার সন্ধি কবে হয় ?

উঃ ভিল্লাফ্রাঙ্কার সন্ধি ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে হয়।


105. ভিন্নাফ্রাঙ্কার চুক্তি কাদের মধ্যে হয়েছিল?

উঃ ভিল্লাফ্রাঙ্কার চুক্তি (১৮৫৯ খ্রি.) অস্ট্রিয়া ও ফ্রান্সের মধ্যে হয়েছিল।


106. ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের সময় ইটালির কোথায় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়?

উঃ ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের সময় ইটালির ভেনিস, রোম এবং টাস্কানিতে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।


107. 'ভিলনিয়াস বিশ্ববিদ্যালয়' ইউরোপের কোন্ দেশের শিক্ষা- প্রতিষ্ঠান ?

উঃ 'ভিলনিয়াস বিশ্ববিদ্যালয়' ইটালির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।


108. ফরাসি বিপ্লবের সময় জার্মানি কাদের অধীনে ছিল? 

 উঃ ফরাসি বিপ্লবের সময় জার্মানি অস্ট্রিয়ার হ্যাপসবার্গ বংশীয় শাসকদের অধীনে ছিল।


109. কূটনীতির জাদুকর বলা হয় কাকে ? 

 উঃ কূটনীতির জাদুকর বলা হয় অটো ভন বিসমার্ক-কে।


110. কবে, কাদের মধ্যে বিয়ারিংসের গোপন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ? 

উঃ ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে প্রাশিয়া ও ফ্রান্সের মধ্যে বিয়ারিৎসের গোপন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।


111. স্যাডোয়ার যুদ্ধ কত খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত হয়েছিল ?

উঃ ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়া ও প্রাশিয়ার মধ্যে স্যাডোয়ার যুদ্ধ সংঘটিত হয়।


112. সেডানের যুদ্ধ কবে, কাদের মধ্যে হয়েছিল?

উঃ  ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে প্রাশিয়া ও ফ্রান্সের মধ্যে সেডানের যুদ্ধ হয়েছিল।


113. কবে, কাদের মধ্যে ফ্রাঙ্কফার্টের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়? 

উঃ ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে প্রাশিয়া ও ফ্রান্সের মধ্যে ফ্রাঙ্কফার্টের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।


114. 'ভিল্লাফ্রাংকার' সন্ধি কার কার মধ্যে হয় ? অথবা, ভিল্লাফ্রাংকার চুক্তি কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় ?

উঃ ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে ভিল্লাফ্রাঙ্কার সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।


115. ফ্রাঙ্কফার্ট পার্লামেন্ট কাকে জার্মানির রাজমুকুট গ্রহণের আবেদন জানায় ?

উঃ  ফ্রাঙ্কফার্ট পার্লামেন্ট প্রাশিয়ার রাজা চতুর্থ ফ্রেডরিখ উইলিয়ামকে জার্মানির রাজমুকুট গ্রহণের আবেদন জানায়।


116. “ফ্রাঙ্কফার্ট' পার্লামেন্ট বিপ্লবী জাতীয়তাবাদের প্রস্ফুটিত পুষ্প”—এই কথাটি কে বলেন ?

 উঃ ঐতিহাসিক কেটেলবি ফ্রাঙ্কফার্ট পার্লামেন্টকে “বিপ্লবী জাতীয়তাবাদের প্রস্ফুটিত পুষ্প (Flower of Revolutionary Patriotism)” বলে অভিহিত করেছেন।


117. ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে কোন্ সন্ধির দ্বারা, কার সঙ্গে দক্ষিণ জার্মানি যুক্ত হয় ?

 উঃ ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে ফ্রাঙ্কফার্টের সন্ধির দ্বারা প্রাশিয়ার সঙ্গে দক্ষিণ জার্মানি যুক্ত হয়।


118. আলেকজান্ডার ইপসিল্যান্টি কে ছিলেন?

উঃ  আলেকজান্ডার ইপসিল্যান্টি ছিলেন গ্রিক জাতীয়তাবাদী নেতা।


119. গ্যোটে কে ছিলেন? 

 উঃ গ্যোটে ছিলেন ঊনবিংশ শতকের প্রথমার্ধে জার্মানির খ্যাতনামা একজন কবি ও সাহিত্যিক।


120. কার উদ্যোগে জোলভেরাইন গড়ে ওঠে ?

উঃ জার্মানির বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ম্যাজেন-এর উদ্যোগে ও প্রাশিয়ার নেতৃত্বে জার্মানিতে জোলভেরাইন গঠিত হয়।


121. জোলভেরাইন কবে গড়ে ওঠে ?

উঃ   ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে জার্মানির বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ম্যাজেন-এর উদ্যোগে ও প্রাশিয়ার নেতৃত্বে জার্মানিতে জোলভেরাইন গঠিত হয়।


122. কত খ্রিস্টাব্দে বিসমার্ক প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী পদ গ্রহণ করেছিলেন?

উঃ ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে বিসমার্ক প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী পদ গ্রহণ করেছিলেন।


123. 'কনফেডারেশন অব দ্য রাইন' কোথায় গঠিত হয় ?

উঃ  'কনফেডারেশন অব দ্য রাইন' গঠিত হয় জার্মানিতে।


124. 'কনফেডারেশন অব দ্য রাইন' কী ?

 উঃ ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন জার্মানির পূর্বতন ৩০০টি রাজ্যের অস্তিত্ব লুপ্ত করে তিনটি নতুন রাজ্যমণ্ডল গড়ে তোলেন যার অন্যতম ছিল 'কনফেডারেশন অব দ্য রাইন'।


125. কত খ্রিস্টাব্দে 'কনফেডারেশন অব দ্য রাইন' গঠিত হয় ?

উঃ  ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে 'কনফেডারেশন অব দ্য রাইন' গঠিত হয়। 


126. কে ঐক্যবদ্ধ জার্মানির সম্রাট ছিলেন?

উঃ  কাইজার প্রথম উইলিয়াম ঐক্যবদ্ধ জার্মানির সম্রাট ছিলেন। 


127. কোন যুদ্ধের পর জার্মানি ঐক্যবদ্ধ হয়?

উঃ  ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্স ও প্রাশিয়ার মধ্যে সংঘটিত সেডানের যুদ্ধের পর জার্মানির ঐক্য সম্পূর্ণ হয়।


128. গ্যাস্টিনের সন্ধি কবে স্বাক্ষরিত হয়?

উঃ  গ্যাস্টিনের সন্ধি ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে স্বাক্ষরিত হয়।


129. গ্যাস্টিনের সন্ধি দ্বারা কোন্ দুটি ডাচি অস্ট্রিয়া ও প্রাশিয়ার মধ্যে ভাগাভাগি হয়েছিল ?

 উঃ গ্যাস্টিনের সন্ধির (১৮৬৫ খ্রি.) দ্বারা শ্রেজউইগ পেয়েছিল প্রাশিয়া এবং হলস্টেন পেয়েছিল অস্ট্রিয়া। 


130. কাউন্ট বেনেদিতি কে ছিলেন?

 উঃ ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়নের রাষ্ট্রদূত ছিলেন কাউন্ট বেনোদিত।




সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর : প্রতিটা প্রশ্নের মান -2/3


1. রাষ্ট্র বলতে কী বোঝ ?

উঃ রাষ্ট্র হল নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে বসবাসকারী সার্বভৌম ক্ষমতাসম্পন্ন জনসমষ্টি যারা সম্পূর্ণভাবে সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়।


2.  জাতি ও রাষ্ট্রের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো ।

উঃ  জাতি ও রাষ্ট্রের মধ্যে দুটি পার্থক্য হল—[1] জাতি হল একটি ঐক্যবদ্ধ সমাজ যারা একটি রাষ্ট্র গঠন করে, অপরদিকে রাষ্ট্র হল একটি ভূখণ্ডে বসবাসকারী সার্বভৌম ক্ষমতাসম্পন্ন জনসমষ্টি। [2] জাতি গঠনের ক্ষেত্রে প্রধান উপাদান হল আইনের নির্দেশনামা । গঠনের ক্ষেত্রে প্রধান উপাদান হল ঐক্য ও মানসিক অনুভূতি আর রাষ্ট্র


3. জাতীয়তাবাদ বলতে কী বোঝ? কোন্ সময়কালে ভিয়েনা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ?

উঃ যে আদর্শের দ্বারা কোনো দেশের মানুষ বা জাতি স্বদেশের প্রতি গভীর ভালোবাসা অনুভব করে, স্বদেশের গৌরব বা অগৌরবকে কেন্দ্র করে তাদের মন আবেগে আপ্লুত হয়, এমনকি তারা স্বদেশের মঙ্গলের জন্য নিজের প্রাণ উৎসর্গ করতেও প্রস্তুত থাকে তাকে জাতীয়তাবাদ বলে। O ভিয়েনা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে।


4. ‘জাতি-রাষ্ট্র’ বলতে কী বোঝ ?

উঃ যখন কোনো নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে বসবাসকারী ভাষা, ধর্ম ও অন্যান্য সাধারণ কিছু ঐক্যের বিষয়ে গড়ে ওঠা জনগোষ্ঠীকে নিয়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র গড়ে ওঠে তখন তাকে জাতি-রাষ্ট্র বলে।


5.  মেটারনিখ কে ছিলেন?

উঃ মেটারনিখ ছিলেন অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী (১৮০৯-১৮৪৮ খ্রি.) এবং ভিয়েনা সম্মেলনের (১৮২৫ খ্রি.) সভাপতি। তিনি ছিলেন রাজতন্ত্র, অভিজাততন্ত্র ও সামন্ততন্ত্রের গোঁড়া সমর্থক। ১৮১৫ থেকে ১৮৪৮ - খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ইউরোপীয় রাজনীতি মূলত তাঁরই নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়।

6. ভিয়েনা সম্মেলন কবে, কোথায় অনুষ্ঠিত হয় ?

উঃ মেটারনিখের সভাপতিত্বে ভিয়েনা সম্মেলন ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত হয়।


7. ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান ব্যক্তিত্ব কারা ছিলেন?

উঃ ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান ব্যক্তিত্ব ছিলেন — [1] অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী মেটারনিখ, [2] রুশ জার প্রথম আলেকজান্ডার, [3] ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসলরি এবং [4] ফ্রান্সের প্রতিনিধি তালির। মেটারনিথ ছিলেন ভিয়েনা সম্মেলনের সভাপতি।


8. চার প্রধান বলতে কী বোঝো? অথবা, ভিয়েনা সম্মেলনের Big Four বা চার প্রধান কারা ছিলেন?

উঃ ভিয়েনা সম্মেলনে (১৮১৫ খ্রি.) উপস্থিত নেতৃবৃন্দের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী মেটারনিখ, রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডার, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসালরি ও প্রাশিয়ার প্রিন্স হার্ডেনবার্গ। এই চারটি দেশকে 'বিগ ফোর' বা চার প্রধান বলা হয় ।


9. ভিয়েনা সম্মেলনের দুটি উদ্দেশ্য কী ছিল ?

উঃ ভিয়েনা সম্মেলনের উদ্দেশ্য ছিল— [1] ইউরোপের রাজনৈতিক কাঠামোর পুনর্গঠন, [2] নেপোলিয়ন কর্তৃক বিতাড়িত রাজবংশগুলির পুনঃপ্রতিষ্ঠা, [3] ফ্রান্সের ভবিষ্যৎ শক্তিবৃদ্ধির সম্ভাবনা দূর করা, [4] নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা, [5] ইউরোপে শক্তিসাম্য প্রতিষ্ঠা করা প্রভৃতি।


10 . ভিয়েনা সম্মেলনে কয়টি নীতি গৃহীত হয় ও কী কী?

উঃ ভিয়েনা সম্মেলনের প্রধান নীতি ছিল তিনটি। যথা—[1] ন্যায্য অধিকার নীতি, [2] ক্ষতিপূরণ নীতি এবং [3] শক্তিসাম্য নীতি।


11. ভিয়েনা সম্মেলনের শক্তিসাম্য নীতির দ্বারা ফ্রান্সের চতুর্দিকে কোন্ কোন্ রাষ্ট্রের দ্বারা ঘিরে ফেলা হয় ?

উঃ ভিয়েনা সম্মেলনের শক্তিসাম্য নীতির দ্বারা ফ্রান্সের —[1] উত্তর-পূর্ব সীমান্তে লাক্সেমবার্গ ও বেলজিয়ামকে হল্যান্ডের সঙ্গে, [2] পূর্ব সীমান্তে রাইন জেলাগুলিকে প্রাশিয়ার সঙ্গে, [3] দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে কয়েকটি জেলাকে সুইটজারল্যান্ডের সঙ্গে, [4] দক্ষিণ সীমান্তে স্যাভয় ও জেনোয়াকে পিডমন্টের সঙ্গে জুড়ে ফ্রান্সকে শক্তিশালী রাষ্ট্র দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়।


12.  ভিয়েনা সম্মেলনের দুটি গুরুত্ব উল্লেখ করো। অথবা, ভিয়েনা সম্মেলনের সপক্ষে দুটি যুক্তি দাও।

উঃ  ভিয়েনা সম্মেলনের দুটি প্রধান গুরুত্ব ছিল—[1] এই ব্যবস্থা ইউট্রেক্টের সন্ধি (১৭১৩ খ্রি.) বা ভাসাই সন্ধি (১৯১৯ খ্রি.)-র তুলনায় নমনীয় ছিল। [2] এই ব্যবস্থা ইউরোপে অন্তত ৪০ বছরের জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিল।


13.  ভিয়েনা চুক্তির তিনটি প্রধান আদর্শ কী ছিল ?

উঃ  ভিয়েনা চুক্তির তিনটি প্রধান আদর্শ ছিল— [1] ন্যায্য অধিকার নীতি, [2] ক্ষতিপূরণ নীতি ও [3] শক্তিসাম্য নীতি।


14.  মেটারনিখ ব্যবস্থা' কী ?

উঃ অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী মেটারনিখ বিপ্লব-প্রসূত আধুনিক ভাবধারাগুলি ধ্বংস করে ইউরোপে প্রাক্-বিপ্লবী যুগের রাজনৈতিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা এবং ইউরোপের রাজনীতিতে অস্ট্রিয়ার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে তীব্র দমনমূলক নীতি গ্রহণ করেন। এই নীতি সাধারণভাবে মেটারনিখ ব্যবস্থা বা মেটারনিখতন্ত্র নামে পরিচিত।


15.  মেটারনিখের রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রধান নীতিগুলি কী ছিল ?

উঃ মেটারনিখের রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রধান নীতিগুলি ছিল— [1] ইউরোপে ফরাসি বিপ্লবের আগেকার রাজনৈতিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা, [2] বিপ্লব-প্রসূত উদারতন্ত্র, গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ প্রভৃতি আধুনিক ভাবধারাকে স্তব্ধ করা এবং [3] ইউরোপের রাজনীতিতে অস্ট্রিয়ার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করা।


16.  ইউরোপীয় শক্তি সমবায় কী ?

উঃ  ভিয়েনা সম্মেলনের (১৮১৫ খ্রি.) পরবর্তীকালে —[1] ইউরোপে শান্তি বজায় রাখা, [2] ভিয়েনা সম্মেলনে সিদ্ধান্তগুলিকে কার্যকরী করা, [3] ফ্রান্সের শক্তিবৃদ্ধি রোধ করা প্রভৃতি উদ্দেশ্যে ইউরোপের বৃহৎ শক্তিগুলি একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। এটি ইউরোপীয় শক্তি সমবায়' নামে পরিচিত।


17.  ইউরোপীয় শক্তি সমবায়ের উদ্দেশ্য কী ছিল?

উঃ  ইউরোপীয় শক্তি সমবায়ের উদ্দেশ্য ছিল— [1] ফরাসি বিপ্লবের প্রভাব দূর করা, [2] ইউরোপে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা, [3] ভিয়েনা সম্মেলনের সিদ্ধান্তগুলি বাস্তবায়িত করা, [4] শক্তি সমবায়ের সদস্য- রাষ্ট্রগুলির মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।


18.  জুলাই অর্ডিন্যান্স-এর বিষয়বস্তু কী ছিল?

 উঃ ফরাসি সম্রাট দশম চার্লস (১৮২৪-১৮৩০ খ্রি.) (অর্ডিন্যান্স অব সেন্ট ক্লড' নামে এক অর্ডিন্যান্স জারি (২৫ জুলাই, ১৮৩০ খ্রি.) করেন যা ‘জুলাই অর্ডিন্যান্স' নামে পরিচিত। এর দ্বারা—[1] আইনসভা ভেঙে দেওয়া হয়। [2] সংবাদপত্রের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়। [3] বুর্জোয়া শ্রেণির ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। [4] ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দের সনদ বাতিল করা হয়।


19. কত সালে কার আমলে জুলাই বিপ্লব ঘটে?

 উঃ ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে বুরবোঁ বংশীয় ফরাসি সম্রাট দশম চার্লসের রাজত্বকালে ফ্রান্সে জুলাই বিপ্লব সংঘটিত হয়।

20. ফ্রান্সের অভ্যন্তরে জুলাই বিপ্লবের দুটি প্রভাব উল্লেখ করো।

উঃ  ফ্রান্সের অভ্যন্তরে জুলাই বিপ্লবের দুটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব হল— [1] জুলাই বিপ্লব দশম চার্লসের স্বৈরাচারী শাসন ধ্বংস করে নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। [2] বিপ্লবীরা অর্লিয়োঁ বংশীয় লুই ফিলিপকে সিংহাসনে বসালে ভিয়েনা সম্মেলনের ন্যায্য অধিকার নীতির অসারতা প্রমাণিত হয় ।


21. জুলাই বিপ্লবের দুটি কারণ উল্লেখ করো ।

উঃ জুলাই বিপ্লবের দুটি প্রধান কারণ ছিল—[1] রাজা দশম চার্লস কর্তৃক ফ্রান্সে স্বৈরতন্ত্র, অভিজাততন্ত্র ও ক্যাথোলিক গির্জার প্রাধান্য স্থাপনের চেষ্টা এবং [2] চারটি স্বৈরাচারী অর্ডিন্যান্স জারি (২৫ জুলাই, ১৮৩০ খ্রি.) করে জনগণের অধিকার কেড়ে নেওয়ার উদ্যোগ।


22.  জুলাই বিপ্লবের প্রতি কোন্ ভারতীয় মনীষী কীরূপ ধারণা ব্যক্ত করেছিলেন?

 উঃ জুলাই বিপ্লবের (১৮৩০ খ্রি.) প্রতি ভারতীয় মনীষী রাজা রামমোহন রায় আন্তরিক সমর্থন জানান। বিপ্লবের ফলে বুরবোঁ রাজবংশের পতনে তিনি উৎসাহিত হন এবং ফ্রান্সের ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকাকে অভিবাদন জানান ৷


23. ‘ফেব্রুয়ারি বিপ্লব' কবে ও কার রাজত্বকালে হয়?

উঃ ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে অলিয়েন্স রাজবংশের শাসক লুই ফিলিপের রাজত্বকালে ফ্রান্সে ফেব্রুয়ারি বিপ্লব অনুষ্ঠিত হয়।


24.  ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দকে কেন ‘বিপ্লবের বছর' বলা হয় ?

উঃ ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক লজ বলেছেন যে, “ফ্রান্সের বিপ্লবী চুল্লি থেকে উড়ন্ত আগুনের ফুলকি ইউরোপের কাঠের গুদামে পড়ে অগ্নিকাণ্ড সৃষ্টি করে।”এই বিপ্লব শুরু হলে এই বিপ্লবের প্রভাবে জার্মানি, অস্ট্রিয়া, ইটালি, হাঙ্গেরি-সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিপ্লব ছড়িয়ে পড়ে। এজন্য ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দকে ‘বিপ্লবের বছর' বলা হয় ।


25. ফ্রান্সের অভ্যন্তরে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের দুটি প্রভাব উল্লেখ করো।

উঃ ফ্রান্সের অভ্যন্তরে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের দুটি প্রভাব হল— [1] ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের পর ফ্রান্সে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। [2] ফ্রান্সে ভোটাধিকারের সম্প্রসারণ ঘটানো হয়।


26. ফ্রান্সে কবে, কার নেতৃত্বে ‘দ্বিতীয় সাম্রাজ্য' প্রতিষ্ঠিত হয়? কবে এর পতন ঘটে ?

 উঃ ফ্রান্সে লুই নেপোলিয়নের (তৃতীয় নেপোলিয়নের) নেতৃত্বে ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে ‘দ্বিতীয় সাম্রাজ্য' প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে তৃতীয় নেপোলিয়নের পতনের ফলে দ্বিতীয় সাম্রাজ্যের পতন ঘটে এবং তৃতীয় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।


27. ফ্রান্সের বাইরে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের দুটি প্রভাব উল্লেখ করো ।

উঃ ফ্রান্সের বাইরে ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের দুটি প্রভাব হল—[1] এই বিপ্লবের প্রভাবে জার্মানির বিভিন্ন রাজ্যে উদারনৈতিক গণ-আন্দোলন শুরু হয়। [2] এই বিপ্লব অস্ট্রিয়ায় তীব্র আকার ধারণ করে এবং মেটারনিখের পতন ঘটে।


28.  ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের দুটি গুরুত্ব উল্লেখ করো ।

উঃ ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের দুটি প্রধান গুরুত্ব ছিল—[1] ফেব্রুয়ারি বিপ্লব ভিয়েনা বন্দোবস্ত ও মেটারনিখতন্ত্রের অবসান ঘটায়। [2] এই বিপ্লব ফ্রান্সে রাজতন্ত্রের অবসান ঘটায়।


29. নেপোলিয়ন কীভাবে প্রায় সমগ্র জার্মানি দখল এবং জার্মানির পুনর্গঠন করেন?

উঃ [1] ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন অস্টারলিজের যুদ্ধে (১৮০৫ খ্রি.) অস্ট্রো-রুশ বাহিনীকে এবং জেনা ও আওয়ারস্টার্ট-এর যুদ্ধে (১৮০৬ খ্রি.) প্রাশিয়াকে পরাজিত করে প্রায় সমগ্র জার্মানি দখল করেন। [2] নেপোলিয়ন প্রায় ৩০০টি জার্মান রাজ্য ভেঙে সেগুলিকে সংগঠিত করে ৩৯টি রাজ্যে পরিণত করেন এবং এই রাজ্যগুলিকে নিয়ে ‘কনফেডারেশন অব দ্য রাইন' বা ‘রাইন রাষ্ট্রসংঘ' গঠন করেন।


30. “কনফেডারেশন অব দ্য রাইন' কী?

উঃ ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন প্রায় সমগ্র জার্মানি দখল করে জার্মানির ৩০০টি রাজ্য ভেঙে ৩৯টি রাজ্যে পরিণত করেন। এই রাজ্যগুলিকে নিয়ে তিনি একটি রাষ্ট্র সমবায় গঠন করেন যার নাম দেওয়া হয় ‘কনফেডারেশন অব দ্য রাইন'।


31. জার্মানির ঐক্যের পথে প্রধান দুটি বাধার উল্লেখ করো।

উঃ  জার্মানির ঐক্যের পথে প্রধান দুটি বাধা ছিল—[1] জার্মান রাষ্ট্র- সমবায়ের সভাপতি অস্ট্রিয়া জার্মানির ঐক্য প্রতিষ্ঠার বিরোধী ছিল। [2] উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের জার্মান রাজ্যগুলির মধ্যে ভাবগত ঐক্য ছিল না।


32. 'জোলভেরাইন'-এর রাজনৈতিক গুরুত্ব কী ছিল?

উঃ   রাজনৈতিক ইতিহাসে জোলভেরাইন-এর গুরুত্ব ছিল— [1] জোলভেরাইনের মাধ্যমে জার্মানিতে দ্রুত অর্থনৈতিক বিকাশের ফলে জার্মানির শক্তি বৃদ্ধি পায়। [2] জার্মান রাজ্যগুলির মধ্যে যোগাযোগ ও ভাবের আদানপ্রদান বৃদ্ধি পায়। [3] জোলভেরাইন পরিচালনায় নেতৃত্বদানের মাধ্যমে প্রাশিয়া জার্মানির রাজনৈতিক আন্দোলনের নেতৃত্ব গ্রহণ করে।


33. বিসমার্ক কে ছিলেন ?

উঃ  বিসমার্ক ছিলেন প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। তিনি রক্ত ও লৌহ নীতি’ গ্রহণ করে জার্মানির বিভিন্ন রাজ্যগুলিকে প্রাশিয়ার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ করেন। এই উদ্দেশ্যে তাঁকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে অংশ নিতে হয়— [1] ডেনমার্কের বিরুদ্ধে (১৮৬৪ খ্রি.), [2] অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে (১৮৬৬ খ্রি.) এবং [3] ফ্রান্সের বিরুদ্ধে (১৮৭০ খ্রি.)।


34.  রক্ত ও লৌহ নীতি' কাকে বলে ?

উঃ  প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ক প্রাশিয়ার নেতৃত্বে জার্মানির বিভিন্ন রাজ্যগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষেত্রে যে কঠোর যুদ্ধ বা সামরিক অভিযানের নীতি গ্রহণ করেন তা ‘রক্ত ও লৌহ নীতি' নামে পরিচিত।


35. বিসমার্ক কোন্ কোন্ যুদ্ধের দ্বারা জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করেন?

উঃ  বিসমার্ক ৬ বছরের মধ্যে তিনটি যুদ্ধের দ্বারা জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করেন যথা—[1] ডেনমার্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধ (১৮৬৪ খ্রি.), [2] অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ (১৮৬৬ খ্রি.) ও [3] ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ (১৮৭০ খ্রি.)।


36. স্যাডোয়ার যুদ্ধ সম্পর্কে কী জান?

উঃ  প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ক ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। স্যাডোয়া বা কোনিগ্রাৎস-এর যুদ্ধে অস্ট্রীয় বাহিনী শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। প্রাগের সন্ধির দ্বারা যুদ্ধের অবসান ঘটে।


37. প্রাণের সন্ধি করে, কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় ?

উঃ  স্যাডোয়ার যুদ্ধে প্রাশিয়ার কাছে অস্ট্রিয়া পরাজিত হওয়ার পর ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে (২৩ আগস্ট) প্রাশিয়া ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে প্রাণের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়।


38.  প্রাগের সন্ধির (১৮৬৬ খ্রি.) প্রধান শর্তগুলি কী ছিল ? অথবা, প্রাণের সন্ধির গুরুত্ব কী ছিল?

উঃ  প্রাগের সন্ধির দ্বারা (1) জার্মান রাষ্ট্রসংঘের বিলুপ্তি ঘটে। [2] প্রাশিয়া হ্যানোভার, হেসি, ক্যাসেল, শ্লেজউইগ, হলস্টেইন প্রভৃতি স্থান লাভ করে। [3] ইটালি ভিনিশা লাভ করে।


39. স্যাডোয়ার যুদ্ধের দুটি গুরুত্ব উল্লেখ করো।

উঃ   স্যাডোয়ার যুদ্ধের (১৮৬৬ খ্রি.) দুটি প্রধান গুরুত্ব ছিল— [1] এই যুদ্ধে অস্ট্রিয়ার পরাজয়ের ফলে জার্মানিতে অস্ট্রিয়ার আধিপত্য ধ্বংস হয়। [2] যুদ্ধে প্রাশিয়া জয়লাভের ফলে তার নেতৃত্বে জার্মানির ঐক্যের পথ প্রস্তুত হয়।


40. ফ্রাঙ্কফার্টের সন্ধির প্রধান শর্তগুলি কী ছিল ?

উঃ  [3] ফ্রান্স প্রাশিয়াকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়।

ফ্রাঙ্কফার্টের সন্ধির দ্বারা—[1] দক্ষিণ জার্মানি প্রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়। [2] ফ্রান্স আলসাস, লোরেইন ও মেজ প্রাশিয়াকে ছেড়ে দেয়। [4] প্রাশিয়ার রাজা প্রথম উইলিয়াম ঐক্যবদ্ধ জার্মানির রাজা হন।[5] রোম থেকে ফরাসি সেনা প্রত্যাহার করা হলে রোম ইটালির সঙ্গে যুক্ত হয়।


41.  সেডানের যুদ্ধের ফলাফল উল্লেখ করো।

উঃ  সেডানের যুদ্ধের ফলে — [1] ভিয়েনা বন্দোবস্ত (১৮১৫ খ্রি.) বাতিল হয়ে যায়। [2] জার্মানির ঐক্য সম্পূর্ণ হয়। [3] প্রাশিয়ার রাজা প্রথম উইলিয়াম ঐক্যবদ্ধ জার্মানির সম্রাট হন। [4] ফ্রান্সের দ্বিতীয় সাম্রাজ্যের পতন ঘটে এবং ফ্রান্সে তৃতীয় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।


42. শ্লেজউইগ-হলস্টেইন সমস্যা কী ?

উঃ  শ্লেজউইগ ও হলস্টেইন ছিল জার্মান জাতি অধ্যুষিত দুটি ডাচি বা প্রদেশ। প্রদেশ দুটি ডেনমার্কের অধীনে স্বায়ত্তশাসন ভোগ করলেও এখানকার জনগণ জার্মানির সঙ্গে যুক্ত হতে চাইত। ডেনমার্ক ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে প্রদেশ দুটি দখল করে নিলে প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ক ডেনমার্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন।


43.  কুলটুর কাম্ফ' কী ?

উঃ  প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বিসমার্ক ক্যাথোলিক খ্রিস্টানদের জার্মান ঐক্যের বিরোধী বলে মনে করতেন। এজন্য তিনি ক্যাথোলিকদের দমন করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন আইন জারি করেন। ফলে জার্মান রাষ্ট্র ও চার্চের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এই দ্বন্দ্ব ‘কুলটুর কাম্ফ' বা ‘সভ্যতার সংগ্রাম' নামে পরিচিত।


44. কোন্ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ডেনমার্কের সঙ্গে প্রাশিয়ার যুদ্ধ (১৮৬৪ খ্রি.) হয় ?

উঃ ডেন-জাতি অধ্যুষিত শ্লেজউইগ ও জার্মানজাতি অধ্যুষিত হলস্টাইন নামক দুটি প্রদেশ ডেনমার্কের রাজার ব্যক্তিগত অধিকারে ছিল। তা সত্ত্বেও প্রদেশ দুটি ডেনমার্কের অন্তর্ভুক্ত ছিল না। স্থান দুটি স্বায়ত্তশাসন ভোগ করত । ডেন-রাজ নবম খ্রিস্টিয়ান ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে স্থান দুটি দখল করতে চাইলে প্রাশিয়া তার প্রতিবাদে ডেনমার্ক আক্রমণ করে।


45.  জোলভেরাইন কী? কীভাবে এটি জার্মানির ঐক্যের ক্ষেত্রে সাহায্য করেছিল ?

উঃ  জার্মান রাজ্যগুলির অভ্যন্তরীণ শুল্ক-বৈষম্য ও বাণিজ্যের বাধাগুলি দূর করার উদ্দেশ্যে জার্মান অর্থনীতিবিদ ম্যাজেন-এর উদ্যোগে এবং প্রাশিয়ার নেতৃত্বে বিভিন্ন জার্মান রাজ্যকে নিয়ে ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে একটি শুল্কসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয় যা ‘জোলভেরাইন' নামে পরিচিত।

১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে জোলভেরাইন নামে জার্মান শুল্কসংঘ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর মাধ্যমে জার্মান রাজ্যগুলির মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি পায় । জোলভেরাইন পরিচালনায় নেতৃত্বদানের মাধ্যমে প্রাশিয়া জার্মানির রাজনৈতিক আন্দোলনের নেতৃত্ব গ্রহণ করে।


46. সর্ব জার্মানবাদ বা প্যানজার্মানিজম কী ?

উঃ  জার্মানির ছাত্র, অধ্যাপক, সাহিত্যিক, শিল্পী, দার্শনিক, ঐতিহাসিক প্রমুখ জার্মান ভাষাভাষী সমস্ত মানুষকে নিয়ে একটি অখণ্ড জার্মান জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে। এই বৃহত্তম জার্মান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মতাদর্শ সর্বজার্মানবাদ বা প্যানজার্মানবাদ নামে পরিচিত।


47. “ইয়ং ইটালি দলের মূল লক্ষ্য কী ছিল ?

উঃ ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে ইটালির জোসেফ ম্যাৎসিনি প্রতিষ্ঠিত 'ইয়ং ইটালি' দলের মূল লক্ষ্য ছিল – (1) শিক্ষার প্রসার, [2] আত্মত্যাগ এবং [3] জনসাধারণের মনে জাতীয়তাবাদের জাগরণ ঘটানো।


48. ইটালির ঐক্যের ক্ষেত্রে নেপোলিয়নের ভূমিকা কী ছিল ?

উঃ   ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন ইটালির বিভিন্ন রাজ্যে অভিযান চালিয়ে সেখানকার—[1] বিদেশি হ্যাসবার্গ ও বুরবোঁ রাজবংশকে বিতাড়িত করেন, [2] পোপকে বন্দি করেন, [3] সমগ্ৰ ইটালিতে ‘কোড নেপোলিয়ন'-এর মাধ্যমে একই ধরনের আইনকানুন চালু করেন। এর ফলে ইটালিবাসী সর্বপ্রথম ঐক্যের স্বাদ পায়।


49. ভিয়েনা বন্দোবস্তের দ্বারা ইটালিতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয় ?

উঃ  ভিয়েনা বন্দোবস্তের দ্বারা [1] উত্তর ইটালির লম্বার্ডি ও ভিনিশা অস্ট্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত হয়। [2] মধ্য ইটালির পার্মা, মডেনা, টাস্কানি, লুক্কা প্রভৃতি স্থানে অস্ট্রিয়ার হ্যাপ্‌সবার্গ বংশের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। [3] দক্ষিণ ইটালির নেপল্স ও সিসিলিতে অস্ট্রিয়ার মিত্র বুরবোঁ বংশীয় প্রথম ফার্দিনান্দের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।


50. ‘রিসর্জিমেন্টো' কী ?

উঃ   ইটালি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আগে ইতালীয়দের মনে জাতীয় চেতনার সঞ্চার ঘটে। তারা ইটালিতে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলেন যা ‘রিসর্জিমেন্টো' বা পুনর্জাগরণ নামে পরিচিত।


51. কার্বোনারি আন্দোলন কী ?

উঃ  ভিয়েনা বন্দোবস্তের দ্বারা ইটালিকে বিচ্ছিন্ন রাখার চেষ্টা করা হলে ইটালিতে বিভিন্ন গুপ্ত সমিতি গড়ে ওঠে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল কার্বোনারি সমিতি। এই সমিতির পরিচালনায় ইটালির ঐক্যের দাবিতে যে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে তা কার্বোনারি আন্দোলন নামে পরিচিত।


52.  কার্বোনারি কী? এরূপ নামের কারণ কী?

উঃ   [1] উনিশ শতকের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দশকে ইটালিকে সশস্ত্র পথে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্দেশ্যে যে সকল গুপ্ত সমিতি গড়ে ওঠে তাদের মধ্যে অন্যতম ছিল কার্বোনারি দল। [2] ইংরেজি 'কার্বন' কথাটি থেকে কার্বোনারি কথাটির উৎপত্তি। এই দলের সদস্যরা যে-কোনো ধর্মীয় উৎসবে কাঠ-কয়লা পোড়াতেন, তাই এই দলের এরূপ নামকরণ হয়েছে।


53. কার্বোনারি আন্দোলনের দুটি গুরুত্ব উল্লেখ করো।

উঃ  কার্বোনারি আন্দোলনের দুটি অন্যতম গুরুত্ব ছিল— [1] ইটালির ঐক্যের বিষয়ে কার্বোনারি আন্দোলনের ত্রুটিগুলি দ্বিতীয় পর্যায়ের আন্দোলনে দূর করার সুযোগ ঘটে। [2] এই আন্দোলন অস্ট্রিয়াকে ইটালির ঐক্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড়ো বাধা বলে চিহ্নিত করে।


54.  ম্যাৎসিনি কে ছিলেন ?

উঃ  ম্যাৎসিনি ছিলেন ইটালির ঐক্য আন্দোলনের প্রাণপুরুষ। তিনি ইয়ং ইটালি (১৮৩২ খ্রি.) নামে একটি যুব সংগঠন তৈরি করে ইটালির ঐক্য আন্দোলনকে জোরদার করেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল বিদেশি শক্তির সাহায্য ছাড়া ইটালির যুবকদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে ইটালিকে ঐক্যবদ্ধ করা। কিন্তু তিনি এ কাজে ব্যর্থ হন।


55. ইটালির ঐক্য আন্দোলনে ম্যাৎসিনির দুটি উল্লেখযোগ্য অবদান উল্লেখ করো।

উঃ  ইটালির ঐক্য আন্দোলনে ম্যাৎসিনির দুটি উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল— [1] আঞ্চলিকতাবাদে আচ্ছন্ন ইটালিবাসীকে তিনিই সর্বপ্রথম । জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেন। [2] তিনি তাঁর আন্দোলনে = ইটালির যুবকদের ব্যাপক সংখ্যায় শামিল করতে সক্ষম হন।


56. কাউন্ট ক্যাভুর কে ছিলেন?

উঃ  কাউন্ট ক্যামিলো দ্য ক্যাভুর ছিলেন ইতালীয় রাজ্য পিডমন্ট- সার্ডিনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এবং ইটালির ঐক্য আন্দোলনের অন্যতম নেতা। তাঁর বাস্তববাদী নীতির ফলে ইটালির ঐক্য সহজ হয়।


57. ইটালির ঐক্য আন্দোলনে গ্যারিবল্ডি যে মহৎ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন তার পরিচয় দাও।

উঃ  ইটালির ঐক্য আন্দোলনে জোসেফ গ্যারিবল্ডির নাম বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তিনি ছিলেন একাধারে ম্যাৎসিনির শিষ্য ও ‘সিংহহৃদয়’ জাতীয়তাবাদী বীর, দেশপ্রেমিক এবং গেরিলা যুদ্ধের নায়ক। তিনি দক্ষিণ ইটালিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য সিসলি ও নেপলস্-এর অধিবাসীকে নিয়ে লালকোর্তা বাহিনী গঠন করেন। তাঁরই নেতৃত্বে দক্ষিণ ইটালিতে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।


58. কবে কাদের মধ্যে প্রোমবিয়ার্সের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়? 

 উঃ  ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন ও ইটালির পিডমন্ট-সার্ডিনিয়ার প্রধানমন্ত্রী কাউন্ট ক্যাভুরের মধ্যে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে প্রোমবিয়ার্সের চুক্তি । স্বাক্ষরিত হয়।


59.  প্লোমবিয়ের্সের চুক্তির দুটি শর্ত লেখো।

উঃ  প্লোমবিয়ের্সের চুক্তির প্রধান শর্তগুলি ছিল— [1] ফ্রান্স ইটালির ঐক্য আন্দোলনে অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে পিডমন্টকে সাহায্য করবে। [2] এই সাহায্যের বিনিময়ে ইটালির কাছ থেকে ফ্রান্স স্যাভয় ও নিস লাভ করবে।


60.  পিডমন্ট-সার্ডিনিয়া কবে, কীভাবে লম্বার্ডি ও মিলান উদ্ধার করে ?

উঃ  ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে পিডমন্ট-সার্ডিনিয়া ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে পিডমন্টের পক্ষে ফ্রান্স যোগ দেয়। ম্যাজেন্টা ও সলফেরিনোর যুদ্ধে (১৮৫৯ খ্রি.) অস্ট্রিয়া পরাজিত হয় এবং পিডমন্ট অস্ট্রিয়ার কাছ থেকে লম্বার্ডি ও মিলান উদ্ধার করে।


61. মধ্য ইটালি কবে, কীভাবে পিডমন্টের সঙ্গে যুক্ত হয় ?

উঃ  পিডমন্টের প্রধানমন্ত্রী ক্যাভুর ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়নের সঙ্গে এক মীমাংসার দ্বারা ঠিক করেন যে— [1] ফ্রান্স মধ্য ইটালির পার্মা, মডেনা, টাস্কানি, রোমানা প্রভৃতি রাজ্যগুলি পিডমন্টের সঙ্গে সংযুক্তির বিষয়ে আপত্তি করবে না। [2] বিনিময়ে ফ্রান্স স্যাভয় ও নিস লাভ করবে। এর ফলে উক্ত রাজ্যগুলি গণভোটের মাধ্যমে (১৮৬০ খ্রি.) পিডমন্টের সঙ্গে যুক্ত হয় ।


62. ইটালির ঐক্য আন্দোলনে ক্যাভুরের প্রধান কর্মপন্থাগুলি কী ছিল ?

উঃ   ইটালির ঐক্য আন্দোলনে ক্যাভুরের প্রধান কর্মপন্থাগুলি ছিল— [1] ইটালির ঐক্যের প্রয়োজনে বিদেশি সাহায্য গ্রহণ করা, [2] ইটালি থেকে অস্ট্রিয়াকে বিতাড়িত করা, [3] পিডমন্ট-সার্ডিনিয়ার নেতৃত্বে ইটালির ঐক্য আন্দোলন পরিচালনা করা, [4] ঐক্যবদ্ধ ইটালিতে নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা।


63. কী উদ্দেশ্যে ইটালিতে কার্বোনারি আন্দোলন শুরু হয়েছিল ?

উঃ  ইটালি থেকে বিদেশি শক্তিকে বিতাড়িত করে ইটালিকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ইটালিতে কার্বোনারি আন্দোলন শুরু হয়েছিল।


64. ইয়ং ইটালি কী ?

উঃ  ইয়ং ইটালি হল ইটালির ঐক্য আন্দোলনের নেতা জোসেফ ম্যাৎসিনি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত (১৮৩২ খ্রিস্টাব্দ) একটি যুব সংগঠন। চল্লিশ বছর বয়স পর্যন্ত সকলেই এর সদস্য হতে পারত।


65. ইয়ং ইটালি দলের আদর্শ কী কী ছিল ?

উঃ ইয়ং ইটালি দলের আদর্শ ছিল কোনো বিদেশি শক্তির সহায়তা ছাড়া, যুবকদের আত্মত্যাগের দ্বারা ইটালি থেকে অস্ট্রিয়াকে বিতাড়িত করা এবং ইটালির মুক্তির পর সেখানে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা।


66.  ম্যাৎসিনির আন্দোলনের দুটি সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করো।

উঃ  ম্যাৎসিনির আন্দোলনের দুটি সীমাবদ্ধতা ছিল—[1] তিনি কোনো বিদেশি শক্তির সাহায্য ছাড়া ইটালির মুক্তির যে স্বপ্ন দেখতেন তা ছিল অবাস্তব। [2] পরাধীন ইটালির ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদের প্রয়োজন থাকলেও ম্যাৎসিনি তা থেকে দূরে থাকতেন।


67. কার্বোনারি ও ইয়ং ইটালি এই দুই সংগঠনের প্রধান পার্থক্য লেখো।

উঃ  কার্বোনারি ও ইয়ং ইটালির মধ্যে প্রধান পার্থক্য ছিল— [1] কার্বোনারি আন্দোলনের প্রতি জনসমর্থন ছিল কম, ইয়ং ইটালি সংগঠনের প্রতি জনসমর্থন ছিল বেশি। [2] কার্বোনারির বিপ্লবীরা কেবলমাত্র সন্ত্রাসবাদের দ্বারা ইটালির মুক্তির স্বপ্ন দেখত, ইয়ং ইটালির সদস্যরা জনজাগরণের দ্বারা ইটালির মুক্তির চিন্তা করত।


68.  ক্রিমিয়ার যুদ্ধ ইটালির ঐক্য আন্দোলনকে কীভাবে প্রভাবিত হয়েছিল ? 

উঃ  ইটালির ঐক্যের পথে প্রধান বাধা ছিল ইটালিতে অস্ট্রিয়ার উপস্থিতি। অস্ট্রিয়াকে ইটালি থেকে বিতাড়িত করার উদ্দেশ্যে ইঙ্গ-ফরাসি শক্তি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ক্রিমিয়ার যুদ্ধের (১৮৫৫-৫৬ খ্রি.) সময় ইটালির পিডমন্ট-সার্ডিনিয়া ইঙ্গ-ফরাসি পক্ষে যোগ দিয়ে তাদের সহানুভূতি আদায় করে। যুদ্ধের পর প্যারিসের শান্তি সম্মেলনে (১৮৫৬ খ্রি.) যোগ দিয়ে ইটালি ঐক্যের বিষয়টি আন্তর্জাতিক সমস্যায় পরিণত করে।



69. বলকান/পূর্বাঞ্চল/নিকট প্রাচ্য সমস্যা কী?

উঃ পঞ্চদশ থেকে সপ্তদশ শতকের মধ্যে বলকান অঞ্চল অটোমান তুর্কি সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। অষ্টাদশ শতকে তুর্কি সাম্রাজ্য দ্রুত পতনের দিকে এগিয়ে গেলে বলকান অঞ্চলে রাজনৈতিক শূন্যতার সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় বিভিন্ন বহিরাগত শক্তি বলকান অঞ্চলে আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে এলে এই অঞ্চলে অস্থিরতার সৃষ্টি হয় যা বলকান/পূর্বাঞ্চল/নিকট প্রাচ্য সমস্যা নামে পরিচিত।


70. অষ্টাদশ শতকে তুরস্ক কেন দুর্বল হয়ে পড়ে ?

 উঃ অষ্টাদশ শতকে তুরস্কের দুর্বল হওয়ার প্রধান কারণগুলি ছিল— [1] তুরস্ক যুগোপযোগী সংস্কার প্রবর্তন করতে ব্যর্থ হয়। [2] তুরস্ক মধ্যযুগীয় মোল্লাতন্ত্রের রীতিনীতিতে আঁকড়ে ছিল। [3] তুর্কি শাসকরা ছিলেন দুর্বল, অদক্ষ ও অকর্মণ্য।[4] তুর্কি শাসকগণ সামরিক বাহিনীতে আধুনিক সংস্কার না করায় বাহিনী দুর্বল হয়ে পড়ে ৷


71. তুর্কি শাসক ও বলকান প্রজাদের মধ্যে প্রধান পার্থক্যগুলি কী ছিল ?

উঃ তুর্কি শাসক এবং বলকান প্রজাদের মধ্যে প্রধান পার্থক্যগুলি ছিল শাসক তুর্কিরা ছিল এশিয়াবাসী, কৃয়াঙ্গ এবং ইসলাম ধর্মাবলম্বী। অন্যদিকে, শাসিত বলকান প্রজারা ছিল ইউরোপবাসী, শ্বেতাঙ্গ এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী।


 72. বলকান অঞ্চলে রাশিয়ার সম্প্রসারণে ইংল্যান্ডের দৃষ্টিভঙ্গি কী ছিল?

উঃ বলকান অঞ্চলে রুশ সম্প্রসারণে ইংল্যান্ড আশঙ্কিত হয়ে ওঠে। কারণ ইংল্যান্ড মনে করত যে—[1] এতে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে ব্রিটিশ নৌশক্তির আধিপত্য নষ্ট হবে। [2] ভারতের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে ।



73. বলকান অঞ্চলে রাশিয়ার সম্প্রসারণে অস্ট্রিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি কী ছিল ?

বলকান অঞ্চলে রাশিয়ার সম্প্রসারণে অস্ট্রিয়া আশঙ্কিত হয়ে ওঠে। কারণ অস্ট্রিয়া মনে করত যে—[1] অ্যাড্রিয়াটিক সাগর ও দানিয়ুব উপত্যকা অঞ্চলে অস্ট্রিয়ার অর্থনৈতিক স্বার্থ বিনষ্ট হবে। [2] স্লাভ জাতিগোষ্ঠীর নেতা রাশিয়া, অস্ট্রিয়ায় বসবাসকারী স্লাভদের উস্কানি দিলে অস্ট্রিয়ার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে।


74. বলকান অঞ্চলে রাশিয়ার সম্প্রসারণে ফ্রান্সের দৃষ্টিভঙ্গি কী ছিল ?

উঃ বলকান অঞ্চলে রাশিয়ার সম্প্রসারণে ফ্রান্স আশঙ্কিত হয়ে ওঠে। কারণ ফ্রান্স মনে করত যে, এর ফলে — [1] মিশর ও সিরিয়ায় ফ্রান্সের বাণিজ্যিক সুবিধা নষ্ট হবে। [2] বলকান অঞ্চলের রোমান ক্যাথোলিক খ্রিস্টানদের ওপর ফ্রান্স তার কর্তৃত্ব হারাবে।


75. গ্রিক জাতীয়তাবাদ বলতে কী বোঝ ?

উঃ তুরস্ক সাম্রাজ্যের মধ্যে অবস্থিত গ্রিস-কে বলা হত ইউরোপীয় সভ্যতার জননী'। কিন্তু অটোমান সাম্রাজ্যের অধীনে গ্রিস ক্রমশ পিছিয়ে পড়তে থাকে। সেই সঙ্গে তীব্র অর্থনৈতিক সংকট গ্রিসবাসীদের মনে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি করে। উনিশ শতক থেকে তাদের মধ্যে জাতীয়তাবাদী ভাবধারা প্রসারিত হতে থাকে, যা ইতিহাসে 'গ্রিক জাতীয়তাবাদ' নামে পরিচিত।


76.  অ্যাড্রিয়ানোপলের সন্ধির (১৮২৯ খ্রি.) প্রধান শর্তগুলি কী ছিল ?

উঃ অ্যাড্রিয়ানোপলের সন্ধির প্রধান শর্তগুলি ছিল—[1] গ্রিস রাশিয়ার অধীনে স্বায়ত্তশাসন লাভ করবে। [2] তুরস্কের মলডেভিয়া ও ওয়ালাকিয়া প্রদেশে রুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হবে। [3] বসফোরাস ও দার্পনেস প্রণালীতে রুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হবে। [4] তুরস্ক রাশিয়াকে বেশ কিছু বাণিজ্যিক সুবিধা দেবে।


77. ‘ভিয়েনা নোট' কী? এই নোটে কী দাবি করা হয় ?

উঃ তুরস্কের মলডেভিয়া ও ওয়ালাকিয়া প্রদেশ রাশিয়া দখল করে নিলে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া ও প্রাশিয়া ভিয়েনা শহরে মিলিত হয়ে তুরস্ক ও রাশিয়ার কাছে একটি প্রস্তাব পাঠায়। এটি ‘ভিয়েনা নোট' নামে পরিচিত।

এই নোটে মলডেভিয়া ও ওয়ালাকিয়া থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। রাশিয়া এই দাবি প্রত্যাখ্যান করলে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স রাশিয়ার বিরুদ্ধে তুরস্কের পক্ষে যুদ্ধে যোগ দেয় ।


78. 'উন্নজল নীতি' কী ?

উঃ   বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগের উদ্দেশ্যে রাশিয়া বরফমুক্ত কৃষ্ণসাগর, দার্দানালিস প্রণালী অতিক্রম করে ভূমধ্যসাগরে পৌঁছানোর উদ্যোগ নেয়। রাশিয়ার এই পরিকল্পনা 'উয়জল নীতি' বা 'বরফমুক্ত সমুদ্র উপকূল পর্যন্ত বিস্তার নীতি' নামে পরিচিত।



79. 'হেটাইরিয়া ফিলিকে' কী?

উঃ  'হেটাইরিয়া ফিলিকে' বা স্বাধীনতার অনুরাগী ছিল ১৮১৪ খ্রিস্টাব্দে স্কুফাস নামক এক গ্রিক ব্যবসায়ী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত গ্রিসের একটি গুপ্ত সমিতি, যাদের উদ্দেশ্য ছিল গ্রিসের স্বাধীনতা অর্জন এবং প্রাচীন বাইজানটাইন সাম্রাজ্যের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা ।


80. প্যারিসের সন্ধির (১৮৫৬ খ্রি.) প্রধান শর্তগুলি কী ছিল ?

উঃ প্যারিসের সন্ধির প্রধান শর্তগুলি ছিল — [1] রাশিয়া মলডেভিয়া, ওয়ালাকিয়া ও বেসারেবিয়া তুরস্ককে ফিরিয়ে দেবে। [2] তুরস্ককে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে আনা হবে। [3] মলডেভিয়া ও - ওয়ালাকিয়া স্বায়ত্তশাসন লাভ করবে। [4] সার্বিয়া স্বাধীনতা লাভ করবে। [5] কৃষ্ণসাগর নিরপেক্ষ অঞ্চল বলে ঘোষিত হবে। [6] শান্তির সময় দার্দানেস প্রণালীতে যুদ্ধজাহাজ চলাচল নিষিদ্ধ হবে।


81. "ক্রিমিয়ার যুদ্ধের দুটি প্রধান তাৎপর্য উল্লেখ করো।

উঃ ক্রিমিয়ার যুদ্ধের দুটি প্রধান তাৎপর্য ছিল— [1] এই যুদ্ধের দ্বারা বলকান অঞ্চল তথা তুরস্কে রুশ অগ্রগতি ব্যাহত হয়। [2] ক্রিমিয়ার যুদ্ধে জয়লাভের ফলে ফ্রান্সের আন্তর্জাতিক মর্যাদা যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়।


82. ক্রিমিয়ার যুদ্ধে ক্যাভুরের যুক্ত হওয়ার কারণ কী ছিল ?

উঃ  ক্রিমিয়ার যুদ্ধে ক্যাভুরের যুক্ত হওয়ার কারণ ছিল—তিনি আশা করেছিলেন যে, এই যুদ্ধে যুক্ত হলে ইটালির ঐক্য আন্দোলনে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড সাহায্য করবে। কিন্তু বাস্তবে এমনটি হয়নি।


83. কাকে The Lady with the Lamp' বলা হয় ?

উঃ ক্রিমিয়ার যুদ্ধের সময় ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল নামে এক ইংরেজ মহিলা যুদ্ধে আহত সৈনিকদের দুই বছর ধরে সেবা করেন। তাই তাকে ‘প্রদীপবাহী মহিলা’ বা 'Lady with the Lamp' বলা হয়।


84. অটোমান সাম্রাজ্য কে, কবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ?

উঃ  প্রথম উসমান ১২৯৯ খ্রিস্টাব্দে অটোমান সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।


85. ইউরোপের রুগ্ন মানুষ' কোন্ দেশকে বলা হত এবং কেন ?

 উঃ ইউরোপের রুগ্ন মানুষ বলা হত তুরস্ককে। অষ্টাদশ শতক থেকে তুর্কি সাম্রাজ্য ক্রমশ পিছিয়ে পড়তে থাকে। সুলতানগণ রাষ্ট্রে যুগোপযোগী আধুনিক সংস্কার প্রবর্তনে ব্যর্থ হন। অযোগ্য ও স্বৈরাচারী তুর্কি সুলতানগণ গণতন্ত্র ও প্রজাকল্যাণের আদর্শ প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী ছিল না। সামরিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে দুর্বল তুরস্ক অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দমন এবং বিদেশি আক্রমণ প্রতিরোধ করতেও ব্যর্থ ছিল। এজন্য তুরস্ককে ইউরোপের রুগ্ন মানুষ' বলা হয়।


86. বলকান অঞ্চল বলতে কোন্ অঞ্চলকে বোঝানো হয় ?

 উঃ বলকান অঞ্চল বলতে ইউরোপের পূর্বদিকে অবস্থিত ঈজিয়ান সাগর ও দানিয়ুব নদীর মধ্যবর্তী পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত গ্রিস, বালগেরিয়া, রোমেনিয়া, আলবেনিয়া, সার্বিয়া, মলডেভিয়া প্রভৃতি স্থানকে বোঝায় ।


87. প্রথম বলকান যুদ্ধ কবে, কাদের মধ্যে হয়েছিল ? কোন্ সন্ধি দ্বারা এই যুদ্ধের অবসান ঘটে ?

উঃ  ১৯১২ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে বলকান লিগের সদস্য (গ্রিস, বুলগেরিয়া, মন্টেনিগ্রো ও সার্বিয়া) ও তুরস্কের মধ্যে প্রথম বলকান যুদ্ধ হয়েছিল।

 প্রথম বলকান যুদ্ধে তুরস্ক পরাজিত হলে লণ্ডনের চুক্তি'র (১৯১৩ খ্রি.) দ্বারা এই যুদ্ধের অবসান ঘটে।


88. বলকান জাতীয়তাবাদ উন্মেষের কারণ কী ?

উঃ জাতীয়তাবাদ উন্মেষের প্রধান কারণগুলি হল— [1] বলকান অঞ্চলের একদা শক্তিশালী রাষ্ট্র তুরস্কের ক্রমিক দুর্বলতা, বলকান [2] তুরস্কের দুর্বলতার সুযোগে বলকান অঞ্চলে রাশিয়ার দ্রুত আগ্রাসন, [3]রুশ আগ্রাসন রুখতে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও অস্ট্রিয়ার চেষ্টা, [4]বলকান অঞ্চলে বসবাসকারী জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ বিভিন্ন জাতির স্বাধীনতা লাভের আকাঙ্খা প্রভৃতি।


89. কোন্ কোন্ রাষ্ট্র একজোট হয়ে 'বলকান লিগ' গঠন করে ? 

উঃ গ্রিস, বুলগেরিয়া, মন্টেনিগ্রো ও সার্বিয়া একজোট হয়ে ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে গ্রিসের মন্ত্রী ভেনিজোলাসেরর নেতৃত্বে বলকান লিগ গঠন করে।


99. কোন্ পরিকল্পনা বা নীতি 'উয়জল নীতি' নামে পরিচিত ?

উঃ রাশিয়া একদা বাল্টিক সাগরের পথ ধরে বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করত। কিন্তু সমস্যা ছিল যে, বাল্টিক সাগর সারা বছর বরফমুক্ত ছিল না। তাই রাশিয়া বরফমুক্ত কৃষ্ণসাগর, দার্পনেস প্রণালী অতিক্রম করে ভূমধ্যসাগরে পৌঁছানোর উদ্যোগ নেয়। রাশিয়ার এই পরিকল্পনা ‘উয়জল নীতি' বা 'বরফমুক্ত সমুদ্র উপকূল পর্যন্ত বিস্তার নীতি' নামে পরিচিত।


91.  ‘প্যানস্লাভ আন্দোলন' কী ?

উঃ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা স্লাভ জাতিগোষ্ঠীর মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে একটি স্লাভ জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে উনিশ শতকের মধ্যভাগে স্লাভ জাতির মধ্যে এক আদর্শগত আন্দোলন শুরু হয়। এটি | [ 'প্যানস্লাভ আন্দোলন' নামে পরিচিত।


92. কে ভূমিদাস প্রথা উচ্ছেদের জন্য একটি কমিশন গঠন করেন? কার নেতৃত্বে এই কমিশন গঠিত হয়?

উঃ রুশ জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডার ভূমিদাস প্রথা উচ্ছেদের জন্য ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে একটি কমিশন গঠন করেন।


93.  রাশিয়ার ভূমিদাসদের মুক্তির ঘোষণাপত্রে কী বলা হয় ?

উঃ রাশিয়ার ভূমিদাসদের মুক্তির ঘোষণাপত্রে বলা হয় যে— [1] রাশিয়ার সকল ভূমিদাস মুক্ত হয়ে স্বাধীন নাগরিকের মর্যাদা পাবে । [2] মুক্ত ভূমিদাসরা তাদের আগেকার প্রভুর জমির অর্ধাংশ লাভ করবে। [3] জমিদারের এই অর্ধাংশ জমির ক্ষতিপূরণ আপাতত সরকার মিটিয়ে দেবে।[4] মুক্ত ভূমিদাসরা এই ক্ষতিপূরণের অর্থ সরকারকে ৪৯ বছরের কিস্তিতে মিটিয়ে দেবে।


94. মুক্তির ঘোষণাপত্র কী ?

উঃ রাশিয়ায় ভূমিদাসদের মুক্তিদানের উদ্দেশ্যে জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডার ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ১৯ ফেব্রুয়ারি একটি ঘোষণাপত্র জারি করেন। এটি মুক্তির ঘোষণাপত্র' নামে পরিচিত।


 95.  রাশিয়ায় ভূমিদাসদের মুক্তির দুটি সুফল উল্লেখ করো ।

উঃ রাশিয়ায় ভূমিদাসদের মুক্তির দুটি উল্লেখযোগ্য সুফল ছিল—

[1] ভূমিদাসদের মুক্তির ফলে রাশিয়ার একটি মধ্যযুগীয় কুপ্রথার অবসান ঘটে। [2] ভূমিদাসদের মুক্তির পর স্বাধীন কৃষক ও শ্রমিকের উত্থানের ফলে রাশিয়ার কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্যের অগ্রগতি ঘটে।


96. রাশিয়ার ভূমিদাসদের মুক্তির দুটি কুফল উল্লেখ করো ।

উঃ রাশিয়ার ভূমিদাসদের মুক্তির দুটি উল্লেখযোগ্য কুফল ছিল— [1] মুক্ত ভূমিদাসদের যে পরিমাণ জমি দেওয়া হয় তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ ক্ষতিপূরণের অর্থ আদায় করা হয়। [2] মুক্ত কৃষক ও জমিদারদের মধ্যে জমি বণ্টনের সময় ভালো ও উর্বর জমিগুলি জমিদারদের ভাগে পড়লে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।


97. কাকে, কেন ‘মুক্তিদাতা জার' বলা হয় ?

উঃ রাশিয়ার জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডারকে ‘মুক্তিদাতা জার' বলা হয় ।

রুশ জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডার ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে ‘মুক্তির ঘোষণাপত্র' নামে এক আইনের দ্বারা রাশিয়ার সকল ভূমিদাসদের দাসত্ব থেকে মুক্তি দেন। এজন্য তাঁকে ‘মুক্তিদাতা জার' বলা হয় ৷


98. “জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডার জনতাকে সন্তুষ্ট করতে পারেনিই”–এর একটি প্রমাণ দাও।

উঃ “জার দ্বিতীয় আলেকজান্ডার জনতাকে সন্তুষ্ট করতে পারেনিই”— এর একটি প্রমাণ হল ভূমিদাসদের মুক্তির ঘোষণার পরও তিনি কয়েকবার আততায়ী আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন।












No comments:

Post a Comment